রাশিয়ার হুমকি মোকাবিলায় প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়াচ্ছে যুক্তরাজ্য

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেছেন, রাশিয়ার আগ্রাসনের হুমকির বিরুদ্ধে নিরাপত্তা জোরদার করতে যুক্তরাজ্য ২০২৭ সালের মধ্যে প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়াবে। রাশিয়ার হুমকি ইউক্রেনের বিরুদ্ধে মস্কোর তিন বছরের যুদ্ধ থেকে দৃশ্যমান হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
মঙ্গলবার দেশটির পার্লামেন্টে দেওয়া ভাষণে এসব কথা বলেন তিনি।
স্টারমার বলেন, প্রতিরক্ষা ব্যয় বার্ষিক ১৭শ কোটি ডলার বাড়ানো হবে। একই সঙ্গে বহির্বিশ্বের জন্য উন্নয়ন সহায়তা কাটছাঁট করে যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা খাতে জিডিপি বা মোট জাতীয় সম্পদের ২ দশমিক ৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২ দশমিক ৫ শতাংশ করা হবে।
স্টারমার আইন প্রণেতাদের উদ্দেশ করে বলেছেন, প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়ানোর ছিল প্রজন্মগত প্রতিক্রিয়া এবং স্নায়ুযুদ্ধ শেষ হবার পর প্রতিরক্ষা ব্যয় খাতে সবচেয়ে টেকসই বড় বৃদ্ধি।
তিনি বলেন, এটা প্রয়োজনীয় ছিল কারণ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মতো স্বৈরশাসকরা কেবল শক্তিতেই সাড়া দেয়।
স্টারমার বলেন, আমাদের অবশ্যই ইউক্রেনের পাশে দাঁড়াতে হবে, কারণ আমরা যদি স্থায়ী শান্তি অর্জন করতে না পারি তাহলে অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং আমাদের নিরাপত্তার হুমকি কেবলই বাড়বে।
আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) ওয়াশিংটনে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে স্টারমারের বৈঠক করতে যাওয়ার কথা রয়েছে।
স্টারমার হাউস অফ কমন্সে বলেছেন, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে এই সংঘাতের প্রকৃতি যেভাবে পরিবর্তিত হয়েছে তার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের প্রতিক্রিয়া আরও সুস্পষ্ট। এটা একটি নতুন যুগ যা আমাদেরকে অবশ্যই মোকাবিলা করতে হবে, যা আমারা অতীতে প্রায়শই একসঙ্গে এবং কঠোরভাবে করেছি।
এর আগে ব্রিটেন বলেছিল যে তারা তাদের প্রতিরক্ষা ব্যয় দেশের জিডিপি বা মোট জাতীয় সম্পদের দুই দশমিক ৫ শতাংশতে বৃদ্ধি করবে তবে কখন করবে তার নির্দিষ্টি তারিখ দেয়নি। ইতিমধ্যে নেটোভুক্ত ৩২টি দেশের মধ্যে ব্রিটেন ২৩টি দেশের একটি যারা পশ্চিমের প্রধান সামরিক জোটের লক্ষ্য পূরণ করে তার মোট দেশজ উৎপাদনের কমপক্ষে ২ শতাংশ প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় করে।
ট্রাম্প যখন তার ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ পররাষ্ট্রনীতির এজেন্ডা এগিয়ে নিচ্ছেন এবং পুতিনের সঙ্গে আলোচনা করে ইউক্রেন যুদ্ধ নিষ্পত্তির জন্য চাপ দিচ্ছেন, তখন ইউরোপের দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের চলমান সামরিক সহায়তা সম্পর্কে নতুন উদ্বেগ প্রকাশ করার পর স্টারমার প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়ানোর জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছেন।
স্টারমার ইউক্রেনে যে কোনো যুদ্ধবিরতি রক্ষার জন্য সেখানে ব্রিটিশ সেনা পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছেন, তবে তিনি বলেছেন যে স্থায়ী শান্তি নিশ্চিত করার জন্য সরাসরি আমেরিকার সংশ্লিষ্টতা অর্থাৎ ব্যাকস্টপ প্রয়োজন হবে।
ট্রাম্প ইউক্রেনকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেননি। সোমবার হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে বৈঠকের পরে বলেন, সেখানে যাতে কিছু না হয়, সেটা ইউরোপ নিশ্চিত করবে।
ট্রাম্প গত সপ্তাহে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে ‘স্বৈরশাসক’ বলে অভিহিত করলেও পুতিনকে একইভাবে চিহ্নিত করতে অস্বীকার করেছেন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.