রাফাহ শহরের একাংশ থেকে ফিলিস্তিনিদের সরে যেতে বললো ইসরায়েল

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহ শহরের একাংশ থেকে ফিলিস্তিনিদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েল। সোমবার (৬ মে) এই নির্দেশ দেওয়া হয়। ধারণা করা হচ্ছে, শহরটিতে দেশটির সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর উপত্যকার প্রায় অর্ধেক বাসিন্দা এই শহরে আশ্রয় নিয়েছেন।
আরবি ভাষায় খুদেবার্তা, টেলিফোন কল ও লিফলেট ছড়িয়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বিশ কিলোমিটার দূরে ‘মানবিক অঞ্চল’ বিস্তৃত করেছে।
রাফাহ শহরের পূর্বাঞ্চলে দুপুরের পর বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। স্থানীয় বাসিন্দা ও হামাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কয়েকটি বাড়ি লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। কয়েকটি এলাকা থেকে ধোঁয়া উড়তে দেখা গেছে।
গাজার শাসক গোষ্ঠী ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী হামাসের এক সিনিয়র কর্মকর্তা বলেছেন, সরে যাওয়ার এই ইসরায়েলি নির্দেশ উত্তেজনা বাড়াবে এবং এর পরিণতি থাকবে।
সামি আবু জুহরি নামের ওই কর্মকর্তা ইসরায়েলের মিত্র যুক্তরাষ্ট্রকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, দখলদারদের পাশাপাশি মার্কিন প্রশাসন এই সন্ত্রাসবাদের জন্য দায়ী।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, তারা রাফাহ শহরের বাসিন্দাদের সীমিত অভিযানের আওতায় সরে যেতে উৎসাহিত করছে। এমন উদ্যোগের কারণ নির্দিষ্ট করে তারা বলেনি। এমনকি পরে রাফাহতে অভিযান হবে কিনা তাও নিশ্চিত করেনি।
ফিলিস্তিনি কয়েকজনকে শিশু ও জিনিসপত্র গাধার গাড়িতে নিয়ে সরে যেতে দেখা গেছে। অনেকে বৃষ্টির মধ্যে জিনিসপত্র রেখে কর্দমাক্ত রাস্তায় হেঁটে সরে যাচ্ছেন।
এক শরণার্থী আবু রাইদ বলেছেন, ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। আমরা জানি না কোথায় যাবো। আমি আশঙ্কায় ছিলাম এমন দিন আসবে। এখন আমাকে ভাবতে হচ্ছে পরিবার নিয়ে আমি কোথায় যাবো।
প্রত্যক্ষদর্শীদের কয়েকজন বলেছেন, রাফাহ ঘিরে থাকা এলাকার মানুষদের ইতোমধ্যে ভিড় থাকা অঞ্চলে নিয়ে যেতে চাইছে ইসরায়েল। এসব অঞ্চলে থাকার মতো কোনও জায়গা অবশিষ্ট নেই।
বাস্তুচ্যুত এক ফিলিস্তিনি বলেছেন, বৃহত্তম গণহত্যা ও বৃহত্তম বিপর্যয় ঘটবে রাফাহতে। আমি পুরো আরব বিশ্বকে যুদ্ধবিরতির জন্য হস্তক্ষেপের আহ্বান জানাচ্ছি। আসুন হস্তক্ষেপ করুন এবং আমাদের রক্ষা করুন।
৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামলা চালিয়েছিল হামাস। ইসরায়েলের তথ্যমতে, ওই হামলায় ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত হন। এসময় মোট ২৫৩ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায় সশস্ত্র যোদ্ধারা। এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ওই দিনই গাজায় পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, প্রায় সাত মাস ধরে চলমান ইসরায়েলি বিমান ও স্থল হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৩৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.