রাজশাহীর শীর্ষ সন্ত্রাসী জুলুকে কারাগারে প্রেরণ, রিমান্ডের প্রস্তুতি

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীর শীর্ষ সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ নজরুল ইসলাম জুলুকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতের নির্দেশে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগে গত বুধবার নগরীর টিকাপাড়া এলাকায় নিজ বাসা থেকে জুলুসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে সেনাবাহিনী।
জানা গেছে, সন্ত্রাসী জুলু স্বেচ্ছাসেবক লীগের উপ দপ্তর সম্পাদক ছিলেন। রাজশাহীতে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম করে আসছিলেন দীর্ঘদিন যাবত। ৫ আগস্ট পট পরিবর্তনের পর নিজেকে বিএনপি নেতা দাবি করা শুরু করেন তিনি। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে তার নিয়মিত কথা হয় বলেও দাবি করে বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের বিভিন্ন হুমকি-ধামকি দিতেন ও পদ বাণিজ্য করে আসছিলেন। সাধারণ মানুষকে মামলায় ফাঁসিয়ে কোটি কোটি টাকা চাঁদাবাজি করেছেন তিনি।
সূত্র জানিয়েছে, ইতোপূর্বে নানা অপরাধের ঘটনায় সন্ত্রাসী জুলুর বিরুদ্ধে অন্তত দেড় ডজন মামলা আছে৷ নিজেকে বাঁচাতে একপর্যায়ে সাংবাদিক হিসেবেও পরিচয় দেয়া শুরু করেন তিনি। একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল খুলে বনে যান সম্পাদক। যেটির কোনো নিবন্ধন নেই। অবৈধভাবে গায়ের জোরে কয়েক মাস আগে ঐতিহ্যবাহী রাজশাহী প্রেসক্লাব দখলে নিয়ে নিজেকে সভাপতি ঘোষণা করেন তিনি। এরপর ফের শুরু হয় তার বেপরোয়া আচরণ। প্রেসক্লাবের সদস্যসহ অন্যান্য সাংবাদিক এবং সরকারি কর্মকর্তা ও সাধারণ মানুষকে বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দিতেন। সবসময় অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতেন তিনি। সাংবাদিকদের গুলি করে মারার হুমকিও দিতেন জুলু।
এসব ঘটনায় প্রায় শতাধিক অভিযোগ যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে গত বুধবার সকাল থেকে নগরীর টিকাপাড়ায় জুলুর বাসায় অভিযান চালায় সেনাবাহিনী। এসময় তার ছেলে জিম ও এক সহযোগিসহ জুলুকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযানে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র পাওয়া যায়। পরে সেনাবাহিনী তাদের বোয়ালিয়া মডেল থানায় হস্তান্তর করে।
সন্ত্রাসী জুলু ঢাকার মোহাম্মদপুরে হত্যা মামলায় এজহারভুক্ত ২৯৪ নম্বর আসামি। ওই মামলায় এক নম্বর আসামি শেখ হাসিনা৷ বৃহস্পতিবার দুপুরে জুলুসহ তিনজনকে আদালতে তুলে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তবে আগামী মঙ্গলবার রিমান্ডের শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত।
এদিকে, জুলুর মতো সন্ত্রাসীরা সাংবাদিকতার ব্যানার ব্যবহার করা নিয়ে সাংবাদিক নেতারা চরম বিব্রত ও ক্ষুব্ধ। তারা বলছেন, সন্ত্রাসী কায়দায় প্রেসক্লাবের মতো জনগুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে আরেকটি অপরাধ করেছে জুলু। তার কারণে মহান এ পেশার সম্মান নষ্ট হচ্ছিল। সেনাবাহিনী তাকে গ্রেপ্তার করায় বাহিনীটিকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা। অপরাধ দমনে আগামীতেও এ ধরণের অভিযান অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে ঐতিহ্যবাহী রাজশাহী প্রেসক্লাবের সভাপতি ও ভাষাসৈনিক পরিবারের সদস্য সাইদুর রহমান বলেন, সাংবাদিকতা মহান পেশা। এ পেশায় কোনো সন্ত্রাসীর স্থান হবে না। আমরা রাজপথে সোচ্চার ছিলাম, আগামীতেও সোচ্চার থাকবো। #

 

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.