নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী মহানগরীতে ২০১৩ সালের আলোচিত এক হত্যাকাণ্ডের মামলার বাদিকে অপহরণ করে আদালতে নিয়ে গিয়ে মামলা প্রত্যাহারে বাধ্য করার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে অভিযোগকারী এস.এম. তারিক পলাশ শুক্রবার (৪ জুলাই) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত অভিযোগ তুলে ধরেন।
তারিক পলাশ জানান, তিনি গত ১ জুলাই ২০২৫ রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার আমলী আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় রাজনৈতিক ও প্রশাসনিকভাবে প্রভাবশালী একাধিক ব্যক্তির নাম উল্লেখ করা হয়। কিন্তু মামলার মাত্র দুই দিন পর, ৩ জুলাই সকাল ১০টা ৫৭ মিনিটে মালোপাড়া এলাকা থেকে অজ্ঞাতনামা ১০-১২ জন যুবক তাকে জোরপূর্বক অপহরণ করে।
তিনি অভিযোগ করেন, অপহরণের পর তাকে ও তার পরিবারের সদস্যদের জিম্মি করে আদালতে নিয়ে যাওয়া হয় এবং প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে মামলা প্রত্যাহারে বাধ্য করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে পলাশ দাবি করেন, ২০১৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি হেফাজতে ইসলামের ডাকে একটি শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিলে তিনি অংশ নিয়েছিলেন। মিছিলটি সাহেববাজার বড় মসজিদ থেকে আলুপট্টি মোড়ে পৌঁছালে হঠাৎ হামলা চালানো হয়। সে হামলায় শিক্ষার্থী রাসেদুল ইসলাম রাসেদ গুলিবিদ্ধ হন এবং পরে নির্মমভাবে পিটিয়ে তাকে হত্যা করা হয়।
তারিক পলাশের অভিযোগ, “হামলাটি ছিল পূর্বপরিকল্পিত এবং রাজনৈতিকভাবে পরিচালিত। ডিবি পুলিশের তৎকালীন ওসি আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে গুলি চালানো হয়, যা তৎকালীন মেয়র ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের নির্দেশে হয়েছে বলে আমার বিশ্বাস।”
তারিক পলাশের দায়ের করা মামলায় যাদের নাম রয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন: এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য,আলমগীর হোসেন, তৎকালীন ডিবি পুলিশের ওসি,রোকনুজ্জামান, বোয়ালিয়া থানার তৎকালীন সহকারী পুলিশ কমিশনার,এসএম মনিরুজ্জামান, তৎকালীন আরএমপি কমিশনার,ডাবলু সরকার, আওয়ামী লীগ নেতা, মীর ইকবাল, অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা ও মো. আসাদুজ্জামান আসাদসহ মোট ১১৩ জনের নাম এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
পলাশ অভিযোগ করেন, তিনি শুরুতে বোয়ালিয়া থানার ওসির কাছে লিখিত অভিযোগ দিলেও মামলাটি গ্রহণ করা হয়নি। “পর্যাপ্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ থাকার পরও ওসি মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ না করায় আমাকে বাধ্য হয়ে আদালতে মামলা করতে হয়। যদি সে সময় পুলিশ মামলা নিত, তাহলে আদালতে গিয়ে মামলাটি প্রত্যাহার করানোর সুযোগ থাকত না।”
সংবাদ সম্মেলনে তারিক পলাশ জানান, অপহরণ ও হুমকির ঘটনার পর তিনি ও তার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। “এ ঘটনায় একটি সুপরিকল্পিত চক্র জড়িত, যার সঙ্গে রাজনীতি, প্রশাসন ও ক্ষমতার অপব্যবহার সম্পর্কিত রয়েছে। এখনই অপহরণকারীদের নাম প্রকাশ করছি না, তবে সময়মতো সব কিছু প্রকাশ করব।”
তারিক পলাশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “অপহরণ, হুমকি ও মামলা প্রত্যাহারের পেছনের ঘটনা তদন্তে একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্ত কমিটি গঠন করা হোক। একই সঙ্গে আমার ও আমার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি ইফতেখার আলম (বিশাল) / রাজশাহী। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.