রাজশাহীতে শ্লীলতাহানী ও ধর্ষণচেষ্টার অপমান সহ্য করতে না পেরে বিষপান করা, সেই নারীর মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী মহানগরীতে রাতের আধারে ঘরে ঢুকে জোরপূর্বক শ্লীলতাহানী ও ধর্ষণ চেষ্টার অপমান সহ্য করতে না পেরে বিষপান করা সেই নারী সেলিনা বেগম মারা গেছেন।
রবিবার ভোর রাতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ২৬ নং ওয়ার্ডে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৯ এপ্রিল) দিনগত রাত সাড়ে ১০টায় ঘাস পোড়ানো বিষপান করেন সেলিনা বেগম। পরে তাকে তার পরিবারের লোকজন উদ্ধার করে রামেক হাসপতালের নিয়ে ভর্তি করেন। সেখানে ২৬নং ওয়ার্ডে ৪দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে রবিবার ভোর রাতে তার মৃত্যু হয়।
নিহত সেলিনা বেগম (৪৭),তিনি মহানগরীর চন্দ্রিমা থানার নারীকেলবাড়িয়া এলাকার মৃত আতাহার আলীর মেয়ে।
এ ব্যপারে রবিবার দুপুর ১টায় নিহতের ছোট ভাই মোঃ শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে আতœহত্যার প্ররোচনা করার অপরাধে মহানগরীর চন্দ্রিমা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
মামলায় একমাত্র আসামী মোঃ আলমগীর হোসেন (৫০), তিনি মহানগরীর মতিহার থানার বিনোদপুর বাজার এলাকার মৃত হান্নান কসাইয়ের ছেলে।
সেলিনা বেগমের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মহানগরীর চন্দ্রিমা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি), মোঃ মতিয়ার রহমান। তিনি জানান, সেলিনা বেগমের সাথে আলমগীর হোসেনের টাকা সংক্লান্ত লেনদেনের জেরে এই ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে। এ ব্যপারে মৃত নারীর ছোট ভাই বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
ওসি আরও বলেন, মৃত্যের লাশ রামেক মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে তার স্বজনদের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। আসামী গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান ওসি।
উল্লেখ্য, গত (১০ এপ্রিল) গণমাধ্যম কর্মীদের ভিডিও ক্যামেরার সামনে ভুক্তভোগী সেলিনা বেগম বলেন, পরিবারে অভাব অনাটনের কারনে দীর্ঘদিন যাবত অভিযুক্ত আলমগীর কসাইকে নগদ টাকা ধার দিতেন। সেই টাকা দিয়ে আলমগীর গরু কিনে মাংসের ব্যবসা করে পূনরায় টাকা ফেরত দিতেন। সেই সাথে লাভ হিসেবে অতিরিক্ত কিছু টাকা দিতেন। এরই ধারাবাহিকতায় আলমগীর ওই নারীর কয়েক হাজার টাকা আটকে দেন। সেই টাকার জন্য চাপ দেওয়ায় আলমগীর ক্ষিপ্ত হয়ে গত অনুমানিক ১৫দিন পূর্বে রাতের আধারে সেলিমা বেগমের বাড়িতে প্রবেশ করেন। ওই সময় তিনি কৌশলে বাইরে থেকে ঘরের দরজা খুলে মুখচেপে ধরে স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়ে শ্লিলতাহানী ও ধর্ষণ চেষ্টা করেন। নিজেকে রক্ষা করতে নারী অভিযুক্তকে লাথি মেরে চিৎকার শুরু করলে আলমগীর পালিয়ে যান। তবে প্রতিবেশীদের মধ্যে বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়। এনিয়ে এলাকায় ব্যপক চর্চা শুরু হলে লজ্জা ও অপমান সহ্য করতে না পেরে বাড়িতে থাকা ঘাস পোড়ানো বিষপান করেন সেলিমা বেগম।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি মো. মাসুদ রানা রাব্বানী / রাজশাহী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.