আরএমপিপ্রতিবেদক: আজ বুধবার (২৯ মে ২০২৪) আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী বিশ্বের সব দেশের শান্তিরক্ষীদের অসামান্য অবদানকে এই দিনে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয়।
সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালন করা হয়। এ দিবস উপলক্ষ্যে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের আয়োজনে আরএমপি সদর দপ্তরে উদ্যাপিত হলো আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী দিবস ২০২৪।
শান্তিরক্ষী দিবস ২০২৪ এর প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল “Fit for the future, building better together”
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার, বিপিএম-এর সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মো: মাসুদুর রহমান ভূঞা, বিপিএম, প্রিন্সিপাল (অতিরিক্ত আইজিপি), বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি, সারদা, রাজশাহী এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মো: আনিসুর রহমান, বিপিএম (বার), পিপিএম (বার), ডিআইজি, রাজশাহী রেঞ্জ। এছাড়াও সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদ, পরিচালক, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
অনুষ্ঠানে রাজশাহীস্থ বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট ছাড়াও বীর মুক্তিযোদ্ধা, সেনাবাহিনী, র্যা ব, বিজিবি, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়, রাজশাহী জেলা প্রশাসন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ফায়ার সার্ভিস, কারারক্ষী, স্টুডেন্ট কমিউনিটি পুলিশিং ফোরাম, রোভার স্কাউট, বিএনসিসি, গার্ল গাইডস্, রেড ক্রিসেন্ট, রোটারী ক্লাব, এশিয়া ফাউন্ডেশন, ইউএনডিপি’র প্রতিনিধি, জনপ্রতিনিধি,সাংবাদিকবৃন্দ-সহ সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
আজ ২৯ মে ২০২৪ সকাল ৯:৩০ টায় সার্কিট হাউজ হতে বর্ণাঢ্য র্যা লি শুরু হয়ে আরএমপি সদর দপ্তরে এসে শেষ হয়। সেখানে প্রধান অতিথিসহ আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ বেলুন-ফেস্টুন উড্ডয়ন ও কবুতর অবমুক্তকরণের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন এবং দিনটিকে স্মারণীয় করে রাখতে প্রধান অতিথি সদর দপ্তর প্রাঙ্গণে একটি পারিজাত গাছে চারা রোপণ করেন। এরপরেই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত । আলোচনা সভার শুরুতেই জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নিহত সদস্যদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মো: মাসুদুর রহমান ভূঞা, বিপিএম বক্তব্যের শুরুতেই জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে কর্তব্যরত অবস্থায় আত্মোৎসর্গকারী বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে বাংলাদেশ পুলিশের মূল কার্যক্রম ও ভূমিকা তুলে ধরেন। তিনি আরও বলেন বাংলাদেশের সেনাদের অংশগ্রহণে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বিশ্বের বুকে বাঙালি ও বাংলা ভাষার পরিচিতি বেড়েছে বহুগুণে। সকল বৈষম্যকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা নিজেদের উৎসর্গ করেছেন বিশ্বমানবতার মহান সেবায়। সেই সাথে তিনি বাংলাদেশ নৌ, বিমানসহ বিভিন্ন বেসামরিক প্রতিষ্ঠানের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদানের কথা তুলে ধরেন।
বিশেষ অতিথি ডিআইজি মো: আনিসুর রহমান, বিপিএম (বার), পিপিএম (বার) বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের একটি স্বাধীন দেশ উপহার দিয়েছেন। তাই আমার বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় বিশ্বে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশ গ্রহণ করতে পেরেছি।
অনুষ্ঠানের সভাপতি আরএমপি’র কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার, বিপিএম তাঁর বক্তব্যে বলেন, আজকের দিনটি আমরা যেভাবে পালন করছি সেটি গৌরবের দিন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌ বাহিনী, বিমান বাহিনী এবং বাংলাদেশ পুলিশ এই স্বাধীন দেশকে সমগ্র পৃথিবীর বুকে তুলে ধরেছে শান্তিরক্ষা মিশনের মাধ্যমে। সারা পৃথিবী আজ আমাদের চিনে, এর মূল কারিগর ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী দিবস উপলক্ষ্যে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশ পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনীর গৌরবগাথা ভুমিকা-সহ জীবন উৎসর্গকারী শান্তিরক্ষীদের পরিসংখ্যান তুলে ধরেন। তিনি বলেন, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীরা ৭৬ বছর ধরে বিশ্বের সবচেয়ে নাজুক রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে জীবন বাঁচাতে এবং পরিবর্তন করতে কাজ করেছে। দুই মিলিয়নেরও বেশি ইউনিফর্ম পরা এবং বেসামরিক কর্মী এর দেশগুলিকে যুদ্ধ থেকে শান্তিতে রূপান্তর করতে সহায়তা করেছে। আজ ৭০ হাজার এরও বেশি শান্তিরক্ষী সারা বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ১১টি মিশনে কাজ করছে। এছাড়াও তিনি তাঁর বক্তব্যে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের বিভিন্ন অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন।
পুলিশ কমিশনার অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী ও মিডিয়াকর্মীদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে তিনি তাঁর বক্তব্য শেষ করেন। এর আগে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিসহ অংশগ্রহণকারী সকল প্রতিষ্ঠানকে আরএমপি’র পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা স্মারক প্রদান করা হয়।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.