রাজশাহীতে ফুটপাতে বিক্রি শরবতে ‘মাছ সংরক্ষণের বরফ’ (ভিডিও)

বিশেষ প্রতিনিধি: তীব্র দাবদাহে রাজশাহী নগরীর ফুটপাতগুলোতে যেসব শরবত বিক্রি হচ্ছে সেগুলোর অধিকাংশই ‘মাছ ও লাশ সংরক্ষণের বরফ’ মিশিয়ে তৈরি করা হচ্ছে।
গরমে রাস্তায় বের হওয়া মানুষ একটু প্রশান্তি পেতে পান করছেন ফটুপাতে বানানো এসব শরবত। যা সাময়িক প্রশান্তি দিলেও স্বাস্থ্যকে মারাত্মক ঝুঁকির মুখে ফেলে দিচ্ছে বলে জানান, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।
রাজশাহী শহর ঘরে দেখা গেছে, তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে রাজশাহী নগরে রাস্তার পাশে একটু দূরে দূরে গড়ে উঠেছে শরবতের দোকান।
বিশেষ করে, ব্যস্ততম এলাকা সাহেববাজার, লক্ষ্মীপুর, হড়গ্রাম, গোরহাঙ্গা রেলগেট এলাকা প্রতিদিন বসছে এসব শরবতঅলা।
খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, ফুটপাতের এসব শরবতে ব্যবহার করা হচ্ছে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মাছ ও লাশ সংরক্ষণে তৈরি বরফ।
এ ছাড়া আছে শরবতের নামে ক্ষতিকর রাসায়নিকের মিশ্রনও। রাজশাহী নগরীর রেলগেইট এলাকায় পথচারী শিরিন সুলতানকে দেখা গেছে ফুটপাতে দাঁড়িয়ে শরবত পান করতে।
তিনি বলেন, “অনেক গরম তাই শরবতটা খেলাম। খেয়ে স্বস্তি পেলাম, মন ঠান্ডা হল।”কিন্তু রাস্তার পাশের এসব শরবতে কী ব্যবহার করা হচ্ছে তা তার জানা নেই।
নগরীর সাহেব বাজার মাছের আড়তের পাশে রয়েছে আক্তার বরফ মিল। যেখানে তৈরি হয়, মাছ সংরক্ষণের জন্য বরফ। সেখানে গিয়ে দেখা গেল- বরফের পাটাগুলো অস্বাস্থ্যকর জায়গায় রেখে ভাঙা হচ্ছে।
সেখান থেকে বরফ কিনে নিয়ে যেতে দেখা গেল বড়কুঠি এলাকার পদ্মাপাড়ের শরবত বিক্রেতা মোসলেম আলীকে।
গরমের শুরু থেকে তিনি এখান থেকেই বরফ কিনে নিয়ে শরবতে মেশাচ্ছেন। নগরীর রেলগেইট এলাকার শরবত বিক্রেতা খায়রুলের বরফও রাখা হয়েছে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে।
শোলার তৈরি বাক্সে বাজারের প্লাস্টিকের ব্যাগে রাখা হয়েছে তার বরফের পাটা। দেখতে দিয়ে পাওয়া গেল বরফের সঙ্গে রাখা কাঁচা গরুর মাংসও।
খায়রুল জানান, গরম পড়েছে, তাই মাংস যেন নষ্ট না হয় সেজন্য একপাশে রাখা হয়েছে। তার দাবি শুধু মাছের জন্য না, সবকিছুর জন্যই তৈরি করা হয় এই বরফ।
ক্যামেরার সামনে না এসে মুঠোফোনে জানালেন বরফ কারখানার শ্রমিক মোজ্জাম্মেল হক মাছ ও লাশ সংরক্ষণে তৈরি বরফই কম দামে শরবত বিক্রেতারা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, “আপনি নিয়ে গিয়ে ভালো কিংবা খারাপ কাজে ব্যবহার করতে পারেন এই বরফ। সেটা ব্যক্তির ওপর নির্ভর করে।”
এবিষয়ে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. এফ এ এম আঞ্জুমান আরা বেগম বিটিসি নিউজকে বলেন, “অস্বাস্থ্যকর রাস্তার পাশে বরফ অথবা আইসক্রিম বা আখের রস বিক্রি করা হচ্ছে। এগুলো যদি বিশুদ্ধ পানি দিয়ে তৈরি না করা হয়, হাত পরিষ্কার করে ধুয়ে না করা হয়, তাহলে তো জীবাণু থাকতেই পারে। বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া, বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস সংক্রমিত হতে পারে।”
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ প্রতিনিধি নিরেন দাস। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.