রাজশাহীতে কৃষকদলের নেতার ওপর হামলা: ছাত্র-জনতার ওপর হামলাকারী আসামি (ভিডিও)

নিজস্ব প্রতিবেদকরাজশাহীতে জুলাই বিপ্লবের ৫ আগষ্টের ঘটনায় মামলার এজাহারভুক্ত আসামি হিসেবে আওয়ামী লীগের নেতা আবুল কালাম (৫৫)কে গ্রেপ্তার করা হলে বিএনপির একটি গ্রুপ থানা থেকে ছাড়িয়ে নিতে তদবির করতে আসলে বিএনপির অন্য গ্রুপের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
শনিবার (১৫ মার্চ) নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার ভিতরে ২টা ৩০ মিনিটে প্রকাশ্যে আসামী আবুল কালাম লাথি দেয় কৃষকদলের রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আলামিন সরকার টিটুকে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জুলাই বিপ্লবের ৫ আগষ্টের ঘটনায় মামলার এজাহারভুক্ত ৬৫নং আসামি আবুল কালাম। তিনি এক সময় পবা উপজেলার পারিলাতে বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। পরবর্তীতে আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় আসলে তিনি আওয়ামী লীগের সাথে জড়িত হয়ে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা নেন। আবুল কালাম রাজশাহী ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতি এবং রাজশাহী ইউরিয়া সার ডিলার সমিতির সভাপতি ছিলেন।
কৃষকদলের আলামিন সরকার টিটু অভিযোগ করে বলেন, আবুল কালাম ৫ই আগষ্ট মামলার আসামী। আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর জানার পরেও বিএনপির কিছু নামধারী নেতা থানা থেকে আসামি ছাড়িয়ে নিতে তদবির করতে আসে। এটি দুঃখজনক।
তিনি আরও জানান, আমরা প্রতিবাদ করার কারণে থানার ভিতরে ওসিসহ সকলের সামনে আমাকে আবুল কালাম লাথি মারে এবং শাহমখদুম থানা বিএনপির সাবেক আহবায়ক জিল্লুর রহমানসহ রাজশাহী নগরীর বিএনপি ও সহযোগী অঙ্গসংগঠনের কিছু নামধারী নেতা–কর্মীরা আমাদের লাঞ্ছিত করে।
এ বিষয়ে মহানগর শাহমখদুম থানার বিএনপির সাবেক আহবায়ক জিল্লুর রহমান বলেন, আবুল কালাম আমাদের শুভাকাঙ্ক্ষী হওয়ায় দেখা করতে গিয়েছিলাম। আওয়ামী শাসনামলে আবুল কালামকে ইউরিয়া সার ডিলার সমিতির সভাপতি থেকে বের করে দেয়া হয়। ২০২৪ সালে মেয়র লিটন দ্বারা মামলার শিকার হন।
তিনি আরোও বলেন, আবুল কালাম একজন সম্মানিত ব্যক্তি, তিনি বিএনপির রাজনীতি করতেন। ব্যবসায়িক স্বার্থে মেয়র লিটনসহ বিভন্ন আওয়ামী লীগের নেতাদের সাথে সমন্বয় করে চলতে হতো। জিল্লুর অভিযোগ করেন, মূলত ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান সমিতি দখল করতেই আবুল কালামকে মিথ্যে মামলা দেয়া হয়েছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, আসামী আবুল কালামকে গ্রেপ্তার করার পর নগর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা–কর্মীরা থানা প্রাঙ্গণে জড়ো হতে থাকেন। প্রায় ৫০ জন নেতা–কর্মী থানা প্রাঙ্গণে জড়ো হন। সেখানে তাঁরা একে অপরের সাথে বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে হাতাহাতি শুরু করে।
রাজশাহী মহানগর বোয়ায়িলা থানা (পশ্চিম) বিএনপি’র আহ্বায়ক শামসুল হোসেন মিলু অভিযোগ করেন বলেন, আবুল কালাম আওয়ামী সরকারের দোসর, তা জানা সত্ত্বেও বিএনপির কিছু নামধারী নেতারা তাকে ছাড়াতে থানায় গিয়েছিলেন, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।
রাজশাহী মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা বিটিসি নিউজকে বলেন, ট্রাক মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির তিনি কেউ নয়। আবুল কালাম আজাদ রাজশাহী মহানগর বিএনপির কখনো কোন পদে ছিলো না। ট্রাক মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ আওয়ামী স্বৈরাচার সরকারের দোষর। তিনি রাজশাহী সিটি করপোরেশনের নির্বাচন থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী স্বৈরাচার সরকারের হাতকে শক্তিশালী করতে স্বৈরাচারী সকল নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর হয়ে মাঠে কাজ করেছেন।
নজরুল হুদা অভিযোগ করেন বলেন, আবুল কালাম আওয়ামী সরকারের দোসর, তা জানা সত্ত্বেও বিএনপির কিছু নামধারী নেতারা তাকে ছাড়াতে থানায় গিয়েছিলেন, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বোয়লিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাক আহমেদ বিটিসি নিউজকে বলেন, বিএনপির বেশ কিছু নেতা আবুল কালামের সাথে দেখা করতে আসছিলেন। তবে কেউ আসামীকে ছাড়িয়ে নিতে তদবির করে নাই। এজহার নামীয় আসামী হওয়ায় আবুল কালামকে গ্রেপ্তার পূর্বক বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি জি, এম হাসান-ই-সালাম (বাবুল) রাজশাহী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.