বিশেষপ্রতিনিধি: মানুষের কারণেই প্রকৃতি থেকে শকুন হারিয়ে গেছে বলে উল্লেখ করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন।
আজ শনিবার (০৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁও বন অধিদপ্তরের কনফারেন্স রুমে বিশ্ব শকুন সচেতনতা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, মানুষের কারণেই শকুন হারিয়ে গেছে। আমরা নিজেরাই প্রকৃতি এবং পরিবেশের ক্ষতি করছি। গরুকে বাঁচাতে আমরা শকুন মেরে ফেললাম। গরুকে ডাইক্লোফেনাক এবং কিটোফেন ওষুধ খাওয়ানোর ফলে এসব মরা গরুর মাংস খেয়ে শকুনও মারা গেল। ছোটবেলায় আমরা হাজার হাজার শকুন দেখতাম। গরু ছাগল মারা গেলে সাথে সাথে শকুন এসে হাজির হয়ে যেত। শকুনকে প্রকৃতির ঝাড়ুদার বলা হয়। এখন গরু মারা গেলে আর শকুন দেখা যায় না।
তিনি আরও বলেন, শকুন হারিয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে বাংলাদেশ সরকার সর্বদাই নিবেদিত। আমরাই বিশ্বের প্রথম দেশ যারা ক্ষতিকর কিটোপ্রফেন নিষিদ্ধ করে শকুন সংরক্ষণে এক ধাপ এগিয়ে আছি। কিটোপ্রফেন নিষিদ্ধের পর বন অধিদপ্তর ও আইইউসিএন মাঠ পর্যায়ে কিটোপ্রফেন নিয়মিত পরিবীক্ষণ করে আসছে। এখন মাঠ পর্যায়ে এই ক্ষতিকর ওষুধটি কমতে শুরু করেছে এবং নিরাপদ ওষুধ মেলোক্রিক্যাম ও টলফামেনিক এসিডের ব্যবহার বাড়তে শুরু করেছে, যা শকুন রক্ষায় একটি বড় পদক্ষেপ।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, শকুন সংরক্ষণে দীর্ঘমেয়াদী বিজ্ঞানভিত্তিক যে কোনো পরিকল্পনা আমাদের মন্ত্রণালয়ে এলে তা বাস্তবায়নে সহায়তা করা হবে। মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে শকুনের ডানায় লাগানোর জন্য লাল-সবুজ পতাকার আদলে তৈরি করা হয়েছে বিশেষ ট্যাগ। এই উইং ট্যাগের পাশাপাশি এ বছর নতুন প্রযুক্তি স্যাটেলাইট ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে শকুনের গায়ে ট্যাগ লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এ কার্যক্রমের মাধ্যমে আমাদের দেশের শকুনের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হবে, যা বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশের শকুন সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
প্রধান বন সংরক্ষক আমির হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, অতিরিক্ত সচিব ইকবাল আব্দুল্লাহ হারুন।
আলোচনা সভায় প্যানেল আলোচক হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বার্ডস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং পাখি বিশেষজ্ঞ ইনাম আল হক, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু। শকুন বিষয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইইউসিএন-এর সিনিয়র প্রোগাম ম্যানেজার এবিএম সারোয়ার আলম।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.