খুলনা ব্যুরো:বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুঞ্জুরুল ইসলাম বলেছেন, শুকরিয়া আদায় করছি সেই মহান রবের কাছে যিনি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আজ জালিম শাসকের অবসান ঘটিয়েছেন। আমরা জুলুম নির্যাতন থেকে মুক্ত কিন্তু ষড়যন্ত্র লেগেই আছে। স্বৈরাচারী সরকার প্রশাসনকে তার রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যবহার করেছে। পুলিশ বাহিনীকে দলীয়করণ করে ফেলেছিল। কিন্তু এই চিত্র আজ আর নাই। আওয়ামী সরকার শত শত কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। শিক্ষা ব্যবস্থা, বিচার ব্যবস্থা ও প্রশাসন সব জায়গা ধ্বংস করে ফেলেছে।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও এ জাতির জন্য কোন স্থায়ী শিক্ষা ব্যবস্থা তৈরি হয়নি। ভাই, সন্তান ও যুবকদের ধ্বংস করা হয়েছে। আমাদের সংস্কৃতির কোন নীতিমালা নেই। ভারতের সংস্কৃতি নীতিমালাকে আমাদের উপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছে।
সোমবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকালে খুলনা প্রেসক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে ইসলামী ছাত্রশিবিরের খুলনা অঞ্চলের সাথী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন ।
কেন্দ্রীয় ছাত্রকল্যাণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুনের সভাপতিত্বে ও খুলনা মহানগরী সভাপতি আরাফাত হোসেন মিলনের পরিচালনায় সাথী সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি ও খুলনা অঞ্চলের পরিচালক মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরার সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান।
সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় তথ্য সম্পাদক গালিব আব্দুল্লাহ, খুলনা মহানগর সেক্রেটারি এস এম নূরুল্লাহ, সাতক্ষীরা শহর সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাতক্ষীরা জেলা সভাপতি ইমামুল হোসেন, খুলনা জেলা উত্তর সভাপতি হাফেজ বেলাল হোসাইন রিয়াদ, জেলা দক্ষিণ সভাপতি আবু জার গিফারী, বাগেরহাট জেলা সভাপতি নাজমুল হাসান সাইফ প্রমুখ।
খুলনা মহানগরী, খুলনা জেলা, সাতক্ষীরা জেলা ও বাগেরহাট জেলার দুই সহস্রাধিক সাথী উপস্থিত ছিলেন। পরে একই স্থানে সদস্য সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
তিনি বলেন, ‘ছাত্রশিবিরের প্রত্যেকটি নেতাকর্মীকে নৈতিক প্রশিক্ষণ নিতে হবে। ক্যাস্পাসগুলোতে তরুণ ছাত্রসমাজকে মাদক-সন্ত্রাস থেকে দূরে রেখে ইসলামের সুমহান আদর্শের পরিচয় তুলে ধরতে হবে। পাশাপাশি ক্যাম্পাসগুলোতে শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রত্যেকটি জনশক্তিকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ছাত্রশিবিরের জনশক্তিরা নিজেদের গড়ে তুলবে। পাশাপাশি সাধারণ মানুষদের ভালোবাসতে হবে এবং ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ করতে হবে। ছাত্রশিবির প্রতিষ্ঠার পর থেকে সকল জুলুম-বাধা আদর্শিক শক্তি দিয়ে প্রতিহত করেছে, তাই দেশের যে কোন সংকট ও ক্রান্তিকালে ছাত্রশিবির সর্বশক্তি দিয়ে সব ষড়যন্ত্রের দাঁত ভাঙা জবাব দিবে।’
কেন্দ্রীয় সভাপতি আরও বলেন, বৈষম বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাসকে মনে রাখতে হবে। এ আন্দোলনে কত রক্ত, কত লাশ মর্গে দেখেছি। পরিচয়হীন লাশ। এই ইতিহাস জাতিকে জানাতে হবে। ৪৭, ৫২, ৭১ সর্বশেষ ২৪ সব ইতিহাসকে ধারণ করে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। আমরা কখনো উগ্রবাদ বা সন্ত্রাসবাদে জড়িত নই আর থাকবো না। কিন্তু যারা এগুলো করবে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান হবে কঠোর। ওবায়দুল কাদের বলেছিল আমার ছাত্রলীগ ছাত্রদের মোকাবেলা করবে। ছাত্রদের দাবিকে ছোট করে দেখা হয়েছিল। কিন্তু দাবি ছিল যৌক্তিক। এত এত বৈষম্য যা ছাত্রদের যৌক্তিক দাবি ছিল। কিন্তু স্বৈরাচারী সরকার তা ভিন্ন খাতে নিয়েছিল। আমার মনে হয় ছাত্রদের দাবি মেনে নিলে সরকারকে আর পালাতে হতো না। কিন্তু স্বৈরাচার শেখ হাসিনার ভুলেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবি এক দফা দাবিতে পরিণত হয়। তিনি বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি। আহতদের আশু সুস্থতা কামনা করি। বৈষম্য ছাত্র সংগঠনের কৃতিত্ব সব তাদের।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর খুলনা ব্যুরো প্রধান এইচ এম আলাউদ্দিন এবং মাশরুর মুর্শেদ। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.