বোমায় বিধ্বস্ত মসজিদেই মুয়াজ্জিনের আজানের ধ্বনি

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকাকে রীতিমতো ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে ইসরাইলি বাহিনী। বাড়িঘর, হাসপাতাল, মসজিদ, স্কুল কিছুই বাদ যায়নি তাদের আগ্রাসন থেকে। কিন্তু তাতেও যে অনেক ফিলিস্তিনি ভেঙে পড়েননি, তারই যেন প্রমাণ দিলেন এক তরুণ মুয়াজ্জিন।
ফিলিস্তিনিদের সাহস আর বীরত্বের এমনই এক গল্প তুলে এনেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। একইসঙ্গে, প্রতিবেদনে ইসরাইলি বাহিনীর বর্বরতার চিহ্নও ফুঁটে উঠেছে।
গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর বোমা হামলায় বিধ্বস্ত একটি মসজিদের কংক্রিটের স্ল্যাবের বেঁকে যাওয়া রড বেরিয়ে আছে, গম্বুজের একটি অবশিষ্টাংশ ৪৫ ডিগ্রিতে হেলে পড়েছে। এগুলোকে পেছনে রেখেই মুসলিমদের নামাজে আসার আহ্বান জানাচ্ছেন তরুণ এক মুয়াজ্জিন।
মুয়াজ্জিনরা সাধারণত মিনারে দাঁড়িয়ে আজান দেন। মসজিদটির মিনার এখনও দাঁড়িয়ে রয়েছে, কিন্তু বিপজ্জনক অবস্থায়। ওপরের একটি অংশ নেই, নিচের অংশটুকু ধ্বংস্তস্তূপে মিশে গেছে। এই চিত্র গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিসের আল-তৌবা মসজিদের।
হামাসের বিরুদ্ধে ইসরাইলের যুদ্ধে গাজার যেসব মসজিদে বোমা আঘাত হেনেছে, আল-তৌবা সেগুলোর একটি।
ইসরাইল-হামাস অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির ষষ্ঠ দিনে খান ইউনিসের তিনটি মসজিদের ড্রোন ফুটেজ রেকর্ড করে রয়টার্স। এসব ফুটেজে বোমাবর্ষণে ধর্মীয় স্থাপনাগুলো ধ্বংসের ভয়াবহতা উঠে এসেছে।
বহুতল আল-তৌবা মসজিদের গম্বুজটি এখন নেই। একমাত্র যে অংশটি এখনও চেনা যায়, তা হলো ধসে পড়া ছাদের পাশে থাকা একটি বৃত্তাকার ভিত্তি। সেখানেই দাঁড়িয়েছেন মুয়াজ্জিন।
শহরের ভিন্ন অংশে অবস্থিত আল-আনসারি মসজিদ। এটিও পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে। এই মসজিদের একটি কক্ষে ধুলোময় জায়নামাজ দেখতে পাওয়া গেছে। এছাড়া ধসে ও হেলে পড়া দেয়ালের ফাঁকে লোহার রেলিং ও আরবি লেখাযুক্ত টাইলসও দৃশ্যমান।
তৃতীয় মসজিদটির নাম আল-আমিন মোহাম্মদ। এটির হলুদ রঙের গম্বুজের একাংশ রয়েছে। কিন্তু চূড়ায় বড় এক গর্ত তৈরি হয়েছে। নিচের ছাদ ধসে পড়ায় গম্বুজটি হেলে পড়েছে একপাশে।
এদিকে, ইসরাইল এবং হামাসের মধ্যকার অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার কথা ছিল স্থানীয় সময় শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) সকাল ৭টায়, যার মেয়াদ শেষ হয়েছে। কিন্তু কোনো পক্ষই আর যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর ঘোষণা দেয়নি। ফলে গাজায় নতুন করে সংঘাত শুরুর খবর পাওয়া গেছে। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.