বিটিসি স্পোর্টস ডেস্ক:প্রথমবার গ্র্যান্ড স্ল্যামের সেমি-ফাইনালে খেলতে নেমে শুরুর সেটে স্রেফ উড়ে গেলেন জেসিকা পেগুলা। চেক রিপাবলিকের কারোলিনা মুচোভার সামনে নিজেকে যেন শিক্ষানবিশ মনে হচ্ছিল তার। সেখান থেকেই বিস্ময়করভাবে ঘুরে দাঁড়ান যুক্তরাষ্ট্রের এই খেলোয়াড়। অবিশ্বাস্য জয়ে জায়গা করে নেন ইউএস ওপেনের ফাইনালে।
টুর্নামেন্টের নারী এককের সেমি-ফাইনালে প্রথম সেটে ১-৬ গেমে বিধ্বস্ত হন পেগুলা। পরে আর তাকে থামাতে পারেননি মুচোভা। শেষ দুই সেটে প্রতিপক্ষকে ৬-৪ ও ৬-২ গেমে হারিয়ে এখন শিরোপার আরও কাছে ৩০ বছর বয়সী পেগুলা।
শিরোপা লড়াইয়ের মঞ্চে অবশ্য তার জন্য অপেক্ষা করছে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ। আরেক সেমি-ফাইনালে যুক্তরাষ্ট্রের এমা ন্যাভারোকে ৬-৩, ৭-৬ (৭-২) গেমে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো ইউএস ওপেনের ফাইনালে উঠেছেন আরিনা সাবালেঙ্কা।
ক্যারিয়ারে এর আগে ছয়-ছয়বার গ্র্যান্ড স্ল্যামের কোয়ার্টার-ফাইনাল থেকে ছিটকে পড়েছিলেন পেগুলা। কিন্তু হার মানেননি যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ ধনী পরিবারগুলোর একটিতে বেড়ে ওঠা এই খেলোয়াড়। জেসিকার পেগুলার বাবা ধনকুবের টেরি পেগুলা। মা কিম পেগুলা কোরিয়া থেকে এসে থিতু হন যুক্তরাষ্ট্রে, তিনিও ব্যবসায়ী হিসেবে নিজ নামে পরিচিত।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ফুটবল লিগের দল বাফেলো বিলস ও ন্যাশনাল হকি লিগের দল বাফেলো সেবার্সের স্বত্বাধিকারী পেগুলার পরিবার। বিনোদন, রিয়েল এস্টেট, প্রাকৃতিক গ্যাস ডেভেলপমেন্টসহ অনেক ব্যবসা তাদের। পারিবারিক সম্পদ ৭০০ কোটি ডলারের বেশি।
এক যুগের বেশি সময় ধরে টেনিস বিশ্বে বড় কিছু অর্জন করতে চেষ্টা করে যাচ্ছেন জেসিকা পেগুলা। তবে সেভাবে সাড়া জাগাতে পেরেছেন কমই। গ্র্যান্ড স্ল্যামে খেলছেন এনিয়ে ৯ বছর ধরে। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের কোয়ার্টার-ফাইনাল থেকে বাদ পড়েছেন তিনবার, অন্য তিন গ্র্যান্ড স্ল্যামের শেষ আটে আটকে গেছেন একবার করে।
স্বপ্নময় পথচলায় এবার তিনি শিরোপার লড়াইয়ে মঞ্চে। ফাইনালে ওঠা পেগুলা বললেন, মানসিকভাবে ভেঙে পড়ার পরও কীভাবে শেষ চারের কঠিন পরীক্ষায় উৎরে গেলেন তিনি, নিজেও জানেন না।
“আমি খুব দ্রুত ঘুরে দাঁড়িয়েছিলাম। তবে সে অবিশ্বাস্য ভালো খেলছিল এবং সে আমাকে শিক্ষানবিশ বানিয়ে দিয়েছিল। আমি কান্নায় ভেঙে পড়ার মতো অবস্থায় ছিলাম কারণ এটা খুবই বিব্রতকর ছিল, আমাকে গুঁড়িয়ে দিচ্ছিল। সত্যি বলতে আমি জানি না, কীভাবে ম্যাচ ঘুরিয়ে দিয়েছি।”
পেগুলা পারলেও, প্রথমবার গ্র্যান্ড স্ল্যামের সেমি-ফাইনালে উঠে পরের ধাপে যেতে পারেননি যুক্তরাষ্ট্রের আরেক ধনকুবের বেন ন্যাভারোর মেয়ে এমা ন্যাভারো। বেনের সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১৫০ কোটি ডলার। তার কোম্পানি শেরম্যান ফাইন্যান্সিয়াল গ্রুপ এখন ফোর্বসের কাছে ‘ক্রেডিট কার্ড ও ডেট কালেকশন এম্পায়ার’ হিসেবে পরিচিত।
ঘরের মেয়ে তাই ইউএস ওপেনের সেমি-ফাইনালে ন্যাভারোর সমর্থনই ছিল বেশি। বেলারুশ তারকা সাবালেঙ্কা ম্যাচ শেষে তাই মজা করে বলেন, “এখন আপনারা আমার জন্য উল্লাস করছেন, কিন্তু একটু দেরি হয়ে গেছে।”
“যদিও আপনারা তাকে (ন্যাভারো) সমর্থন করছিলেন, তবে এটা সত্যিই অনেক বড় ব্যাপার ছিল। আপনাদের উল্লাস আমার শিহরণ জাগিয়েছে।”
২০১৯ সালে টেনিস গ্রেট সেরেনা উইলিয়ামসের পর ইউএস ওপেনের নারী এককে টানা দুইবার ফাইনাল খেলার কীর্তি গড়লেন সাবালেঙ্কা। এই টুর্নামেন্টের সবশেষ আসরের ফাইনালে যুক্তরাষ্ট্রের কোকো গাউফের বিপক্ষে হেরেছিলেন তিনি। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.