বিএমডিএ’র কার্যাদেশ নওগাঁর, কাজ হচ্ছে রাজশাহীতে

নিজস্ব প্রতিবেদক: বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) এক প্রকল্প পরিচালক (পিডি) নওগাঁর একটি খাল সংস্কারের কাজ বাস্তবায়ন না করে একই কার্যাদেশে একই ঠিকাদারকে দিয়ে রাজশাহীতে একটি খাল সংস্কারের কাজ করাচ্ছেন।
নওগাঁর খালটির দৈর্ঘ্য ছিল ৭০০ মিটার। রাজশাহীর খালের দৈর্ঘ্য ১ হাজার ৬০০ মিটার। তবে বরাদ্দ একই। নওগাঁর কার্যাদেশে রাজশাহীতে কাজ করানো নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
বিএমডিএ সূত্র জানায়, কাজটি করাচ্ছেন বরেন্দ্র এলাকায় খালে পানি সংরক্ষণের মাধ্যমে সেচ সম্প্রসারণ প্রকল্পের (দ্বিতীয় পর্যায়) পরিচালক নাজিরুল ইসলাম। কাজটি করছে ঠাকুরগাঁওয়ের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আরআর এন্টারপ্রাইজ। প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী রুহুল আমিন ঠাকুরগাঁও পৌর বিএনপির সহসভাপতি।
প্রকল্প–সংশ্লিষ্ট নথিপত্র ঘেঁটে দেখা গেছে, গত ২০ জানুয়ারি পিডি নাজিরুল ইসলাম নওগাঁর মহাদেবপুর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলায় খাল সংস্কার ও পাইপলাইন স্থাপনের কাজের জন্য দরপত্র আহ্বান করেন। দরপত্র জমার শেষ তারিখ ছিল ৪ ফেব্রুয়ারি। এরপর ১৭ এপ্রিল আরআর এন্টারপ্রাইজকে মহাদেবপুর উপজেলার বুজরুক কান্তিপুর খাড়ি সংস্কারের কাজের কার্যাদেশ দেওয়া হয়। ব্যয় ধরা হয় ২১ লাখ ৯৯ হাজার টাকা
প্রকল্প এলাকার লোকজন ও বিএমডিএ সূত্র জানায়, মহাদেবপুরের খাড়িতে পানি থাকায় কাজটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু কাজ বাতিল না করে বা নতুন কোনো দরপত্র আহ্বান না করে একই প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে কাজ করতে দেওয়া হয়। বর্তমানে গোদাগাড়ীর ঘনশ্যামপুর থেকে হঠাৎপাড়া পর্যন্ত খাল খননের কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি। ইতিমধ্যে প্রায় ৬০০ মিটার খাল খননের কাজ শেষ হয়েছে। সম্প্রতি ঘনশ্যামপুর সেতুর কাছে দুটি খননযন্ত্র দিয়ে কাজ চলতে দেখা যায়।
বিএমডিএর একাধিক কর্মকর্তা বিটিসি নিউজকে বলেন, মহাদেবপুরে ৭০০ মিটার খাল সংস্কারের জন্য ২১ লাখ ৯৯ হাজার টাকার কার্যাদেশ দেওয়া হলেও সেই কাজ বাস্তবায়ন হয়নি। সেই একই অর্থে এখন গোদাগাড়ীতে ১ হাজার ৬০০ মিটার খাল সংস্কারের কাজ করানো হচ্ছে। এতে প্রমাণ হয়, প্রথম কাজের জন্য অতিরিক্ত ব্যয় ধরা হয়েছিল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিডি নাজিরুল ইসলাম বিটিসি নিউজকে বলেন, ‘সাইট চেঞ্জ করলে কোনো দিনই অনিয়ম হয় না। লোকজন না জেনে শুধু পিছে লাগে।’ নওগাঁর ৭০০ মিটার খাল খননের বরাদ্দে কীভাবে রাজশাহীর ১ হাজার ৬০০ মিটার খাল সংস্কার করা হবে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ওখানকার খাল যদি প্রশস্ত বেশি হয়। আর রাজশাহীতে কম হলে হতেই পারে। আলাদা ডিজাইনে কাজ হবে।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএমডিএর আরেকজন পিডি বিটিসি নিউজকে বলেন, ‘কার্যাদেশ দেওয়ার পরও যদি কাজ করা সম্ভব না হয়, তাহলে সেটি বাতিল বা স্থগিত করতে হয়। সেই ঠিকাদারকে খুশি করতে অন্য কোনো স্থানের কাজ দেওয়া অনিয়ম। কারণ, প্রতিটি কাজের দৈর্ঘ্য, মাটি খননের ধরন, পরিবহন ও শ্রমিক খরচ আলাদা হয়।’
এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী রুহুল আমিন বিটিসি নিউজকে বলেন, ‘আমি কীভাবে কাজ পেলাম, সেটা বিএমডিএ জানে। তারা কাজ দিয়েছে, আমি করছি। এখন কাজ শেষের দিকে। আর এক কিলোমিটারের মতো বাকি আছে।’
জানতে চাইলে বিএমডিএর ভারপ্রাপ্ত সচিব এনামুল কাদির বিটিসি নিউজকে বলেন, ‘এটা আমার জানা নেই। যদি কেউ অভিযোগ করেন, তাহলে কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে দেখবে।’
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি মো.ওয়ালিউর রহমান তালুকদার (ইমাম) রাজশাহী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.