বিএনপি’র উদারতায় জামায়াতে ইসলামী এদেশে রাজনীতির সুযোগ পায় : রিজভী

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেন, বিএনপি’র উদারতার কারণে এদেশে রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছে। স্বাধীনতার পর শেখ মুজিবুর রহমান জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করেছিলো। কিন্তু আমরা বারবার দেখেছি তারা একটি জিনিস করতে পারে সেটা হলো মুনাফেকি।
বুধবার বিকেলে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক সভাপতি শহীদ অধ্যাপক আব্দুল ওয়াহেদ মন্ডলের স্মরণসভায় তাহেরপুর হাইস্কুল মাঠে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, ‘যে অন্যায় করে তার চক্রে কোননা কোন ভাবে সেইচক্রে পড়ে যেতে হয়। শেখ হাসিনা নিজেকে মনে করেছিলো খুন, গুম, হামলা-মামলা দিয়ে পার পেয়ে যাবে। কিন্তু তার আশ্রয় এখন হয়েছে ভারতে।
আওয়ামী লীগের ১৬-১৭ বছরের নানান অনিয়ম দুর্নীতি, খুন,গুম লুটপাট তুলে ধরে তিনি আরো বলেন, জনগণ শেখ হাসিনার নাম দিয়েছিলো মাফিয়া হাসিনা। শেখ হাসিনা নিজের ও আত্মীয় স্বজনদের নামে প্লট নিয়েছেন। তাদের পুরো পরিবারের বিরুদ্ধে এখন তদন্ত হচ্ছে। বিদেশে টিউলিপের দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত হচ্ছে। এদেশের আইন আদালত হাতের মুঠোয় নিয়ে অপরাধ করে পার পাওয়া যায় কিন্তু বিদেশে নয় বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বাংলাদেশ টিকে থাকুক, মাথা উঁচু করে দাঁড়াক শেখ হাসিনা তা কোনদিন চাননি। মাদকে দেশটাকে ভরে দিয়েছিলো। কেউ বাধা দিতেত পারতো না। কারন ইয়াবা চোরাচালানের সাথে খোদ শেখ হাসিনাসহ তার মন্ত্রী পরিষদের সদস্যবৃন্দ জড়িত ছিলেন বলে উল্লেখ করেন তিনি। তিনি বলেন, টাকা আত্মস্বাত করার জন্য শেখ হাসিনা উন্নয়নের নামে পদ্মাসেতু, মেট্রোরেল সহ বহু মেগা প্রকল্প করেছিলেন।
রিজভী বলেন, নিজের ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখতে গণগন্ত্রকে হত্যা করেছে। ভোটার বিহিন নির্বাচন করে বারবার ক্ষমতায় বসেছে খুনি হাসিনা। ভোটার ছাড়া নির্বাচিত হলেও ঐ অবৈধ সরকারকে স্বীকৃতি দিয়েছে ভারত। কিন্তু ভারত সরকার শেখ হাসিনাকে পাহাড়া দিতে পারলো না। শেখ হাসিনা অবৈধ। তার পাসপোর্টের বৈধতা নেই তারপরও শেখ হাসিনাকে বৈধতা দিচ্ছে ভারত। এ থেকেই আরো স্পস্ট যে, ভারত বাংলাদশের বন্ধু রাষ্ট্র নয়। স্বার্থান্বেষী দেশ ভারত।
তিনি বলেন, ভারত যদি জামায়াতের কাছে অত্যন্ত প্রিয় হয়ে যায় তা হচ্ছে অত্যন্ত দুঃখ জনক। বিএনপির উদারতার কারনে তারা বাংলাদেশে প্রথম রাজনীতি করার সুযোগ পায়। কিন্তু সব সময় এই দলটি মুনাফেকি করেছে। মুনাফেকি ছাড়া তারা কিছু করেনি। যে দল ছাত্র জনতার ওপর গুলি বর্ষণ করেছে, হত্যা করেছে নির্বিচাওে, অথচ জামায়াত বলে বসলো, তারা আওয়ামীলীগকে মাফ করে দেবে। যে জামায়াতকে বিএনপি রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছিলো সেই জামায়াতে ইসলাম ক্ষমতার লোভে আওয়ামী লীগের সাথে যুক্ত হয়ে বিএনপি’র বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিলো জানান তিনি।
তিনি বলেন, আবু সাঈদ, মুগ্ধর রক্তকে কিভাবে মাফ করবেন? প্রশ্ন রাখেন তিনি। এছাড়াও দলটিকে উদ্দেশ্য করে রিজভি বলেন, শেখ হাসিনা পাসপোর্ট ভিসা ছাড়া ভারতে বসে দেশের বিরুদ্ধে কথা বলছে, উষ্কানী ছড়াচ্ছে। সেই ভারত আপনাদের কাছে প্রিয় হয়ে গেলে এটা খুবই দু:খজনক।
তিনি বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে গণতন্ত্র নিশ্চিত করতে পারি তাহলে ছাত্র জনতার ত্যাগ কিছুটা শোধ হবে। জিয়াউর রহমান খাল কাটার বিপ্লব করেছিলেন। সেদিন থেকে এদেশ দাঁড়াতে শিখেছে। এদেশ কারো কাফেলার হবে না। আমরা নিজে চলতে চাই।
তিনি আরো বলেন, আমরা এই অন্তবর্তীকালীন সরকারকে ব্যর্থ হতে দেবনা। তার মানে এই নয় যে, বছওে পর বছর ধওে সংস্কারের নামে জাতীয় নির্বাচন পিছাবে। তা বিএনপি ও দেশের জনগণ মেনে নেবেনা। এজন্য দ্রুত নির্বাচন দিয়ে দেশে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করার আহ্বান জানান তিনি। সেইসাথে সবাইকে সকল প্রকার ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করার জন্য রাজপথে থাকার আহ্বান জানান তিনি।
বক্তব্য শেষে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর, বাগমারা উপজেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক সভাপতি শহীদ অধ্যাপক আব্দুল ওয়াহেদ মন্ডল, বেগম জিয়ার কনিষ্ট পুত্র আরাফাত রহমান কোকোসহ বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের সকল মৃত নেতাকর্মী এবং সকল মৃত মুসলিম ব্যক্তিদের রুহের মাহফিরাত কামনা ও বেগম খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত হয়।

তাহেরপুর পৌর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক মেয়র আ.ন.ম. সামসুর রহমান মিন্টুর সভাপতিত্বে এবং তাহেরপুর পৌর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আলিম বাবু’র সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডাক্তার রফিকুল ইসলাম, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ওবায়দুর রহমান চন্দন ও আমিরুল ইসলাম খান আলিম, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী নির্বাহী কমিটির সদস্য ও রাজশাহী জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক আবু সাইদ চাঁদ, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী নির্বাহী কমিটির সদস্য ও রাজশাহী জেলা বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম মার্শাল, সদস্য সচিব অধ্যাপক বিশ্বনাথ সরকার, রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট এরশাদ আলী ঈশা, রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা, সদস্য সচিব মামুন-অর-রশিদ মামুন ও বাগমারা উপজেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক ডি.এম জিয়াউর রহমান।

আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও পুঠিয়া উপজেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক আবু বকর সিদ্দিক, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও রাজশাহী জেলা বিএনপি’র সদস্য দেবাশিষ রায় মধু, জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি ও রাজশাহী জেলা বিএনপি’র সদস্য রুকুনুজ্জামান আলম, জেলা বিএনপি’র সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমান সদস্য গোলাম মোস্তফা মামুন, সদস্য তাজমুল তান টুটুল ও মহানগর শ্রমিক দলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম পাখিসহ বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও হাজার হাজার সমর্থক ও সাধারণ জনগণ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি মোঃ ফজলুল করিম (বাবলু) রাজশাহী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.