বাগমারা প্রতিনিধি:রাজশাহীর বাগমারায় মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েও খরচ চালানো নিয়ে দুশ্চিন্তারত গরীব পরিবারের কন্যা আঁখিকে সরকারী ভাবে ২৮ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে। রোববার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে আঁখির বাবা অবায়দুর রহমানকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম এ অর্থ প্রদান করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার আনিসুর রহমান ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক।
আসমাউল হুসনা (আঁখি) আগামী মঙ্গলবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস প্রথম বর্ষে ভর্তির জন্য এ টাকা খরচ করবেন বলে জানান বাবা চায়ের দোকানী অবায়দুর রহমান।
জান যায়, রাজশাহীর বাগমারার বড় বিহানালী ইউনিয়নের বেড়াবাড়ি গ্রামে এক অসহায় গরীব চা বিক্রেতার কন্যা এবারে মেডিকেলে পড়ার সুযোগ পেয়েছে। শত বাধা আর দারিদ্রকে হার মানিয়ে মেডিকেলে পড়ার সুযোগকে এলাকাবাসীর মধ্যে তাক লাগিয়ে দিয়েছে আঁখি। গ্রামের বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষে করে পাশ্ববর্তি বাগান্না বালিকা বিদ্যালয় থেকে ২০২২ সালে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন।
এরপর একটি বেসরকারি সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজে মেয়েকে ভর্তি করান আসমাউল হুসনার বাবা। সেখানেও জিপিএ-৫ পেয়ে সাফল্য আনেন অদম্য এই ছাত্রী। সে এবারের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় ৯৯৮তম হয়েছেন।
অসচ্ছল ওই কন্যার পরিবার ভর্তিসহ মেডিকেল কলেজ পড়ার খরচ নিয়ে উদ্বিগ্ন। এমন সংবাদ বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ও সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেস বুকে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনে নজরে আসে। অবায়দুর রহমান (৫২) উপজেলার বড়বিহানালী ইউনিয়নে বেড়াবাড় মোড়ে তার ছোট একটি চায়ের দোকান। সামান্য আয় দিয়ে ছয়জনের পরিবার নিয়ে অভাব-অনটনে দিন কাটে তার। আঁখির প্রবল ইচ্ছা শত প্রতিকুলতার মাঝে সে ডাক্তারী পড়ার সুযোগ পেয়েছে। সেটা কাজে লাগিয়ে বড় হবার সুযোগ একান্ত প্রয়োজন। বাবার সন্তানের সাফল্যের আনন্দ, অন্যদিকে কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ। কারণ, তিনি শুনেছেন, মেডিকেলে পড়ালেখা করতে বেশ খরচ।
অসহায় বাবা ভর্তির টাকাই জোগাড় করতে পারেননি। ফলে কয়েক দিনের মধ্যে ভর্তি করাতে পারবেন কি না, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন। সম্প্রতি তার পরিবারে অভাব-অনটনের খবরে অনেকে এগিয়ে এসেছেন। এই ধারবাহিকতায় জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় বাগমারা উপজেলা প্রশাসন তার পরিবারে সহায়তায় আঁখির ভর্তির সুযোগ করে দিতে ২৮ হাজার টাকা প্রদান করেন।
এ বিষযে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, আসমাউল হুসনা (আঁখি) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। অসচ্ছল পরিবারের সন্তানকে সহায়তায় ২৮ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে। আশা করি আখিঁ ভবিষ্যতে বড় ডাক্তার হয়ে নিজেকে আত্মমানবতার সেবায় নিয়োজিত করবে। এ সময় উপজেলা নিবাহী কর্মকতা তার পিতাকে বলেন, আঁখিকে যে টাকা প্রদান করা হলো এটা জনগণের টাকা। এই সহায়তা তার বড় কিছু না। তবে সব সময় যেন মানুষের কল্যানে যেন নিজেকে উৎসর্গ করে এমন বার্তা তার পিতার মাধ্যমে তাকে পৌঁছাতে পিতাকে উৎসাহ প্রদান করেন।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.