বাগমারায় ফসলি জমিতে পুকুর খননের দায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতে দুই লক্ষাধিক টাকা জরিমানা


বাগমারা প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাগমারায় অবৈধ ভাবে ফসলি জমিতে পুকুর খননের অভিযোগে গত দু’দিনে ৪টি পুকুর খননে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ভ্রাম্যমাণ আদলত পরিচালনা করে দুই লক্ষাধিক টাকা জরিমানা করা হয়।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার উজ্জল হোসেন ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুমন চৌধুরী থানার পুলিশের সহযোগীতায় গত সোমবার ও মঙ্গলবার পুকুরে অভিযান পরিচালনা করেন।
এ সময় উপজেলার গোয়ালকান্দি রামরাম বিলে পুকুর খননের ভেকুর ড্রাইভার রাশেল চৌধুরী (২৯) কে হাতে নাতে ধরা হয়। রাশেল বগুড়ার দুপচাচিয়ার মোজাহার চৌধুরীর ছেলে।
পরে তাকে ভ্রাম্যমান আদল হাজির করা হলে সে নিজের দোষ স্বীকার করে। অবৈধ ভাবে ফসলি জমিতে পুকুর খননে বালুমহল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ এর ৪(খ) এর ১৫ ধারায় ভ্রাম্যমান আদালতে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একই ভাবে ওই এলাকার জামাল মন্ডলের ছেলে মিলন মন্ডল (২৩) কে পুকুর খননের দায়ে আটক করে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়।
ভ্রাম্যমান আদালতে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের দায়িত্ব পালন করেন বাগমারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার উজ্জল হোসেন। এছাড়া পুকুর খননের সময় ভেকুর ড্রাইভারসিরাজগঞ্জ সদরের মৃত সমসের আলীর ছেলে আব্দুল আজিজকে ভ্রাম্যমান আদালতে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। উপজেলার সেনপাড়া এলাকায় ফসলি জমিতে পুকুর খননের অভিযোগে পুকুরের মালিক মিলন মন্ডল ((৩৮) ভ্রাম্যমান আদালতে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমান আদালতে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট।
জানা গেছে, সম্প্রতি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এক শ্রেণী পুকুর ব্যবসায়ী স্থানীয়দের কাছে অল্প মূল্যে বেশী লাভের আশায় বিঘা চুক্তিতে কৃষি জমি লিজ নিয়ে পুকুর খনন করে ফসলি জমি নষ্ট করছে। এতে কৃষি জমির প্রকৃতি পরিবর্তন করে পুকুর বা দিঘি খনন করায় আবাদি জমির পরিমান কমে যাচ্ছে এবং চাষাবাদ হুমকীর মুখে পড়ছে। মন্ত্রণালয় নির্দেশ রয়েছে জমির প্রকৃতি পরিবর্তন করা যাবে না। আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গলি দেখিয়ে ফসলি জমিতে বরাবরই চলছে পুকুর খনন।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান, উপজেলার ঝিকরা, গোয়ালকান্দি, দরগামাড়িয়া হুদির বিলসহ বিভিন্ন এলাকায় অর্ধশত অবৈধ ভাবে পুকুর খনন চলছে। এসব পুকর দিনের বেলা খনন বন্ধ থাকলেও রাতের অন্ধকারে খনন অব্যাহত রয়েছে। উপজেলা প্রশাসন থেকে অবৈধ ভাবে পুকুর খনন বন্ধের নির্দেশ থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গলি দেখিয়ে ফসলি জমিতে বরাবরই চলছে পুকুর খনন। ফলে কৃষি জমির প্রকৃতি পরিবর্তন করে পুকুর খনন করায় আবাদি জমির পরিমান কমে যাচ্ছে এবং চাষাবাদ হুমকীর মুখে পড়ছে। একই ভাবে খননকৃত পুকুরের মাটি ট্রাক্টর দিয়ে সড়ক ভেঙ্গে পড়ছে। এতে যানবহন চলাচলে ব্যাপক বিঘœ ঘটছে।
বিষয়টি স্থানীয়রা উপজেলা প্রশাসনকে জানালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার উজ্জল হোসেন ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)সুমন চৌধুরী বাগমারা থানা পুলিশের সহযোগীতায় অভিযান চালায়। অভিযান কালে পুকুরের মালিক ও ভেকু চালককে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করা হয়।
এ ব্যাপারে ভ্রাম্যমান আদালতে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট উপজেলা নির্বাহী অফিসার উজ্জল হোসেন ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুমন চৌধুরী বিটিসি নিউজকে বলেন, উপজেলায় অবৈধ ভাবে কোন পুকুর খনন করা যাবে না। অবৈধ ভাবে কোথাও ফসলি জমিতে পুকুর খনন করা হলে তাদের বিরুদ্ধে সর্বচ্চো ১০ লক্ষ টাকা জরিমান বা দুই বছরের কারাদন্ড প্রদান করা হবে। ফসলি জমিতে পুকুর খননের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখা হবে বলেও জানান তারা।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বাগমারা প্রতিনিধি মো: আফাজ্জল হোসেন / রাজশাহী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.