বিশেষ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধি:ব্যবসায়ীক কাজে ভারতে দিয়ে ভারতের মালদায় হোটেলে থাকতে দেয়া হয়নি চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিশিষ্ট এক ব্যবসায়ীকে \ রীতিমত ক্ষুদ্ধ ভূক্তভোগী ব্যবসায়ী। বৈধ ভিসা নিয়ে ব্যবসার কাজে গিয়ে এ ধরনের হয়রানি মূলক আচারন খুবই দুঃখ জনক। এটি একজন প্রতিবেশি দেশের কাছে মোটেও কাম্য নয় বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন ভূক্তভোগী ওই ব্যবসায়ী।
পাশপোর্ট ভিসা নিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কোন বাধা না দিলেও মালদা শহরে এই হয়রানী করা হচ্ছে এবং এ খবরে সেখানকার স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও অনেকটায় হতবাক ও দুঃখিত। শুধু তাই নয়, ভারতের বর্ধমানে একই অবস্থা, কোন হোটেলে থাকতে দেয়া হচ্ছে না বাংলাদেশীদের।
বিষয়টির অবশ্যই দ্রুত সমাধান হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন ভারত-বাংলাদেশ জয়েন্ট চেম্বার অব কমার্স এর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বারের সভাপতি মোঃ আব্দুল ওয়াহেদ।
ভূক্তভোগী জেলার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নবাব অটো রাইস এন্ড ফিড মিলস্ লিমিটেড এর স্বত্তাধিকারী আলহাজ্ব মোঃ আকবর হোসেন জানান, আমি চাঁপাইনবাবগঞ্জের একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও আমদানিকারক।
আমি শনিবার (৭ ডিসেম্বর/২৪) তারিখে ব্যবসায়িক কাজে ভারতের মামলা জেলায় অবস্থান করি। আমি শনিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে হোটেলে রাত্রি যাপন করার জন্য মালদা শহরের ব্যস্ততম ৪২০ মোড়ে হোটেল পাপাইলিও তে প্রথমে যাই এবং ম্যানেজারের সাথে কথা বলি এবং হোটেলে রাত্রি যাপন করার বিষয়টি জানায়। হোটেল ম্যানেজার আমাকে বলেন যে, প্রতি রাত্রি ২ হাজার ৫৫০ টাকা করে ভাড়া দিতে হবে। এরপর আমার কাছে আইডি কার্ড, ভিসা ও পাসপোর্ট দেখতে চান, আমি আমার বৈধ কাগজপত্র দেখায়।
হোটেল ম্যানজার কাগজপত্র দেখে বলেন, আমরা কোন বাংলাদেশীকে হোটেলে অবস্থান করতে দিবো না। এরপর পাশ্ববর্তী আরেকটি হোটেলে যায় হোটেল ম্যাংগো লিফট এবং ম্যানেজারের সাথে কথা বলি যে আমরা বাংলাদেশ থেকে ব্যাবসায়িক কাজের জন্য এসেছি, এখানে রাত্রি যাপন করবো।
হোটেল ম্যানেজার বলেন যে প্রতি রাত্রি ২৫৫০ টাকা হোটেল ভাড়া দিতে হবে। এরপর আমাদের কাছে কাগজপত্র দেখতে চান এবং আমরা বাংলাদেশী ব্যবসায়িক ভিসা ও পাসপোর্ট দেখায়। কিন্তু হোটেল ম্যাংগো লিফট এর ম্যানেজার বাংলাদেশী বৈধ ব্যবসায়িক ভিসা ও পাসপোর্ট দেখে বলেন, মালদা জেলায় যে সকল হোটেল আছে, তাতে কোন বাংলাদেশীকে হোটেলে অবস্থান করতে দেওয়া হবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাই আপনারা কেউ থাকার জন্য হোটেল অবস্থান করতে পারবেন না। বৈধ ভিসা থাকা সত্বেও এ ধরনের হয়রানি মূলক আচারন খুবই দু:খ জনক যা একজন প্রতিবেশি দেশের কাছে মোটেও কাম্য নয় বলেও জানান ভূক্তভোগী চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী।
এব্যাপারে ভারত-বাংলাদেশ জয়েন্ট চেম্বার অব কমার্স এর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বারের সভাপতি মোঃ আব্দুল ওয়াহেদ বলেন, ভিসা দেয়ার পর ইমিগ্রেশন পাশ দিয়ে ভারতে প্রবেশে কোন বাধা না দিয়ে ভারতে বৈধ কাগজপত্র নিয়ে প্রবেশের পর রাতে অবস্থানের জন্য মালদার কোন হোটেলে থাকতে দিচ্ছে না মালদার হোটেলগুলো। এটি দুই দেশের সম্পর্কের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি করবে। ব্যবসার ক্ষেত্রেও বিরুপ প্রভাব পড়বে।
তিনি বলেন, ব্যবসায়ী হোক, সাধারণ মানুষ হোক বা রোগী হোক, বৈধভাবে ভারতে প্রবেশের অনুমতি দিলে প্রয়োজনে রাতে থাকার ব্যাপারে কোন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না। যদি বাধা দিতে হয়, তাহলে প্রবেশ পথেই বাধা দিয়ে ফেরত পাঠাতে হবে বা প্রবেশ করতে দিতে হবে না। কিন্তু ভিসা দেবে, ইমিগ্রেশন পাশ দেবে, আবার থাকার জায়গা দেবে না। এটা সাংঘর্ষিক। তাহলে কি বাংলাদেশের মানুষ গিয়ে ভারতের রাস্তার রাত কাটাবে? তিনি আরও বলেন, বিষয়টির অবশ্যই দ্রুত সমাধান হওয়া প্রয়োজন। অন্যথায় বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের তথা সীমান্ত এলাকার জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ এর ব্যবসায়ীদের জন্য ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়াবে।
বৈধ কাগজপত্র নিয়ে ভারতে গিয়ে রাতে যদি থাকার জায়গা না হয় হোটেলে বাংলাদেশীদের, তাহলে হরহামেশায় ভারত থেকে অবৈধভাবে এসে বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকা দিয়ে আসছে ভারতের অনেক মানুষ। কেউ আসেন ব্যবসা করতে, কেই আসেন আত্মীয়ের বাসায়। প্রতিবেশী দেশের মানুষের সাথে সম্পর্ক থাকবে, সেটা বন্ধুত্বের। কিন্তু বর্তমানে যেটা হচ্ছে, সেটা নিজ স্বার্থের। তাহলে ভারত সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হবে, যেন কোন মানুষ অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ না করে। চোরাপথে বাংলাদেশে প্রবেশ করে অনেকেই অবস্থান করছেন, সেটাও বাংলাদেশ সরকারকে কঠোর হাতে দমন করতে হবে এমনটায় আশা করছেন সচেতন মহল ও বিশিষ্ট জনেরা। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.