বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সম্প্রতি বাংলাদেশি নাগরিকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার হোটেল ও রেস্টুরেন্ট মালিকরা। ফলে ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় বাংলাদেশি নাগরিকদের ওপর জারি করা হোটেল নিষেধাজ্ঞা শিথিলের ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে অল ত্রিপুরা হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন (এটিএইচআরওএ) নিষেধাজ্ঞা শিথিলের এই ঘোষণা দিয়েছে।
জানা গেছে, ভারতের ত্রিপুরার বেশিরভাগ হোটেল ও রেস্তোরাঁর ব্যবসার প্রধান গ্রাহক বাংলাদেশি পর্যটকরা। এমনিতেই ভারতের ভিসা বন্ধের সিদ্ধান্তে বাংলাদেশি পর্যটক আসার সংখ্যা তলানিতে নেমেছে। মেডিকেলসহ অন্যান্য ভিসায় যারা ত্রিপুরায় আসছিলেন এটিএইচআরওএ-এর নিষেধাজ্ঞার ফলে তারাও আসা বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে ত্রিপুরার বেশিরভাগ হোটেল ও রেস্তোরাঁ বন্ধ হয়ে গেছে।
এর আগে, গত ২ ডিসেম্বর বাংলাদেশে ভারতীয় পতাকার অবমাননার অভিযোগে ত্রিপুরায় বিক্ষোভ করেন দেশটির কট্টর হিন্দুত্ববাদী বিভিন্ন সংগঠনের কর্মী-সমর্থকরা।
পরে সেদিনই বাংলাদেশি নাগরিকদের ত্রিপুরার কোনো হোটেল ও রেস্তোরাঁয় জায়গা দেওয়া হবে না বলে ঘোষণা দেয় অল ত্রিপুরা হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। যদিও ভারতের ত্রিপুরা ও কলকাতার বেশিরভাগ হোটেল এবং রেস্তোরাঁর ব্যবসার প্রধান ভোক্তা বাংলাদেশি নাগরিকরা।
হিন্দু সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত নিপীড়ন ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী ভারতের কয়েকটি রাজ্যে প্রায় প্রত্যেক দিনই বিক্ষোভ হচ্ছে। এছাড়া ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় অবস্থিত বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের হামলা-ভাঙচুর এবং বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননার ঘটনা ঘটে।
এই ঘটনায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার ভারতীয় রাষ্ট্রদূত প্রণয় ভার্মাকে তলব করে কড়া প্রতিবাদ জানায়। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ও আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনার নিন্দা এবং কূটনৈতিক শিষ্টাচার বজায় রাখার গুরুত্বের ওপর জোর দেয়।
ত্রিপুরায় বাংলাদেশি নাগরিকদের সঙ্গে কোনো ধরনের দুর্ব্যবহারের ঘটনা ঘটেনি জানিয়ে অল ত্রিপুরা হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন বলেছে, ‘জাতীয় সংবেদনশীলতা এবং আতিথেয়তার নীতির মাঝে ভারসাম্য বজায় রাখার স্বার্থে আমাদের ঘোষিত নিষেধাজ্ঞা সংশোধন করা হয়েছে। আমরা মেডিক্যাল ভিসাধারী বাংলাদেশি অতিথিদের স্বাগত জানাবো। ত্রিপুরায় তাদের যথাযথ আবাসন এবং সেবা নিশ্চিত করা হবে।’
অমিত দে নামের এক হোটেল কর্মকর্তা বলেন, আমাদের হোটেল মালিক সেপ্টেম্বর মাস থেকে আমাদের বেতন দিতে পারেন না। আগে হোটেলে পর্যটক জায়গা দিতে পারতাম না, এখন সপ্তাহে দুজনকেও পাওয়া যায় না। সিংহভাগ হোটেল ও রেস্তোরাঁ বন্ধ হয়ে গেছে। আমাদের মতো সিংভাগ হোটেলই বন্ধ। এটিএইচআরওএ ভুল সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসায় আমরা খুশি। আশা করি, খুব দ্রুত দুদেশের সবকিছু আগের মতো হয়ে যাবে। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.