বিটিসি বিনোদন ডেস্ক: ঢাকাই সিনেমার প্রবীণ অভিনেতা ‘রঙিন নবাব’ খ্যাত প্রবীর মিত্র আর নেই। রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে রোববার (৫ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এই বর্ষীয়ান অভিনেতার মৃত্যু হয়।
এ খবর নিশ্চিত করেছেন প্রবীর মিত্রের পুত্রবধূ সোনিয়া ইয়াসমিন। নানা শারীরিক জটিলতা নিয়ে গেল ২২ ডিসেম্বর থেকে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন প্রবীর মিত্র।
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রবীর মিত্র ‘লালকুটি’ থিয়েটার গ্রুপে অভিনয়ের মাধ্যমে তাঁর অভিনয় জীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে পরিচালক এইচ আকবরের হাত ধরে ‘জলছবি’ শিরোনামে সিনেমার মধ্য দিয়েছে বড়পর্দায় তাঁর অভিষেক হয়। ক্যারিয়ারের শুরুতে নায়ক চরিত্রে দেখা গেলেও বেশির ভাগ সিনেমায় চরিত্রাভিনেতা হিসেবে দেখা মিলেছে তাঁর।
অভিনয়ের বাইরে প্রবীর মিত্র ষাটের দশকে ঢাকা ফার্স্ট ডিভিশন ক্রিকেট খেলেছেন, ছিলেন অধিনায়ক। একই সময় তিনি ফার্স্ট ডিভিশন হকি খেলেছেন ফায়ার সার্ভিসের হয়ে। এ ছাড়া কামাল স্পোর্টিংয়ের হয়ে সেকেন্ড ডিভিশন ফুটবলও খেলেছেন।
প্রবীর মিত্র অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে- ‘ফরিয়াদ’, ‘রক্ত শপথ’, ‘চরিত্রহীন’, ‘জয় পরাজয়’, ‘অঙ্গার’, ‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘জীবন তৃষ্ণা’, ‘সেয়ানা’, ‘জালিয়াত’, ‘মিন্টু আমার নাম’, ‘ফকির মজনু শাহ’, ‘তরুলতা’, ‘গাঁয়ের ছেলে’, ‘পুত্রবধূ’, ‘মধুমিতা’, ‘অশান্ত ঢেউ’, ‘অলংকার’, ‘অনুরাগ’, ‘প্রতিজ্ঞা’ ইত্যাদি।
প্রবীর মিত্র ১৯৪০ সালের ১৮ আগস্ট চাঁদপুর জেলার নতুন বাজারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর শৈশব কেটেছে পুরান ঢাকায়। পড়াশোনা করেন সেন্ট গ্রেগরি হাইস্কুল ও জগন্নাথ কলেজে (বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়)।
১৯৭১ সালে এইচ আকবরের ‘জলছবি’ সিনেমা দিয়ে বড়পর্দায় যাত্রা শুরু করেন প্রবীর মিত্র। এরপর দীর্ঘ ক্যারিয়ারে পর্দায় নায়ক চরিত্রে যেমন সফল হয়েছেন, তেমনি চরিত্রাভিনেতা হিসেবেও সমানভাবে আলো ছড়িয়েছেন। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে প্রায় তিন শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন গুণী এই অভিনেতা।
কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ ১৯৮২ সালে মহিউদ্দিন পরিচালিত ‘বড় ভালো লোক ছিলো’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান প্রবীর মিত্র। আর ২০১৮ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে তাঁকে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.