পূর্ববিরোধের জের: মৃতপ্রায় রাবেয়াকে ধর্ষণ, পরে মৃত্যু নিশ্চিত হলে পালিয়ে যান তারা!

নরসিংদী প্রতিনিধি: নরসিংদীর রায়পুরায় পূর্ববিরোধের জের ধরে রাবেয়া খাতুন (৫৩) নামে এক নারীকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নরসিংদী।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে নরসিংদী পিবিআই কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ তথ্য জানান, পিবিআইয়ের নরসিংদী পুলিশ সুপার মো. এনায়েত হোসেন মান্নান।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন, নরসিংদী রায়পুরার আদিয়াবাদ পিপিনগরের নাসির উদ্দিনের ছেলে মো. সুমন(২০), একই উপজেলার বাহেরচর পশ্চিম পাড়ার বকুল মিয়ার ছেলে জীবন (১৯) ও আব্দুর রহিমের ছেলে স্বপন(৫৫)।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. এনায়েত হোসেন মান্নান জানান, গত বছর ২৫ ডিসেম্বর সকালে নিজ ঘরের মেঝে থেকে গলায় কাপড় পেঁচানো ও উলঙ্গ অবস্থায় রাবেয়া খাতুনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এসময় ওই ঘরের পশ্চিম পাশে দুইটি সিঁধ কাটা ছিল। ঘটনার পরদিন নিহতের ছোট ভাই আমির হামজা বাদী হয়ে রায়পুরা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এরপর ক্লুলেস এ মামলাটির দীর্ঘ তদন্তে কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় চলতি বছর ৩১ মার্চ মামলাটি পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের আদেশক্রমে পিবিআইকে তদন্তভার দেয়া হয়।
মামলাটি পিবিআইতে আসার পর পিবিআইয়ের পরিদর্শক সাইফুল আলম ও একাধিক চৌকস টিম গোপনে ও প্রকাশ্যে ঘটনাস্থল এবং আশপাশের এলাকায় তদন্ত শুরু করে। তদন্তের এক পর্যায়ে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় আসামিদের অবস্থান নির্ণয় করে নরসিংদী, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানের এক পর্যায়ে চলতি মাসের ২৫ তারিখে নরসিংদী রেলস্টেশন থেকে সুমনকে (২০) গ্রেফতার করে পিবিআই।
তার দেয়া তথ্য মতে, এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট জীবন (১৯) নামে আরও একজনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তারা ২৬ তারিখ নরসিংদী আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তাদের দেয়া তথ্য ওই ঘটনায় সম্পৃক্ত স্বপন (৫৫) নামে আরও একজনকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেয়া তথ্যমতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ও সিঁধ কাটার শাবল এবং ছেনি উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সুপার আরো জানান, গ্রেফতারকৃতরা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে স্বীকার করে যে, পূর্ববিরোধের জের ধরে পরিকল্পিতভাবে গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর দিনগত রাত দেড়টার দিকে ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত সুমন, স্বপন, জীবন ও কামাল শাবল ও এবং ছেনি দিয়ে ঘরে দুইটি সিঁধ কেটে কামাল ও সুমন ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে। পরে তারা দুইজন ঘরে ঢুকে দরজা খুলে দিলে স্বপন ও জীবন ঘরে ঢুকে। এসময় কামাল ঘুমন্ত অবস্থায় রাবেয়ার মুখে কাপড় দিয়ে চেপে ধরে রাখে এবং সুমন ও স্বপন ওড়না দিয়ে পা বাঁধে। এর এক পর্যায়ে সুমন কাঠ দিয়ে তার পেটের মধ্যে সজোরে আঘাত করে। একটা সময় রাবেয়ার মৃতপ্রায় অবস্থায় সুমন তাকে ধর্ষণ করে। এসময় তার মৃত্যু নিশ্চিত হলে তারা পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য নিহতের ভ্যাজাইনাল সোয়াব সংগ্রহ করে ডিএনএ পরীক্ষা করা হলে নিহতের শরীরে একজন পুরুষের বীর্যের অস্তিত্ব পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় কামাল নামে একজন আসামি এখনও পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতারে অভিযান চলমান রয়েছে বলে জানান পিবিআই পুলিশ সুপার।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নরসিংদী প্রতিনিধি মো. গোলাম মোস্তফা মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.