পুলিশের ওপর হামলা করে ছিনিয়ে নেয়ার চারদিন পর গ্রেপ্তার হলেন চরমপন্থী নেতা নাসিম

খুলনা ব্যুরো: পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে ছিনিয়ে নেয়ার চারদিন পর অবশেষে গ্রেপ্তার হলেন পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট পার্টির (চরমপন্থী) আঞ্চলিক নেতা মো. নাসিমুল গণি ওরফে নাসিম (৫৬)।
রবিবার ভোরে (২২ জুন) খুলনার খালিশপুর মুজগুন্নি পার্ক এলাকার একটি চারতলা ভবনের নিচতলা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে দিঘলিয়া থানা পুলিশ। এ সময় গোয়েন্দা পুলিশের একটি দলও অভিযানে সহায়তা করে।
নাসিম খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার ফরমাইশখানা গ্রামের বাসিন্দা। তার বিরুদ্ধে একাধিক থানায় অন্তত এক ডজন হত্যা, চাঁদাবাজি, অপহরণ, ডাকাতি ও অস্ত্র মামলার অভিযোগ রয়েছে। আলোচিত গণেশ হত্যা মামলায় আদালত তাকে ৩২ বছরের কারাদণ্ড দেন। এছাড়া একটি অস্ত্র মামলায় তার ১৭ বছরের সাজা রয়েছে।
গত ১৮ জুন সন্ধ্যায় দিঘলিয়া থানা পুলিশের একটি দল চরমপন্থী নেতা নাসিমকে গ্রেপ্তারে ফরমাইশখানার ঘোলারঘাট এলাকায় অভিযান চালায়। অভিযানে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন ওসি (তদন্ত) ও এসআই তারেক। তবে এ সময় নাসিমের অনুসারীরা পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে তাকে ছিনিয়ে নেয়। ওই ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে পুলিশের পক্ষ থেকে সরকারি কাজে বাধা ও হামলার অভিযোগে ১৯ জুন নাসিমসহ ২৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ২৫-৩০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। ঘটনার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে নাসিম বাহিনীর দুই সদস্য রেজাউল ও আল আমিনকে গ্রেপ্তার করে।
চরমপন্থী নাসিমের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে রোববার ভোরে খুলনার খালিশপুরের মুজগুন্নি পার্ক এলাকার একটি চারতলা ভবনে অভিযান চালায় পুলিশ। ভবনের নিচতলা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে দিঘলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এইচ এম শাহীন বলেন, “নাসিমকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তার বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা মামলাসহ সন্ত্রাসী কার্যকলাপের অভিযোগ রয়েছে।”
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এক সময় চরমপন্থী হিসেবে পরিচিত নাসিম গত দুই বছর ধরে এলাকায় ফিরে আওয়ামী লীগের একটি প্রভাবশালী অংশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি করেন।
অভিযোগ রয়েছে, তিনি নিষ্ক্রিয় স্থানীয় সাবেক এমপি আব্দুস সালাম মুর্শিদী ও শেখ পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করেন। এমনকি দিঘলিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বলেও স্থানীয়ভাবে তার প্রচার রয়েছে।
নাসিমের বিরুদ্ধে খুলনার দিঘলিয়া, দৌলতপুর, সোনাডাঙ্গা, হরিণটানা, বাগেরহাটের ফকিরহাটসহ বিভিন্ন থানায় গণেশ হত্যা, হুজি শহীদ, মুন্না, ইকবাল হুজুর, জাহিদ চেয়ারম্যান হত্যা মামলাসহ চাঁদাবাজি, অস্ত্র কেনাবেচা, অপহরণ ও ডাকাতির একাধিক মামলা রয়েছে। ২০০২ সালে গণেশ হত্যা মামলায় আটক হওয়ার পর তিনি জামিনে ছাড়া পান।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর খুলনা ব্যুরো প্রধান মাশরুর মুর্শেদ। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.