পাবনা সদর সাব রেজিষ্ট্রার ইউসুফ আলীর বিরুদ্ধে সীমাহীন দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগ, অপসারণ দাবি!

নিজস্ব প্রতিবেদক: পাবনা সদর সাব রেজিষ্ট্রার মো: ইউসুফ আলীর বিরুদ্ধে সীমাহীন অনিয়ম- দুর্নীতি ও গ্রাহক হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। তাকে দ্রুত অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করেছে সাধারণ মানুষ। 

বুধবার (১৪ আগষ্ট) দুপুরে পাবনা কোর্ট চত্বরের সাব রেজিষ্ট্রার অফিসের সামনে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এসময় ভূয়া ভূয়া বলে শ্লোগান দেওয়া হয়। ইউসুফের দ্রুত অপসারণ চাই দিতে হবে। দুর্নীতির আস্তানা এই পাবনায় হবে। দুর্নীতিবাজের কালোহাত ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও। এই অফিসের রন্ধে রন্ধে অনিয়ম বন্ধ করো করতে হবে ইত্যাদি শ্লোগান দিতে থাকে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, পাবনা ইউনানী আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল (প্রস্তাবিত) জায়গা গত বছরের জুন মাসে কলেজের নামে দাতা সদস্যের দানকৃত জমি রেজিষ্ট্রেশন করতে গেলে পাবনা সদর সাব রেজিষ্টার পাবনা জেলা প্রসাশকের অনুমতি পত্র চেয়ে উক্ত কলেজের জমির রেজিষ্ট্রেশনের কাজ স্থগিত করে দেন।
আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে গত বছরের ৫ আগষ্ট’ পাবনা জেলা প্রশাসকের অনুমতিপত্র চেয়ে আবেদন করা হয়।  সেদিন পাবনা জেলা প্রসাশক কর্তৃক অনুমতিপত্র দেওয়া হয়। এসব অনুমতিপত্র ও প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্রসহ চলতি মাসের (১৩ মঙ্গলবার) তারিখে পাবনা ইউনানী আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল (প্রস্তাবিত), কলেজের নামে দানকৃত জমি রেজিষ্ট্রেশন করতে গেলে পাবনা সদর সাব-রেজিষ্টার মোঃ ইউসুফ আলী সকাল হতে বিভিন্ন ধরনের ভুলভাল দেখিয়ে তালবাহানা করে কালক্ষেপন করতে থাকেন। সাব-রেজিষ্টার মোঃ ইউসুফ আলী প্রতি দলিলে তার পেশকারের মাধ্যমে বড় অংকের টাকা নেন এবং কারনে অকারনে মানুষের সাথে খারাপ আচরণের পাশাপাশি আইনের কথা বলে হয়রানি করেন। পাবনা সদর রেজিস্ট্রার অফিস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ফলে প্রতিদিন প্রায় কমবেশী শত দলিল সম্পাদিত হয়। দিনে কয়েক লক্ষ টাকা অবৈধভাবে আয় করেন। ভুক্তভোগিদের মধ্যে আমরাও একজন। দলিলপ্রতি দাবিকৃত উৎকচ দেওয়ার পরও সারাদিন অতিবাহিত করে কার্য-দিবসের শেষ সময়ে তিনি বলেন এই জনি রেজিষ্ট্রেশন  করা যাবে কি না দেখি এবং আমাদের সাথে আচমকা বাজে ব্যবহার করেন। তখন আমরা অনুরোধ করলে তিনি আমাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে অসদাচরণ করেন। রেগে এজলাস থেকে বের হয়ে যান।
বক্তারা অভিযোগ করে আরও বলেন, দুর্নীতিবাজ এই অফিসারের আচরণে বুঝা যায় তিনি মোটা অংকের অবৈধ সুবিধা নিতে চান যাহা সম্পূর্ণ বে-আইনী। আমরা এদেশের সাধারণ নাগরিক, এদেশের জনগনের ট্যাক্সের টাকায় সরকারী অফিসের বেতন-বোনাস ও সকল আর্থিক সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্ত হোন। কিন্তু সেই নাগরিকের সঙ্গে খোলা-মেলা অবৈধ উৎকট গ্রহণ এবং এই খারাপ আচরণ খুবই দুঃখজনক।
এছারাও শিক্ষা জাতীর মেরুদন্ড, পাবনা সহ আশেপাশের পাঁচ জেলায় চিরচারিত ইউনানী-আয়ুর্বেদিক শিক্ষার কোন কলেজ নাই। উক্ত শিক্ষা কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করার জন্য কলেজ কমিটির দাতা সদস্য ব্যক্তিমালিকানা জমি বিনা স্বার্থে কলেজকে দান করার জন্য ঢাকা হতে সরাসরি সাব-রেজিষ্ট্রার অফিলে দলিল করে দিতে যান কিন্তু সাব-রেজিষ্ট্রারের হীন-মানসিকতার কারনে দাতা অর্থ এবং সময় ব্যয় করে।
শুধু তাই নয় এখানে সেবা নিতে আসা প্রতিটি মানুষকে তারা মানুষই মনে করে না। টাকা না দিলে হয়রানি করা হয়। টাকা দিলেই মেলে সেবা। দুর্নীতির আখড়ায় পরিনত হয়েছে।
দলিল লেখক সমিতির নামেও অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হয়। এই অফিসে অনেক দুর্নীতিবাজ মহুরি রয়েছে। তাদের মাধ্যমে প্রতিদিনি লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। একট দলিল তুলতে গেলেও এখানে ঘুশ দিতে হয়। জমি রেজিষ্ট্রেশন করতে গেলেও আগে উৎকোচ দিতে হয়।  তাছাড়া এজলাসের অফিসের ভিতরে যেতে দেওয়া হয় না। আগের সাব রেজিষ্ট্রার হাফিজও দুর্নীতিসহ নানা ক্যালেঙ্কারী মাথায় নিয়ে এখান থেকে বিদায় হতে হয়েছে। ইনি এসেও দুর্নীত ও গ্রাহক হয়রানি করছেন।
এজন্য দ্রুত এই দুর্নীতিবাজ পাবনা সদর সাব রেজিষ্ট্রার ইউসুফ আলীকে অপসারণ করতে হবে।  সেই সঙ্গে এই অফিসের অনিয়মে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অনিয়মে জড়িত মহুরীদেরও শাস্তির আওতায় আনতে হবে। বর্তমান সরকার সারাদেশের অফিসগুলো থেকে দুর্নীতবাজ অফিসারদের অপসারণ করছেন। তেমনি পাবনার সব রেজিষ্ট্রার অফিসসহ বেশ কিছু অফিসে এখনো অনিয়ম চলছেই। এদেরকেও দ্রুত বরখাস্ত করতে হবে।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, পাবনা ইউনানি- আয়ুর্বেদীক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ মো: হাফিজুর রহমান,  কলেজের প্রভাষক মো:বাকিবিল্লাহ, প্রভাষক হেকিম মো: মুরাদ হোসেন, পাবনা ইউনানি-আয়ুর্বেদীক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ম্যানেজিং কমিটির সহসম্পাদক মুক্তার হোসেন ও কলেজটির অন্যান্য শিক্ষক-কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীবৃন্দ।
এ বিষয়ে বক্তব্যে পাবনা সদর সাব রেজিষ্ট্রার মো: ইউসুফ আলী বিটিসি নিউজকে বলেন, আমি অনুমতি পত্র চাইনি তাদের কাছ থেকে। আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে এগুলো ভিত্তিহীন।
পাবনা জেলা সাব রেজিষ্ট্রার দিপক কুমার সরকার বিটিসি নিউজকে বলেন, এসব অভিযোগ ক্ষতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি জহুরুল ইসলাম / পাবনা। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.