পাবনায় মেডিক্যাল চান্স পাওয়া শিক্ষার্থী মেঘলার সকল দায়িত্ব নিলেন পাবনার জেলা প্রশাসক

নিজস্ব প্রতিবেদক: “দিন যতই ঘনিয়ে আসছে মেঘলা ও তার পরিবারের চোখে মুখে চিন্তার ছাপ যেন বাড়ছে” এমন সংবাদ ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে দিনমজুর বাবার মেধাবী সন্তান মেঘলা খাতুন(১৯)র মেডিক্যাল কলেজে চান্স ও তার দারিদ্রতার খবর প্রচারের পর শিক্ষার্থী মেঘলার পাশে দাঁড়ালেন পাবনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম।খুশি মেঘলা ও তার পরিবার !
মঙ্গলবার সকালে পাবনার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে মেঘলা ও তার পরিবারকে ডেকে নেন পাবনার জেলা প্রশাসন। এসময় তাকে নগদ অর্থসহ ফুলেল শুভেচ্ছা দিয়ে এই সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়।
এসময় অন্যদের মধ্যে পাবনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জাহাঙ্গীর আলম, পাবনা প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক এবং দৈনিক আমারদেশ ও বাসসের পাবনা প্রতিনিধি জহুরুল ইসলাম, অর্থ সম্পাদক এবং আরটিভি ও নিউ নেশনের পাবনা প্রতিনিধি আবুল কালাম আজাদ, বাংলাটিভির পাবনা প্রতিনিধি এসএম আলম, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহারুল ইসলামসহ জেলা প্রশাসনের সকল কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষার্থী মেঘলা পাবনা সদর উপজেলার আতাইকুলা ইউনিয়নের মৌগ্রাম মহল্লার দিনমজুর কৃষক হাসমত মির্জা ও গৃহকর্মী মোছাঃ চায়না খাতুনের একমাত্র মেয়ে।নানা অভাব অনটন আর প্রতিকূলতার মধ্যদিয়ে মেঘলার বেড়ে উঠা। শিক্ষা জীবনে কখনই স্বাচ্ছন্দ, পছন্দের জামা কাপড় প্রয়োজনীয় বই খাতা না পেলেও সে দমে থাকেনি।
দারিদ্রতার মধ্যদিয়েই পাবনার আঠঘরিয়া উপজেলার একদন্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে জিপিএ+৫ এবং সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ থেকে এইচএসসি তে জিপিএ+৫ পেয়ে সাফল্যের সাথে সে দিনাজপুর মেডিক্যাল কলেজে চান্স পেয়েছে। তার এই সাফল্যে গর্বিত পিতামাতা ও এলাকাবাসি।
কিন্তু মেডিক্যালে চান্স পেলেও কিভাবে ভর্তিসহ পড়াশোনার খরচ বহন করবে এমন চিন্তা ভর করে মেঘলা ও তার পরিবারের মাথায়। বিভিন্ন গণমাধ্যমে তাদের এই চিন্তা ও আর্থিক দূরাবস্থার কথা প্রচার করলে নজরে আসেন পাবনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মফিজুল ইসলামের। তিনি তাৎক্ষনিক মেঘলার বিষয়ে খোঁজ নেয়ার জন্য পাবনা সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা নাহারুল ইসলামকে দায়িত্ব দেন। আজ সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেঘলা ও তার বাবা মাকে জেলা প্রশাসকের কাযালয়ে উপস্থিত করেন।
জেলা প্রশাসক মেঘলাকে তার সাফল্যের জন্য ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। এসময় জেলা প্রশাসক তার ও তার পরিবারের সার্বিক বিষয়ে খোজ খবর নেন। ভর্তিসহ প্রাথমিক খরচাদি মেটানোর জন্য মেঘলাকে নগদ বিশ হাজার টাকা প্রদান করেন এবং তার মেডিক্যালে পড়াশোনার যাবতীয় খরচাদি পাবনার জেলা প্রশাসন বহন করবেন বলে আশ্বাস দেন।
জেলা প্রশাসকের এমন আশ্বাসে শিক্ষার্থী মেঘলা আবেগ আব্লুত হয়ে বলেন, জীবনেও আশা করিনি এমন সহযোগিতা পাবো। জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নিকট কৃতজ্ঞ থাকবো। এখন একটু চিন্তামুক্ত হয়ে পড়তে পারবো।এটা আমার জীবনে অনেক বড় উপহার।
মেঘলার বাবা ও মা বলেন, আজ মনটা ভালো লাগছে। ডিসি স্যার আমার মেয়ের পাশে দাঁড়ালেন। এর চেয়ে আর কি চাই।
এসময় পাবনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম উপস্থিত সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে বলেন, মেঘলা তার পরিশ্রমের ফল পেয়েছে। সে এখন দেশের সন্তান। তার দায়িত্ব আমাদের সকলের। গণমাধ্যমে তার খবর দেখে তিনি সদর উপজেলা ইউএনও নাহারুল ইসলামকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন তাকে খুজে বের করতে।
আজ থেকে মেঘলার মেডিক্যাল পড়ার সকল দায়িত্ব পাবনা জেলা প্রশাসনের। তার যেন কোন কষ্ট পেতে না হয় এদিকে তারা সার্বক্ষণিক খেয়াল রাখবেন। মেঘলা বড় হয়ে নামকরা চিকিৎসক হয়ে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াবে এমনটাই প্রত্যাশা সবার।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি জহুরুল ইসলাম / পাবনা। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.