পরনের কাপড় ছাড়া বাঁচেনি কিছুই, আগুনে পুড়ে ঘরের শেষ চিহ্নটুকুও আর নেই

 

রংপুর প্রতিনিধি: আগুনে পুড়ে ঘরের শেষ চিহ্নটুকুও আর নেই। যেখানটায় ঘর ছিল তার এক কোনায় পড়ে আছে আধা পোড়া চাল। এর পাশেই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে ঝলসানো লেপ তোশক। পুড়ে যাওয়া ঘরের কাঠকয়লা হাতে নির্বাক বসে আছেন ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধা ফজিলা বেগম।
ফজিলা বেগমের বাড়ি রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়নের পাঁচানী গ্রামে। সেমবার (১৩ মে) রাত সাড়ে ৮টার দিকে তার বাড়ি আগুনে পুড়ে যায়।
মঙ্গলবার (১৪ মে) সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, আগুনে পুড়ে দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া টিনগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। পোড়া বাড়ি দেখতে ভিড় করছে স্থানীয় লোকজন। আর ঘরের মেঝেতে হাতে কাঠকয়লা নিয়ে ফুপিয়ে কাঁদছে ফজিলা বেগম।
ফজিলা বেগম বলেন, সোমবার দুপুরে বাড়িতে তালা দিয়ে স্বামী আতিয়ার রহমানসহ ভাইয়ের বাড়িতে যান তিনি। সেখানে থাকা অবস্থায় রাত ৯টার দিকে খবর পান তাঁর বাড়িতে আগুন লেগেছে। দ্রুত বাড়ি এসে দেখেন দুটি থাকার ঘর, রান্নাঘরসহ সব পুড়ে শেষ হয়ে গেছে। স্বামীকে নিয়ে এই বাড়িতে থাকতেন তিনি। এখন কোথায় যাবেন দিশা খুঁজে পাচ্ছেন না।
বিলাপ করে ফজিলা বলেন, ‘৪৫ বছর ধরে একনা একনা করি সাজানো সংসার আগুনোত পুড়ি শ্যাষ হয়া গেলো। পরনের কাপড় ছাড়া আর কিছুই বাচেঁ নাই। শ্যাষ জীবনোত মোর একি হয়া গেলো।’
ফজিলার স্বামী আতিয়ার রহমান বলেন, আমার বাড়িত কারেন্ট নাই, বাড়ির চুলাতও আগুন জ্বালানো হয় নাই তাহলে হঠাৎ কোটে থাকি আগুন ধরিল। মোর মনে হয় ‘কেউ শত্রুতা করি আগুন লাগে দিছে।’
ফজিলা বেগমের পরিবার এখনো কোনো সরকারি সহায়তা পাননি। হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মজুমদার আলী বলেন, ফজিলা ও আতিয়ার খুবই গরিব মানুষ। দিনমজুর দিয়ে সংসার চালান। আগুনে তাদের বাড়ি পুড়ে গেছে। উপজেলা চেয়ারম্যান সকালে পোড়া বাড়ি ঘুরে গেছেন।  বিষয়টি ইউএনও স্যারকে জানাইছি সহায়তার জন্য।
ইউএনও রুবেল রানা বলেন, অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের খোঁজ খবর নিয়েছি। তাদেরকে উপজেলায় আসতে বলা হয়েছে। টিনসহ সরকারি সহায়তা পাবেন তারা।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর রংপুর প্রতিনিধি এস এম রাফাত হোসেন বাঁধন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.