নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীর পবা উপজেলার বাগধানী এলাকায় পৈত্রিক জমি জোরপূর্বক দখলের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী দিনার হোসেন আজ ১৬ জুন ২০২৫ তারিখে পবা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন, যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে—বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর পৈত্রিক ২১ শতক জমির মালিকানা বুঝে নিতে গেলে স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা তা দখলে নিয়ে স্থাপনা ও দোকানঘর নির্মাণ করেছেন।
অভিযোগে দাবি করা হয়, রাজশাহী-তানোর সড়কের পাশে মূল্যবান এই জমিটি গত কয়েক বছর ধরে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় জবরদখলে রাখা হয়েছে। জমির একাংশে দোকানঘর তৈরি করে ভাড়া আদায়ের পাশাপাশি ভবিষ্যতে দখল পাকাপোক্ত করার লক্ষ্যে সেখানে নির্মাণকাজও শুরু করা হয়েছে।
অভিযোগকারী দিনার হোসেন জানান, ১৯৯৪ সালে তার বাবা আব্দুল হালিম নার্গিস সাদিয়া বেগমের কাছ থেকে এই ২১ শতক জমি ক্রয় করেন। তবে বাবা ২০১৫ এবং মা ২০২৪ সালে মৃত্যুবরণ করার পর জমির দখল নিতে গেলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা বাঁধা দেয়। অভিযোগে চারজনের নাম উল্লেখ থাকলেও অভিযুক্তদের পেছনে আরও প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতৃত্বের সম্পৃক্ততার অভিযোগও রয়েছে।
অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন—মো. আজাদ (৩২), সিদ্দিকুর রহমান (৩২), আজিবর রহমান (৫৫), নুরুল আলী নুরু (৩৭) এবং শাহিন আলী (২৮)। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা পেশিশক্তি এবং রাজনৈতিক পরিচয়ের জোরে জমিটি দখলে রেখেছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিবাদমান জমির সামনের অংশে কয়েকটি দোকান চালু রয়েছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী মেহেদী হাসান জানান, হিমেল ও মুসলেম হাজীর নেতৃত্বে দখলদাররা এখানে দোকান ও স্থাপনা নির্মাণ করে বছরের পর বছর ভাড়া আদায় করছে।
ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, জমিটি বাগধানী মৌজার অন্তর্গত, যার খতিয়ান নং ১৫৫ এবং দাগ নং ১৩৭। পানি উন্নয়ন বোর্ড এই জমির ৮ শতক অধিগ্রহণ করলেও এখনো সেই অংশ সরকারের নামে মিউটেশন হয়নি, ফলে ভুক্তভোগী পরিবারই পুরো ২১ শতক জমির খাজনা দিচ্ছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত মো. আজাদ বলেন, “আমাদের কাছে জমির কোনো কাগজপত্র নেই। এলাকার লোকজনের পরামর্শে সেখানে মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল। তবে যদি অভিযোগকারীদের বৈধ কাগজপত্র থাকে, তারা জমি বুঝে নিক।” তিনি হুমকি-ধামকির অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং রাজনীতি প্রসঙ্গে বলেন, “আমি আওয়ামী লীগকে ভোট দিই, এটাকেই দোষ বলা হচ্ছে।”
তবে মসজিদ নির্মাণের যৌক্তিকতা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে সন্দেহ রয়েছে।
তারা জানান, বাগধানী এলাকায় এরইমধ্যে শাহী জামে মসজিদ নামে একটি বৃহৎ মসজিদ রয়েছে যেখানে শত শত মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। এমন পরিস্থিতিতে ডোবার মধ্যে নতুন করে মসজিদ নির্মাণের চেষ্টা এবং জমি দখল প্রশ্নবিদ্ধ বলে মনে করছেন অনেকে।
দিনার হোসেন জানান, জমির মালিকানা প্রমাণে তিনি জেলা প্রশাসকের দপ্তরে খারিজ আবেদনও করেছেন, যার রেফারেন্স নম্বর ৭১১/৯-১/২০১৭-১৮। মামলা ও খতিয়ান সংশ্লিষ্ট তথ্য তদন্তাধীন রয়েছে বলে থানা সূত্রে জানা গেছে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি ইফতেখার আলম (বিশাল) / রাজশাহী। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.