শরীয়তপুর প্রতিনিধি: পদ্মা নদীতে প্রবল স্রোতের কারণে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের মাঝিরঘাট এলাকায় আবারও ধসে পড়েছে ‘কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড’ বাঁধের প্রায় ২০০ মিটার অংশ।
ঈদুল আজহার দিন শনিবার (৭ জুন) সকাল থেকে শুরু হওয়া ভাঙন সোমবার (৯ জুন) পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে ২০০ মিটার এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
এতে অন্তত পাঁচ শতাধিক বসতবাড়ি, একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং দোকানপাট ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে।
পাউবো ও স্থানীয় সূত্র জানায়, পদ্মা সেতু প্রকল্পের আওতায় ২০১০-১১ সালে পদ্মা সেতু থেকে মাঝিরঘাট হয়ে পূর্ব নাওডোবা আলম খাঁরকান্দি জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড’ বাঁধ নির্মাণ করে সেতু কর্তৃপক্ষ। এতে ব্যয় হয় ১১০ কোটি টাকা।
গত বছরের নভেম্বর মাসে একই এলাকায় প্রায় ১০০ মিটার বাঁধ ধসে পড়ে, যার পুনর্নির্মাণে পাউবো ২ কোটি ৮৭ লাখ টাকা ব্যয় করে। তবে সংস্কার করা সেই এলাকাসহ আরও দুটি স্থানে এবার প্রায় ২০০ মিটার বাঁধ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
বর্তমানে ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে, পূর্ব নাওডোবার নাওডোবা-পালেরচর সড়ক, মহর আলী মাদবরকান্দি, আলম খাঁরকান্দি, ওছিম উদ্দিন মাদবরকান্দি এবং কালাই মোড়লকান্দি গ্রামের অন্তত ৫০০টিরও বেশি বসতবাড়ি। অনেক বাসিন্দা ইতোমধ্যে নিজেদের ঘরবাড়ি, গাছপালা সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছেন। এছাড়া মঙ্গল মাঝিরঘাট বাজারের দুই শতাধিক দোকানপাট ও কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে সরাসরি ঝুঁকিতে।
ভাঙনকবলিত এলাকার একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী বিটিসি নিউজকে জানান, ঈদের দিন সকালে হঠাৎ বিকট শব্দ শুনে নদীর পাড়ে ছুটে গিয়ে দেখি, ঘরের সামনের বাঁধ পদ্মায় তলিয়ে গেছে। তাই ঘর ভেঙে সরিয়ে নিচ্ছি। পরিবার নিয়ে কোথায় যাব বুঝতে পারছি না। আমরা স্থায়ী বাঁধ চাই।
পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন খান বিটিসি নিউজকে বলেন, যদি দ্রুত স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ না করা হয়, তবে পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের ৭০ ভাগ নদীগর্ভে চলে যাবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, দোকানপাট ও ঘরবাড়ি রয়েছে চরম ঝুঁকিতে।
জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাবেরী রায় বিটিসি নিউজকে জানান, ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। তাদের ঘর নির্মাণে টিন ও আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। প্রশাসন সব ধরনের সহায়তা দেবে।
শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী দেওয়ান রকিবুল হাসান বিটিসি নিউজকে বলেন, ভাঙনরোধে জরুরি ভিত্তিতে আপদকালীন কাজ শুরু করে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি স্থায়ী প্রকল্পের কাজও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
শরীয়তপুর পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ তারেক হাসান বিটিসি নিউজকে বলেন, পদ্মা নদীর প্রবল স্রোতের কারণেই ভাঙন শুরু হয়েছে। আপাতত জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে যাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বসতবাড়ি, দোকান ও ফসলি জমি রক্ষা পায়। স্থায়ী প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে এলাকাবাসী ভাঙন থেকে স্থায়ীভাবে রক্ষা পাবে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর শরীয়তপুরপ্রতিনিধিমো. রেজাউল করিম (রেজা)। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.