খুলনা ব্যুরো:“ন্যায্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নগরী খুলনা : সম্ভাবনা, দায়িত্ব এবং করণীয়” শীর্ষক দিনব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধন মঙ্গলবার (২০ মে)সকালে খুলনা জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্মেলনের উদ্বোধনী সেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।
জেলা প্রশাসক বলেন, “বাসযোগ্য খুলনা গড়ে তুলতে এখনই কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার সময়। খুলনার বিকাশে পরিকল্পিত উন্নয়নের অভাব অতীতে ছিল, কিন্তু আর দেরি করার সুযোগ নেই। ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন করে জলাশয় ভরাট এবং অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণ বন্ধে কঠোরতা প্রয়োজন।” তিনি আরও বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের সার্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় এনে খুলনার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন হতে হবে।
সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও প্রযুক্তিবিদ্যা স্কুলের ডিন অধ্যাপক ড. আশরাফুল আলম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক ড. তুষার কান্তি রায়। অতিথি বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন খুলনা সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবির উল জব্বার এবং খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোঃ তানভীর আহমেদ।
সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আয়োজক সংগঠন ওয়ার্ক ফর বেটার বাংলাদেশ-এর নির্বাহী পরিচালক সাইফুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, “অন্তর্ভুক্তিমূলক নগর ব্যবস্থাপনায় জনগণের অংশগ্রহণ এবং দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বয় অপরিহার্য।”
এই সম্মেলনের আয়োজনে যুক্ত ছিল খুলনা সিটি করপোরেশন, খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ), খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ, খুলনা ওয়াসা, ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো), পরিবেশ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ প্ল্যানার্স এবং বেসরকারি সংস্থা বেলা, সিরাক বাংলাদেশ, আরডিআরসি, সিয়াম ও বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটি।
সম্মেলনের বিভিন্ন সেশনে আলোচিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর মধ্যে ছিল ন্যায্য নগরে উত্তরণ এবং খুলনার প্রেক্ষাপট,যুব সম্পৃক্ততায় অন্তর্ভুক্তিমূলক নগর পরিকল্পনা,সকলের জন্য বাসযোগ্য নগরী ও নাগরিক সেবা নিশ্চিতকরণ,জলবায়ু বিপর্যয় মোকাবিলা এবং জলসংকট, কর্মসংস্থান: সমস্যা ও সমাধান ও ভবিষ্যৎ খুলনা নগর কেমন হওয়া উচিত।
বিশেষজ্ঞ ও অংশগ্রহণকারীরা খুলনার দ্রুত পরিবর্তনশীল নগর বাস্তবতায় সামাজিক অসমতা, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সুবিধা বঞ্চনা, জলবায়ু দুর্যোগ, পানির লবণাক্ততা, সুপেয় পানির সংকট এবং অপরিকল্পিত নগরায়নকে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত করেন। পদ্মা সেতু চালুর পর খুলনার সাথে যোগাযোগ বৃদ্ধি পাওয়ায় নগর রূপান্তরের গতি আরও বেড়েছে।
সম্মেলনে বক্তারা বলেন, “নগর ব্যবস্থাপনায় জনগণের চাহিদা ও অংশগ্রহণই হচ্ছে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের মূল ভিত্তি। খুলনার ভবিষ্যৎ গড়তে হলে এই মুহূর্তে অংশীজনদের সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে।”
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর খুলনা ব্যুরো প্রধান মাশরুর মুর্শেদ। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.