BTC News | বিটিসি নিউজ

আজ- রবিবার, ২রা নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৭ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১১ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

আজ- ২রা নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

নির্বাচনের আগে গণভোট অপ্রয়োজনীয় ও অযৌক্তিক : মির্জা ফখরুল

নির্বাচনের আগে গণভোট অপ্রয়োজনীয় ও অযৌক্তিক : মির্জা ফখরুল

বিশেষ (ঢাকা) প্রতিনিধি: জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট অপ্রয়োজনীয় ও অযৌক্তিক বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে দলটির চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। সেক্ষেত্রে নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগে প্রস্তাবিত গণভোট অনুষ্ঠান সম্ভব নয়। সময় স্বল্পতা, নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বিপুল অংকের ব্যয় এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ ব্যাপক লোকবল নিয়োগ—এই কারণে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো বিশাল আয়োজনের বিবেচনায় নির্বাচনের পূর্বে গণভোট অনুষ্ঠান অপ্রয়োজনীয়, অযৌক্তিক এবং অবিবেচনা প্রসূত।’

তিনি বলেন, ‘যে সকল বিষয়ে ভিন্নমত/নোট অব ডিসেন্টসহ ঐকমত্য হয়েছে, তার উল্লেখ না রেখে এবং দীর্ঘ আলোচনায় যে সব প্রসঙ্গ আলোচনায় আসেনি তা অন্তর্ভুক্ত করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের অন্য সকল সুপারিশ অগ্রহণযোগ্য বিধায় আমারা একমত হতে পারছি না। আমরা অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, এই সকল সুপারিশ কেবল জাতিকে বিভক্ত করবে, ঐক্যের বদলে অনৈক্য সৃষ্টি করবে। মনগড়া যেকোনো সংস্কার প্রস্তাব গ্রহণ করলে জাতীয় জীবনে দীর্ঘ মেয়াদে অকল্যাণ ডেকে নিয়ে আসতে পারে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বলা হয়েছে, সংবিধান সংস্কার পরিষদ প্রথম অধিবেশন শুরুর তারিখ হতে ২৭০ পঞ্জিকা দিবসের মধ্যে যদি সংস্কার সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হয় তাহলে গণভোটে অনুমোদিত সংবিধান সংস্কার বিলটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হবে, যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও হাস্যকর। জাতীয় সংসদে অনুমোদনের পর যেকোনো বিল রাষ্ট্রপতির অনুমোদনপ্রাপ্তির পরই কেবল আইনে পরিণত হয়। স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই এবং তা গণতান্ত্রিক রীতি ও সংসদীয় সার্বভৌমত্বের পরিপন্থী।’

তিনি বলেন, ‘বিকল্প-২ প্রস্তাবে জুলাই সনদ আদেশের বিষয়টি বিল আকারে না দিয়ে সংবিধান সংস্কার সম্পর্কিত প্রস্তাবসমূহ সরাসরি গণভোটে উপস্থাপন করা হবে মর্মে উল্লেখ করা হয়েছে। এক্ষেত্রেও ঐকমত্য কমিশনের আলোচনাকালে বিভিন্ন বিষয়ে রাজনৈতিকদলসমূহ কর্তৃক প্রদত্ত মতামত, ভিন্নমত ও নোট অব ডিসেন্ট গণভোটে উপস্থাপনের সুযোগ রাখা হয়নি।’

ফখরুল বলেন, ‘দফাসমূহের বিপরীতে স্বাক্ষরিত জুলাই জাতীয় সনদে অন্তর্ভুক্ত রাজনৈতিক দলসমুহের মতামত, ভিন্নমত, নোট অব ডিসেন্ট উল্লেখ করা হয়নি। অর্থাৎ ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব এবং সুপারিশ একপেশে ও জবরদস্তিমূলকভাবে জাতির ওপরে চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। তাহলে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, দীর্ঘ প্রায় ১ বছরব্যাপী সংস্কার কমিশন ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলসমূহের দীর্ঘ ধারাবাহিক আলোচনা ছিল অর্থহীন, অর্থ ও সময়ের অপচয়, প্রহসনমূলক এবং জাতির সঙ্গে প্রতারণা।’

তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর ভিন্নমত থাকবে এটাই স্বাভাবিক এবং সে কারণে সংলাপের প্রয়োজন দেখা দিয়েছিল। কিন্তু ঐকমত্য কমিশন ভিন্নমত পোষণে রাজনৈতিক দলগুলোর গণতান্ত্রিক অধিকারকে আমলেই নেয়নি।’

সংস্কারের বিএনপির ৩১ দফা, ২৭ দফা এবং ভিশন-২০৩০ কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপি ও ফ্যাসিবাদ বিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সংশ্লিষ্ট সকল রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন, ব্যক্তি ও শক্তিসমূহ জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী সার্বিক সংস্কারের প্রতিশ্রুতি ও অঙ্গীকার ব্যক্ত করে আসছে। সুতরাং, রাষ্ট্র কাঠামোর প্রকৃত গণতান্ত্রিক সংস্কার বিএনপির অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক এজেন্ডা।’

তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দীর্ঘ ধারাবাহিক আলোচনায় কিছু কিছু বিষয়ে কিছু কিছু রাজনৈতিক দলের ভিন্নমত/নোট অব ডিসেন্ট সহকারে ঐকমত্য হয়েছে। জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫ যেভাবে প্রণীত হয়েছে, তাতে নোট অব ডিসেন্টের অংশে এই বক্তব্য স্পষ্ট উল্লেখ আছে যে, ভিন্নমত/নোট অব ডিসেন্ট প্রদানকারী কোন রাজনৈতিক দল বা জোট তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লেখপূর্বক যদি জনগণের ম্যান্ডেট লাভ করে, তাহলে তারা সেমতে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে।’

এ প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব আরো বলেন, ‘এখানে উল্লেখ্য যে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সকল অনুষ্ঠান বিটিভিসহ অন্যান্য ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় সম্প্রচারিত হয়েছে, যা সমস্ত জাতি প্রত্যক্ষ করেছে। অতঃপর গত ১৭ অক্টোবর জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় এক ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আমরা কেবল মাত্র আলোচনার মাধ্যমে প্রণীত সনদের অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করেছি। কিন্তু উক্ত দিনে জুলাই জাতীয় সনদ এর চূড়ান্ত কপি আমাদের সামনে উপস্থাপন করা হয়নি।’

তিনি বলেন, ‘পরবর্তীতে প্রিন্টেড পুস্তক হিসেবে জুলাই জাতীয় সনদের কপি আমরা হাতে পাওয়ার পর আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে যে, ঐকমত্যের ভিত্তিতে সম্মত কয়েকটি দফা আমাদের অগোচরে পুনরায় সংশোধন করা হয়েছে। যেমন-শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি বিভিন্ন সরকারি/বেসরকারি অফিসে টাঙ্গানো সংক্রান্ত বিধান [অনুচ্ছেদ ৪ (ক)] বিলুপ্ত করার বিষয়টি সনদে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। যদিও প্রায় সকল রাজনৈতিক দল সম্মতিপত্র দিয়েছে। আর সংবিধানের ১৫০(২) অনুচ্ছেদ (পঞ্চম, ষষ্ঠ, সপ্তম তফসিল) পুরোপুরি বিলুপ্ত করার বিষয়ে ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবের বিষয়ে প্রায় সকল রাজনৈতিক দল সম্মতি প্রকাশ করলেও অগোচরে সেটা চূড়ান্ত সনদে সংশোধনী আনা হয়েছে।’

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ (ঢাকা) প্রতিনিধি মো: লোকমান হোসেন পলা। #

এইরকম আরও খবর

সর্বশেষ খবর

ব্রেকিং নিউজ
চীনের ‘এক দেশ, দুই ব্যবস্থা’ প্রত্যাখ্যান করল তাইওয়ান বয়স্কদের জন্য এক হাজার ক্লাব তৈরি করছে সরকার : সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা ৯৮ শতাংশ ভোটে তানজানিয়ার প্রেসিডেন্ট সামিয়া হাসান আজ ৫২-তে পা সাবেক বিশ্বসুন্দরী ঐশ্বরিয়া রাইয়ের বিয়ে মানেই জীবনের একটি পার্ট শেষ : পূজা স্কাই স্টেডিয়াম নিয়ে বিভ্রান্তি, সৌদি আরবের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই একটি দল রাজনৈতিক স্বার্থে ইসলামের ক্ষতি করতে চায় : সালাহউদ্দিন আহমদ মৎস্যজীবীদের শ্রমের প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতিকেও মূল্যায়নের আওতায় আনতে হবে : প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা নির্বাচিতদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে সরকার : ধর্ম উপদেষ্টা মোরেলগঞ্জে ঘষিয়াখালীতে বিএনপির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত