নরেন্দ্র মোদির মত “ ডাকাতদের “ ভয় পান না দিদি মমতা

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক:  ভারতের আসন্ন লোকসভা নির্বাচনকে ঘিরে জমে উঠেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লড়াই। প্রতিদিনই একজন অন্যজনকে লক্ষ্য করে কথার তীর ছুড়ছেন।

গতকাল রোববার ময়না গুড়ির চূড়া ভাণ্ডারের এক জনসভা থেকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও বিজেপি নেতা নরেন্দ্র মোদিকে লক্ষ্য করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘দিদির সারা শরীর মারে ক্ষতবিক্ষত। আপনাদের মতো ডাকাতদের দিদি ভয় পায় না। দিদি ডাকাতদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। এত আন্ডার এস্টিমেট করার কোনো কারণ নেই।

বলাবাহুল্য মোদির এক বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে এই মন্তব্য করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এর আগে পশ্চিমবঙ্গের এক সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে মোদি বলেছিলেন, তার জনসভার এত ভিড় দেখলে নাকি দিদি ভয় পায়।

জবাবে মোদিকে পাল্টা আক্রমণ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘মোদি তো ভোটের সময় বসন্তের কোকিলের মতো আসেন। নাটক করেন।

বিজেপির প্রার্থীদের আক্রমণ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন,‘বিজেপি কোচবিহারে এক জন আর্মস ডিলারকে (অস্ত্র বিক্রেতা) প্রার্থী করেছে। জঞ্জাল বলে তাকে আমরা দল থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিলাম। তাকেই এখন বিজেপি কোলে তুলে নাচছে।

এর সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যোগ করেন , আসলে বিজেপির তো লোকই নেই। ওরা মানুষের জন্য কাজ করে না।

এর আগে  গতকাল রোববার কোচবিহারে রাসমেলার মাঠের সভা থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভিড়ের দিকে আঙুল তুলে বলেন, আপনারা যত মোদি মোদি করেন, একজনের ঘুম উড়ে যায়। জানেন তিনি কে? তিনি পশ্চিমবঙ্গের স্পিডব্রেকার দিদি। রাতে শান্তিতে ঘুমোতে পারছেন না তিনি।’

কেন ভয় পেয়েছেন দিদি, তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গকে দিদি ও ভাইপোর জুটি গুন্ডা, তোলাবাজ , অনুপ্রবেশকারীদের স্বর্গরাজ্য বানিয়ে তুলেছে।’

এর সঙ্গে তিনি যোগ করেন, বিজেপি ক্ষমতায় এলে এই রাজত্ব শেষ হয়ে যাবে, তাই দিদির এত ভয়!

এর আগে শিলিগুড়ির কাওয়াখালির সভা থেকেও ভয়ের কথা বলেছিলেন নরেন্দ্র মোদি। মাঠের ভিড় দেখে সে দিন প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, এই ভিড় দেখে দিদি ভয় পেয়ে যাবেন। এর আগে অন্য এক সভা থেকেও একইভাবে মমতাকে কটাক্ষ করেছিলেন মোদি।

আর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এসব বক্তব্যের জবাবে তৃণমূল নেতারা বলছেন, সভায় যতই জনসমাগম হোক, তাতে ভয়ে কিছু নেই। কারণ, এর অনেকটাই টাকা দিয়ে নিয়ে আসছে বিজেপি। এ দিন ফালাকাটার জনসভা থেকে এই একই অভিযোগ তুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তৃণমূলের অনেকেই বলছেন, তাই মোদির সভার লোক সংখ্যা দেখে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। তা ছাড়া, মমতার সভাতেও যথেষ্ট ভিড় হচ্ছে।

মমতা মোদি সরকারের পাঁচ বছরের খতিয়ান তুলে ধরে বলেন, ‘মোদির আমলে দু’কোটি চাকরি গিয়েছে। ১২ হাজার কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। বাংলার কৃষক কিন্তু ভাল আছেন। এক কোটি কর্মসংস্থানও হয়েছে।’

নোটবন্দির প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, ‘নোটবন্দির নামে জনগণের টাকা লুটে সেই টাকায় ক্যাডারদের রাস্তায় নামিয়ে ভোট কেনার চেষ্টা করছেন!’

মোদি থেকে অমিত শাহ, বিজেপির নেতারা বারবার পশ্চিমবঙ্গে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি বা এনআরসি চালুর কথা বলছেন।

জবাবে রোববারের সভা থেকে মমতা বলেন, ‘শুনে রাখুন, এখানে এনআরসি করতে দেব না।’

মোদির সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের কথা প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘জওয়ান মেরে জওয়ান প্রেম দেখাচ্ছে বিজেপি! সেনাবাহিনীর নামে মিথ্যে কথা বলছে।’

আর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির চৌকিদার প্রসঙ্গে মমতার বক্তব্য, ‘মোদি সাড়ে চার বছর বিদেশে ঘুরেছেন, ছ’মাস ধরে চৌকিদার সেজেছেন।

ভোটের পর চৌকিদারের চৌকি থাকবে, দার থাকবে না। কারণ, আমরা আসল চৌকিদার চাই। নকল চৌকিদার চাই না।#

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.