নরসিংদীতে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত বেড়ে-৪, আহত-৩০

 

নরসিংদী প্রতিনিধি: নরসিংদীতে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আরও একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় চারজন নিহতসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) সকালে সদর উপজেলার আলোকবালী ইউনিয়নের নেকজানপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এসময় তাহের নামের একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
নিহতরা হলেন- নেকজানপুর গ্রামের কটুমিয়ার ছেলে আমির হোসেন (৪৫) একই গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে আশরাফুল (২২), আব্দুল মনু মিয়ার মেয়ে খুশি বেগম (৫০) ও অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও একজন।
এরা সবাই আলোকবালী ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দীপু সমর্থক বলে জানা গেছে
আহতরা হলেন- খায়রুল (২৮), বাদশা মিয়া (৩২), আবুল খায়ের (৪০), হানিফ (৪৫), আনিস মিয়া (৪২), আব্দুল লতিফ (৪৫), আহসানুল্লহ (২৬), শওকত মিয়া (২৪), আরিফ (২২), সনিয়া (১৭), মমিন আলী (৫৫), মাসুমা (২০), মকবুল হোসেন, আকাশ (১৪), জিয়াউর (৩৭), হাসেম (৪৮), মিজান ও বুলু (৫৫)। তাদের ঢাকাসহ নরসিংদীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আলোকবালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দীপুর সঙ্গে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসাদুল্লাহর দ্বন্দ্ব চলে আসছিলো।
এর জেরে কয়েকদিন আগে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়। নির্বাচনে দেলোয়ার হোসেন দীপু পুনরায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান। অন্যদিকে অ্যাডভোকেট আসাদুল্লাহ স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েও দলীয় নির্দেশে মনোনয়ন প্রত্যাহার করেন। এনিয়ে বেশ কয়েকদিন দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিলো।
বৃহস্পতিবার সকালে আসাদুল্লাহর সমর্থকরা টেঁটা, বল্লম ও অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে নেকজানপুর গ্রামের দীপু চেয়ারম্যানের সমর্থকদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। পরে উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় ঘটনাস্থলে তিনজন ও ঢাকায় নেওয়ার পথে অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও একজন মারা যান। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধসহ কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আলোকবালী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মামুন হাসান বলেন, ঘটনার ভয়াবহতা দেখে তাৎক্ষণিক পুলিশকে জানানো হয়। কিন্তু পুলিশ সঠিক সময়ে আসেনি। উল্টো পুলিশ আসাদুল্লাহর বাড়ি পাহারা দেয়। কিন্তু আমাদের বাঁচাতে আসেনি।
সংঘর্ষে আহত মমিন আলী বলেন, সকালে গুলির শব্দ শুনে বাসা থেকে বের হয়ে দেখি কাইয়ুম ও রিপনের নেতৃত্বে শতশত লোক অস্ত্র নিয়ে বিভিন্ন বাড়িতে হামলা চালায়। এসময় অনেক বাড়িঘর ভাঙচুর ও আগুন দেন তারা।
আলোকবালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দীপু বলেন, নির্বাচনে আমাকে সমর্থন জানিয়ে মনোনয়ন তুলে নিয়েছিলেন আসাদুল্লাহ। ভেবেছিলাম তারা আমার সঙ্গে মিলে গেছে। কিন্তু তারা নানা অজুহাতে আমার সমর্থকদের ওপর হামলা চালায়। সর্বশেষ চারজনকে গুলি করে হত্যা করে।
এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসাদউল্লাহ বলেন, সংঘর্ষে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আমি দীপুকে সমর্থন জানিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছি। কিন্তু দুই মেম্বার সমর্থকরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে আমির হোসেন নামের আমার এক আত্মীয়ও মারা যান।
নরসিংদী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান বিটিসি নিউজকে বলেন, ঘটনাস্থলে তিনজন ও ঢাকায় নেওয়ার পথে একজনের মৃত্যু হয়েছে। মরদেহ নরসিংদী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নরসিংদী প্রতিনিধি মো. গোলাম মোস্তফা মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.