নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীতে রবিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টি সোমবার বিকাল ৪টা পর্যন্ত থেমে থেমে বৃষ্টি চলছেই। বৃষ্টিতে পাড়া মহল্লার রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। তার সাথে যোগ হয়েছে ড্রেনের নোংরা পানি। ফলে চরম বিপেিক পড়েছেন নগরবাসী।
আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার জানিয়েছে, রবিবার রাজশাহীতে ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টির রেকর্ড করা হয়েছে। আর এই পরিমাণ বুষ্টিতেই রাজশাহী নগরীর বিভিন্ন পাড়া মহল্লার রাস্তা ঘাট ডুবে গেছে। বিশেষ করে শহরের মধ্যাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলে হাঁটুপানি জমে গেছে। চারিদিকে বুষ্টির পানি কেবল থৈ-থৈ করছে।
রাজশাহী শহরের সড়ক ঘেঁষে থাকা ড্রেনের পয়োনিষ্কাশনের নোংরা আর বৃষ্টির পানিতে একাকার হয়ে গেছে পুরো রাজপথ। আর নিচু এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়া একটু বৃষ্টি হলেই এ অচলাবস্থার সৃষ্টি হয় দীর্ঘ কয়েক বছর যাবত। বছরের পর বছর ধরে চলছে এই দুর্ভোগ। রাজশাহী শহরের রাস্তা-ঘাট, যোগাযোগ ব্যবস্থা ও সৌন্দর্য বর্ধনে অভ‚তপ‚র্ব উন্নয়ন হলেও বর্ষণমুখর দিনগুলোতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় তা ম্নান হচ্ছে।
এত উন্নয়ন হলেও শহরের বিভিন্ন এলাকায় ‘জলজট’ ও জলাবদ্ধতা নিরসন হয়নি আজও। তবে নগরবাসীর অনেকেই দূষছেন প্রভাবশালী এক শ্রেণীর মানুষদের। কারন পুকুরের শহর রাজশাহীতে বড় বড় পুকুর দীঘি, মইিঠ্যাল ভরাট করেছে তারা। সেই সব পুকুরের উপর এখন দাঁড়িয়ে আছে বড় বড় অট্টালিকা।
এবার বর্ষায় বৃষ্টি না হলেও শরতের শুরু থেকেই প্রতিদিন বৃষ্টি হচ্ছে রাজশাহীতে। তাই জলজট নিয়েও দুর্ভোগ কাটছে না মহানগরবাসীর। এত এই অল্প সময়ের বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে বিভিন্ন এলাকায়।
বিশেষ করে মহানগরের হেতেম খাঁ, সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট, গণকপাড়া, রাণীনগর, হাদির মোড়, তালাইমারী মোড়, শিরোইল মাস্টারপাড়া, কাদিরগঞ্জ, বর্ণালী মোড়ের পেছনে, লক্ষীপুর, ঝাউতলা, ভাটাপাড়া, কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানার সামনে, রাজশাহী পর্যটন মোটেল রোড, সপুরা গোরস্থানের মোড় থেকে উপশহর মোড়, গৌরহাঙ্গা রেলগেইট, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট মোড়, শালবাগান, মালদাহ কলোনিসহ বেশ কিছু এলাকায় বৃষ্টি মানেই অবর্ণনীয় দুর্ভোগ।
এছাড়া বৃষ্টি হলেই রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়, পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়, কোর্ট চত্বরে জমেছে হাঁটুপানি। সকাল থেকে গুরুত্বপ‚র্ণ এই দপ্তরগুলোয় পানি মাড়িয়ে কর্মকান্ড পরিচালনা করতে হয়েছে সংশ্লিষ্ট সবাইকেই বৃষ্টি হলেই রাজশাহী শহরের অনেক রাস্তায় পানি জমে যায়। তবে বৃষ্টি থামার ৩/৪ ঘণ্টার মধ্যেই এসব এলাকার সড়কের পানি নেমে যায়। কিন্তু বর্তমানে প্রায় প্রতিদিন থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। পানি একদিক দিয়ে নামছে আবার আরেক দিক দিয়ে জমছে। ডুবছে সড়ক। আর নিচু এলাকার পানি নামতে এক থেকে দুই সপ্তাহ লেগে যাচ্ছে।
গুরুত্বপূর্ণ প্রধান সড়কে তাই জলজটের কারণে যানজটও লেগে থাকছে। এরপর সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে অনেক এলাকায় ড্রেন পরিষ্কার কার্যক্রম চলছে। সকাল হলেই পয়োনিস্কাশন বর্জ্য সড়কের ওপরে তুলে রাখা হচ্ছে।
এরপর যখন বৃষ্টি হচ্ছে তখন সেই দুর্গন্ধময় বর্জ্য আর বৃষ্টির পানি মিলেমিশে একাকার হয়ে যাচ্ছে। সেই পানি মাড়িয়ে চলাচল করায় অনেকে জটিল চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। ওই নোংরা পানি মাড়িয়ে মসজিদে গিয়ে অনেকে নামাজও আদায় করতে পারছেন না। এর মধ্যে আবার কিছু কিছু এলাকায় উন্নয়ন কাজ চলছে। তাই সেগুলোতে দুর্ভোগের মাত্রা আরও বেশি।
রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক রাজীব খান বলেন, গত তিনদিন থেকেই রাজশাহীতে বৃষ্টি হচ্ছে। তবে রবিবার ও সোমবার বৃষ্টির পরিমাণ বেশি। গত শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাজশাহীতে তিন মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এরপর শনিবার (২২ সেপ্টেম্বর) বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে ৫ দশমিক ৮ মিলিমিটার। রবিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত রাজশাহীতে ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টির রেকর্ড করা হয়েছে।
আকাশে মেঘ রয়েছে তাই বৃষ্টির এই পরিমাণ আরও বাড়বে বলে জানান, আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের এই কর্মকর্তা।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি মো.মাসুদ রানা রাব্বানী / রাজশাহী। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.