টাঙ্গাইল প্রতিনিধি:টাঙ্গাইলে যমুনা ও ঝিনাই নদীর পানি সামান্য কমলেও বাড়ছে অন্যান্য নদ-নদীর পানি। ফলে জেলায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। গেল ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি ৩ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, ঝিনাই নদীর পানি ৩ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৯৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে ও ধলেশ্বরী নদীর পানি ৫ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ২৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যমুনার ধু ধু বালু চরে এখন যে দিকে চোখ যায়, শুধু পানি আর পানি। কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। জেলার পাঁচটি উপজেলার ৩৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
সোমবার (৮ জুলাই) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পানি বৃদ্ধির ফলে পুরো চরাঞ্চল ও প্রত্যন্ত গ্রামগুলো পানিতে কানায়-কানায় পরিপূর্ণ। এ ছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন সড়ক ভেঙে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এতে অসংখ্য ঘরবাড়িতে পানি উঠেছে এবং অনেকের ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মন্দির, ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। চরাঞ্চলের অনেকে নৌকায় বা স্বজনদের বাড়ি ও উঁচু জায়গাতে আশ্রয় নিয়েছেন।
অন্যদিকে জেলার ৫টি উপজেলায় ৪ হাজার ৬৬ হেক্টর জমির পাট, আউসশ, তিল ও সবজি বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। অধিকাংশ পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে। পানি দীর্ঘস্থায়ী হলে কৃষক ক্ষতির সম্মুখীন হবে বলে জানিয়েছেন কৃষি বিভাগ।
ভূঞাপুর উপজেলার গাবসারা ইউনিয়নের কালিপুর গ্রামের আবদুস ছবুর বিটিসি নিউজকে বলেন, ‘৩ থেকে ৪ দিন ধরে পানিবন্দি হয়ে আছি। ১২ জনের পরিবার, শিশু সন্তান ও বৃদ্ধদের নিয়ে চরম দুর্ভোগে রয়েছি। চরে সব জায়গায় পানি আর পানি। এ ছাড়া কাজকর্ম বন্ধ হয়ে গেছে। ঘরের খাবারও নেই, দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট। কোনো রকম খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করছি।’
একই গ্রামের আছর উদ্দিন বিটিসি নিউজকে বলেন, ‘বাড়িতে পানি, যাওয়ার কোনো জায়গা নেই। নৌকাতেই থাকতে হচ্ছে। নতুন পানিতে পোকা-মাকড়ের উপদ্রব বেড়ে গেছে। সবার মাঝে ভয় ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। তাদের অভিযোগ, কয়েকদিন ধরে পানিবন্দি থাকলেও এখনও কোনো ত্রাণ সহায়তা পাননি।’
এর আগে রোববার বিকেলে উপজেলার অর্জুনা পরিষদ মাঠে বন্যা কবলিত অসহায়দের মাঝে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে মানবিক সহায়তা সামগ্রী বিতরণ করেছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং জেলা প্রশাসন। এতে অতিথি ছিলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য ছোট মনির ও জেলা প্রশাসক মো. কায়ছারুল ইসলাম প্রমুখ।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মামুনুর রশীদ বিটিসি নিউজকে বলেন, ‘বন্যার্তদের মাঝে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, খাবার স্যালাইন বিতরণ চলমান রয়েছে। এ ছাড়াও পানিবন্দিদের তালিকা সম্পন্ন হয়েছে। অতিদ্রুত তাদের মাঝে ত্রাণ সহায়তা প্রদান করা এবং ভাঙন কবলিত রাস্তায় যাতায়াতের জন্য আপাতত বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে দেওয়া হবে।’
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর টাঙ্গাইল প্রতিনিধি লুৎফর রহমান উজ্জল। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.