নিজস্ব প্রতিবেদক: পাবনা জেলার ঐতিহ্যবাহী পদ্মকোল খালকে পুনরুজ্জীবিত ও দূষণমুক্ত করতে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গৃহীত হয়েছে একটি সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা। দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত ও দূষিত হয়ে পড়া এই খালকে আবারও প্রাণচাঞ্চল্য ফিরিয়ে দিতে প্রশাসন, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও স্থানীয় জনসাধারণের সম্মিলিত প্রচেষ্টা এখন দৃশ্যমান।
প্রায় ৩.৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও গড়ে ৫৫ মিটার প্রস্থের পদ্মকোল খাল একসময় পাবনাবাসীর পানি ব্যবস্থাপনার অন্যতম প্রধান উৎস ছিল। কিন্তু সময়ের বিবর্তনে খালটি হারাতে বসেছিল তার স্বকীয়তা। খালের দুই পাড়ে গড়ে ওঠে অবৈধ স্থাপনা—পাকা, আধাপাকা ও কাঁচা ঘরবাড়ি। খালের মধ্যে ফেলা হতে থাকে স্থানীয় হাট-বাজারের ময়লা আবর্জনা। ক্ষুদ্র ও বৃহৎ শিল্পকারখানার রাসায়নিক ও পয়ঃবর্জ্য খালটিকে করে তোলে মারাত্মকভাবে দূষিত ও বসবাসের অযোগ্য।
এই অবস্থার অবসান ঘটাতে জেলা নদী রক্ষা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পাবনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মফিজুল ইসলামের নেতৃত্বে গৃহীত হয় পদ্মকোল খাল পুনরুজ্জীবন কর্মপরিকল্পনা।
কর্মসূচির অংশ হিসেবে খালের দুই পাড় থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, কচুরিপানা ও আবর্জনা অপসারণ এবং খালে রাসায়নিক ও পয়ঃবর্জ্য নির্গমন বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। একইসাথে, ক্ষুদ্র শিল্পকারখানার বর্জ্য শোধনের জন্য ইটিপি (ETP) স্থাপন এবং নির্দিষ্ট স্থানে বর্জ্য অপসারণের ব্যবস্থাও গড়ে তোলা হয়েছে।
এই কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে, নভেম্বর মাসব্যাপী পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানো হয়। এই অভিযানে জেলা পরিষদ, পাবনা পৌরসভা, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, এবং আনসার ও ভিডিপি সহ বিডি ক্লিন, গ্রামীণ ব্যাংক এবং রেড ক্রিসেন্ট এর মত বেসরকারি সংস্থা ও স্থানীয় জনগণ অংশগ্রহণ করে। সব মিলিয়ে প্রায় ৬০০ এর বেশি স্বেচ্ছাসেবক এই মহৎ উদ্দেশ্যে একত্রিত হন।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম এই পুরো প্রক্রিয়ার নেতৃত্ব দেন এবং তিনি বলেন, “পদ্মকোল খাল আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অংশ। একে রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব।”
স্থানীয় নাগরিক সমাজ এবং পরিবেশবাদীরাও এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং খালের দীর্ঘমেয়াদী সুরক্ষা ও পরিবেশ রক্ষার জন্য নিয়মিত নজরদারির ওপর জোর দিয়েছেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি জহুরুল ইসলাম / পাবনা। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.