‘চাঁদা’ না পেয়ে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা-ফেসবুকে অপপ্রচারের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীতে চাঁদা না পেয়ে বিএনপির এক নেতার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও ফেসবুকে অপপ্রচারের অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) বেলা ১১টার রাজশাহীর মহানগরীর একটি রেস্টুরেন্টে মো. শাহাদত হোসেন নামের ভুক্তভোগী সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ করেন।
ভুক্তভোগী শাহাদত হোসেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী ও ২০১৭ সাল থেকে জেলার পবা উপজেলার হরিয়ান ইউনিয়ন বিএনপির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলাম।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগী শাহাদত জানান, তিনি ২০১৩ সাল থেকে বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী স্বৈরাচার সরকারবিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে ২টি বিস্ফোরক মামলায় (বোয়ালিয়া থানার মামলা নং- ১৪০২/১৩ এবং ১৪/৫৯৮) আসামি হয়ে দীর্ঘদিন কারাবরণ করেছিলেন৷  অথচ ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে একটি বিশেষ মহল তাকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে এবং চাঁদা আদায়ের চেষ্টা করে৷
তিনি বলেন, তাদের প্রস্তাব আমি প্রত্যাখ্যান করলে আমাকে আবারও মামলা দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়৷ আমার সম্পর্কে কোনো অভিযোগ বা প্রমাণ না থাকায় অনেক তদবির করে গত ২ মার্চ বোয়ালিয়া থানায় একটি মিথ্যা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন মামলা দায়ের করে৷ আমি যেহেতু বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এবং আমার বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র হচ্ছে এজন্য আমি আমার পূর্বের সকল ডকুমেন্টসসহ পুলিশ কমিশনার বরাবর মিথ্যা মামলা থেকে অব্যবহিতর জন্য আবেদন করি। পরে কমিশনার মহোদয় আমাকে আশ্বস্ত করেন যে, সত্যতা যাচাই বাছাইপূর্বক মিথ্যা মামলা থেকে অব্যবহিত দেওয়া হবে৷
তিনি আরো বলেন, ‘এরই মধ্যে স্থানীয় প্রতিহিংসার রাজনীতি ও ব্যক্তিগত আক্রোশের কারণে একটি মহল আমার ব্যক্তিগত ইমেজ নষ্ট করার জন্য এবং ছাত্রদলকে বিতর্কিত করার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ফেইক আইডি থেকে আমার কিছু ছবি ছড়িয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
শাহাদত বলেন, ‘অ্যাডমিশন হ্যাকস শিক্ষা পরিবার’ নামের একটি কোচিং ব্যবসার সঙ্গে আমি জড়িত।  সেই সুবাদে ছাত্রলীগের চাঁদাবাজি থেকে রক্ষা পেতে এবং ব্যবসা টিকিয়ে রাখার জন্য কিছু কৌশল অবলম্বন করতে হয়েছিল। তারপরও ছাত্রলীগের চাঁদাবাজি থেকে আমি রক্ষা পাইনি। বিভিন্ন সময় চাঁদা নেয়ার পাশাপাশি তারা আমাকে ব্লাকমেইলও করতো। ওই সময়ের কিছু ছবি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সামনে এনে একটি বিশেষ মহল অপপ্রচার চালাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, আমি ‘নলখোলা তরুণ সংঘ’ নামের একটি স্থানীয় সামাজিক সংগঠনের সভাপতি ছিলাম। ওই সময় দায়িত্ব পালনকালে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করার জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলতেই হতো। চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল বলে কুচক্রিমহল ওই চেয়ারম্যানের সঙ্গে আমার সম্পর্ক রয়েছে এমন অপপ্রচারও চালিয়ে যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, গত রবিবার (২০ এপ্রিল) পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ শাখা ছাত্রদলের কাউন্সিল ছিল। আমি ব্যক্তিগত কাজে পাবনায় গিয়েছিলাম। কাউন্সিল সম্পর্কে জানতে পেরে নিজ ইচ্ছায় সেখানে গিয়েছিলাম। কাউন্সিলে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এসেছিলেন। তার সঙ্গে আমার ছবি নিয়েও এই মহলটি অপপ্রচার চালাতে ভুলেনি। এভাবে আমার বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র আগেও হয়েছে এখনো চলছে।
তিনি বলেন, স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারে সময় মিথ্যা মামলায় জেল খেটেছি। প্রায় ২ হাজার ছাত্রজনতার জীবনের বিনিময়ে অর্জিত বৈষম্যবিরোধী দেশেও আমার নামে মিথ্যা মামলা হয়েছে। আমি একই ব্যক্তি উভয়পক্ষেরই মামলার আসামি। এর চেয়ে কষ্টের আর কিছু থাকতে পারে না। আমার বিরুদ্ধে এমন বৈষম্যের অবসান চাই।
কারা আপনার বিরুদ্ধে অপপ্রচার বা মিথ্য মামলা দিয়েছে জানতে চাইলে শাহাদত বলেন, ‘একটি বিশেষ মহল যাদের পরিচয় আমার ব্যক্তিগত নিরাপত্তার স্বার্থে বলতে চাচ্ছি না। তবে ফেসবুকে বেশিরভাগিই ফেইক আইডি থেকে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। তবে এই ফেইক আইডগুলো কাদের সেটি আমি অনুমান করতে পারছি।’
পবার হরিয়ান ইউনিয়ন বিএনপির ওই সময়ের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদুল বলেন, ‘শাহাদত ও তার পুরো পরিবার বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এটি সবাই জানে। সে একটি কোচিং ব্যবসা ও এলাকার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিল। এজন্য সবার সঙ্গে তার ভালো সম্পর্ক ছিল। এসব কিছু পুঁজি করে একটি মহল তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে, বিষয়টি দুঃখজনক।’
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি আমজাদ হোসেন শিমুল / রাজশাহী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.