খুলনা ব্যুরো: চকচকে খেলনা, গুড়া মশলা, রঙিন খাবার, তৈজসপত্র, প্রসাধনীসহ সিঁদুর-সুরমাতে ক্ষতিকর সীসা থাকতে পারে। ব্যাটারি শিল্পে সবচেয়ে বেশি সীসা ব্যবহার করা হয়। সীসা খাদ্য এবং শ্বাসপ্রশ্বাসেরসের মাধ্যমে মানবদেহে প্রবেশ করে। এর প্রভাবে হাঁড়ক্ষয়, দীর্ঘমেয়াদী ডায়েবিটিস ও উচ্চরক্তচাপ, রক্তশূন্যতা, শ্রবণশক্তি হ্রাস, মস্তিষ্কে নানা রকম জটিলতাসহ কিডনির বিভিন্ন রোগ হতে পারে।
সীসা দূষণ প্রতিরোধে অনুষ্ঠিত এক কর্মশালায় এসকল তথ্য জানানো হয়। খুলনা স্বাস্থ্য বিভাগ নগরীর সিএসএস আভা সেন্টারে আজ সোমবার (২৮ অক্টোবর) দিনব্যাপী এই কর্মশালার আয়োজন করে। জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) ও খুলনা প্রযুক্তি ও প্রকৌশল বিশ্বিবিদ্যালয় (কুয়েট) এতে সহযোগিতা করে।
মানবদেহে সীসা সংশ্লিষ্ট জটিলতার কোন চিকিৎসা নেই। তাই প্রতিরোধই সীসা থেকে মুক্তির একমাত্র উপায়। বারবার সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, শিশুদের খেলনা ব্যবহারে সতর্ক থাকা, চকচকে খাবার ও দ্রব্যাদি পরিহার করা এবং শ্রমিকরা কাজ শেষে তাদের পোশাক খুলে ঘরে প্রবেশ করা প্রয়োজন। এর সাথে ভিটামিন-সি যুক্ত খাবার, জিংক সমৃদ্ধ খাবার ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের মাধ্যমে সীসা দূষণ থেকে কিছুটা হলেও পরিত্রাণ মিলতে পারে।
কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মোঃ হুসাইন শওকত। খুলনা স্বাস্থ্য দপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক ডা. মোঃ মনজুরুল মুরশিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে কুয়েটের কেমিক্যাল ডিসিপ্লিনের সহকারী অধ্যাপক ড. মাহমুদুল হাসান ও ইউনিসেফ ফিল্ড অফিসের চিফ মোঃ কাউসার হোসাইন বক্তৃতা করেন। কর্মশালায় মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডা. মাহফুজুর রহমান ও কুয়েটের কেমিক্যাল ডিসিপ্লিনের শিক্ষক মোঃ ফয়সাল ফেরদৌস।
কর্মশালায় জানানো হয়, সীসা দূষণে গর্ভবতী মা ও শিশুরা বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। শিশুদের শরীর বয়ষ্কদের তুলনায় ৪-৫ গুণ বেশি সীসা শোষণ হয়ে থাকে। পৃথিবীর এক তৃতীয়াংশ অর্থাৎ আটশত মিলিয়ন শিশু সীসা দূষণের শিকার। ২০১৯ সালে সারা বিশ্বে সীসা দূষণের দীর্ঘমেয়াদী প্রতিক্রিয়ায় ০.৯০ মিলিয়ন মানুষের মৃত্যু হয়।
কর্মশালায় বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজ-স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও এনজিও প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.