কক্সবাজার প্রতিনিধি: ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’র প্রভাবে বৈরি আবহাওয়ায় টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-পথে পর্যটকবাহী জাহাজসহ সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে দ্বীপে আটকা পড়া ৪ শতাধিক পর্যটক দুইদিন পর টেকনাফ ফিরেছেন।
গতকাল শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যা থেকে বৈরি আবহাওয়া কেটে যাওয়ার পর এই নৌ-পথে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল আজ শনিবার (১৮ নভেম্বর) আবার শুরু হয়েছে। শনিবার বিকেলে সেন্টমার্টিন থেকে জাহাজে উঠে সন্ধ্যায় টেকনাফ দমদমিয়া ঘাটে পৌঁছান পর্যটকরা।
শনিবার (১৮ নভেম্বর) সকালে টেকনাফের দমদমিয়া জেটিঘাট থেকে কেয়ারি সিন্দবাদ ও বারো আউলিয়া নামের দুটি পর্যটকবাহী জাহাজ সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে ছেড়ে যায় এবং সন্ধ্যায় পর্যটক নিয়ে ফিরে আসে বলে নিশ্চিত করেছেন টেকনাফের ইউএনও মো. আদনান চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাব কেটে যাওয়ায় সমুদ্র বন্দর থেকে সতর্ক সংকেত প্রত্যাহার করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-পথে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেয়া হয়। সেই মতে শনিবার সকাল ১০টার দিকে টেকনাফের দমদমিয়া জেটিঘাট থেকে কেয়ারি সিন্দবাদ ও বারো আউলিয়া নামের দুটি পর্যটকবাহী জাহাজ সেন্টমার্টিনের দিকে যাত্রা শুরু। জাহাজ দুটি দুপুরের দিকে দ্বীপে পৌছায়। পরবর্তীতে বিকেল চারটার দিকে দ্বীপটিতে আটকা পড়া পর্যটকদের নিয়ে রওনা দিয়ে সন্ধ্যার সময় দমদমিয়া জেটিঘাট ফিরে আসে।’
এর আগে ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’র কারণে সেন্টমার্টিন ও টেকনাফে বৃহস্পতিবার থেকে নৌ-পথে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের, (বিআইডব্লিউটিএ) টেকনাফ অঞ্চলের ট্রাফিক সুপার ভাইজার মো. জহির উদ্দিন ভূঁইয়া বিটিসি নিউজকে বলেন, ‘আবহাওয়ার সতর্ক সংকেতের বার্তায় বৃহস্পতিবার থেকে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-পথে জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছিল। বুধবার দমদমিয়া জেটি ঘাট দিয়ে সকালে কেয়ারি সিন্দাবাদে ১৩২, আটলান্টিকে ৮৯ ও এমভি বারো আউলিয়া করে ২৯৮ পর্যটক সেন্টমার্টিন দ্বীপে যান। পরে জাহাজে করে বেলা তিনটায় তিন শতাধিক পর্যটক ফিরে এলেও অন্যরা দ্বীপে রয়ে যান। আগের দিন মঙ্গলবার বেড়াতে গিয়ে রাত কাটানোর জন্য ছিলেন দুই শতাধিক পর্যটক। সব মিলিয়ে দ্বীপে ৪ শতাধিক পর্যটক ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’ চলাকালে দ্বীপে আটকা পড়েন। শনিবার থেকে সমুদ্র বন্দর থেকে সতর্কতা সংকেত প্রত্যাহার করা হলে সকাল ১০টার দিকে দমদমিয়া জেটি ঘাট থেকে ৬২ পর্যটক নিয়ে কেয়ারি সিন্দবাদ ও কোনো পর্যটক ছাড়া বারো আউলিয়া জাহাজ দুটি সেন্টমাটিনের দিকে যাত্রা শুরু করে। পরবর্তীতে জাহাজ দুটি দ্বীপে আটকা পড়া ৪ শতাধিক পর্যটক নিয়ে সন্ধ্যার দিকে দমদমিয়া জেটি ঘাটে ফিরে আসে।’
দুই দিন অতিরিক্ত থেকে স্থলভাগে ফেরা পর্যটক দম্পতি ফেনী সদরের ইমতিয়াজ সুমেল ও রিয়া ইমতিয়াজের বয়ানে এই সংবাদদাতা জানতে পেরেছেন, মঙ্গলবার থেকে তাদের বৃহস্পতিবার টেকনাফ ফেরার কথা ছিল। কিন্তু বৈরি আবহাওয়ার কারণে জাহাজ বন্ধ হওয়ার কথা জেনে প্রথমে শঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন তারা। শঙ্কা থাকলেও প্রায় সারাদিনেই ইউপি ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভয় দেওয়ার কারণে দুর্যোগ নিয়ে উৎকণ্ঠা কমেছে।
সেন্টমার্টিন ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বিটিসি নিউজকে বলেন, ‘হঠাৎ করে আবহাওয়া বৈরি হয়ে উঠলে সতর্কতা সংকেত জারির পর বৃহস্পতিবার থেকে জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল। দ্বীপে অবস্থান করা পর্যটকদের নিয়মিত খোঁজখবর নেওয়া হয়েছিল। দুপুরে টেকনাফ থেকে জাহাজ দুটি ফিরে আসে। বিকেলে সব যাত্রীকে সঙ্গে নিয়ে টেকনাফের দিকে জাহাজ দুটি ছেড়ে যায়।’
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.