গাইবান্ধা প্রতিনিধি: গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের হাজিরঘাট গ্রামের খোকা মুন্সীর ছেলে এক সন্তানের জনক আব্দুল কুদ্দুস মুন্সী বাবার পিটুনী খেয়ে বাড়ী ছাড়েন ৪৭ বছর আগে। তার পরিবার তাকে অনেক খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে তার আশা ছেড়ে দেয়।
এরপর সপ্তাহ দুয়েক আগে এক প্রতিবেশী হারুণের নিটক প্রথম স্ত্রী রোকেয়া বেগম জানতে পারেন আব্দুল কুদ্দুস মুন্সী দিনাজপুর জেলার রানীগঞ্জে নতুন সংসার পেতেছেন। পরে কুদ্দুস মুন্সীর স্ত্রী এবং ছেলে তাকে ফিরিয়ে আনেন।
ততোদিনে তার প্রথম স্ত্রীর ছেলে বিবাহ করে সন্তানের বাবা হয়েছেন।
আব্দুল কুদ্দুস মুন্সী জানান, আজ থেকে ৪৭ বছর আগে আমাদের জমির ধান খায় প্রতিবেশীর একটি ছাগল। আমি সেটি ধরে এনে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখি। এরপর বাবার হাতে বেদম মার খাই। স্ত্রী রোকেয়া ও শিশু সন্তান আব্দুল করিম মিয়ার সামনে এমন মার খাওয়ার পর শরমে বাবার উপর অভিমান করে বাড়ী ছাড়ি।
আর প্রতিজ্ঞা করি আর কোনদিন বাড়ীর মুখ হব না। এই প্রতিজ্ঞা রাখতে গিয়ে ৪৭ বছর কেটে গেল। রানীগঞ্জে গিয়ে বিভিন্ন কারখানায় এবং মানুষের বাড়ী বাড়ী দিনমজুরি দিয়ে দিন কেটে যায়। তারপর সেখানকার প্রতিবেশীদের চাপাচাপিতে আর একটি বিয়ে করি। সেখানে হয়ে গেল আরও একটি পরিবার। সে স্ত্রীর গর্ভে জম্মনিল দুটি সন্তান।
আব্দুল কুদ্দুস মুন্সীর প্রথম স্ত্রীর নাতি নাইম মিয়া বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, জম্মের পর আমি দাদাকে দেখিনি। দাদাকে পেয়ে খুব ভালো লাগছে।
কুদ্দুসের প্রথম স্ত্রীর সন্তান করিম মিয়া বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, আমরা বাবার আশা ছেড়েই দিয়েছিলাম। সপ্তাহ দুয়েক আগে প্রতিবেশী হারুণের মাধ্যমে জানতে পারি বাবা দিনাজপুরের রানীগঞ্জে আছে। এরপর মা’সহ আমরা তাকে বাড়ী নিয়ে আসি।
আব্দুল করিম আরো বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, বাবা বাড়ী ছেড়ে যাওয়ার পর মা আর বিবাহ করেন নাই। মা আমাকে অবলম্বন করে বহু কষ্টে জমিতে ধান চাষ করে, হাস-মুরগি,গরু-ছাগল পালন করে আমাকে বড় করেছে এবং সংসারটা টিকিয়ে রেখেছেন।
প্রথম স্ত্রী রোকেয়া বেগম বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, আমার আর চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই। ৪৭ বছর পর স্বামী আব্দুল কুদ্দুস মুন্সীকে পেয়েছি এতেই শান্তি।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.