খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ম অবমাননা ও ‘জুলাই আন্দোলন’ নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে মানববন্ধন, তদন্ত কমিটি গঠন

খুলনা ব্যুরো: খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের দুই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ইসলাম ধর্ম ও ঐতিহাসিক ‘জুলাই আন্দোলন’ নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদি চত্বরে শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা “সম্প্রতির এই বাংলায় উস্কানির ঠাঁই নাই”, “অপরাধীদের ক্ষমা নাই, আজীবন বহিষ্কার চাই”, “জিরো টলারেন্স ফর ব্লাসফেমি”—এমন নানা স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।
২১ ব্যাচের শিক্ষার্থী তালহা বলেন, “এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মাটি শহীদ মুগ্ধ ভাইয়ের রক্তে রঞ্জিত। এখানে বসে যারা আওয়ামী লীগের গাদ্দারদের পক্ষে কথা বলবে কিংবা ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করবে, তাদের বিরুদ্ধে এই মাটি রুখে দাঁড়াবে।”
১৭ ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী তমিজউদ্দীন বলেন, “এ দেশের ৯০ শতাংশ মানুষ মুসলমান। ধর্ম ও আল্লাহ তায়ালাকে নিয়ে কটূক্তি করার পরও যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া না হলে তা উদ্বেগজনক। অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”
মানববন্ধন থেকে উত্থাপিত তিন দফা দাবিসমুহের মধ্যে রয়েছে, ধর্ম অবমাননাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে হবে। অভিযুক্তদের তিন কার্যদিবসের মধ্যে আজীবন বহিষ্কার এবং আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে ও অভিযুক্তদের সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে।
বিষয়টি নিয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, “ধর্ম অবমাননা ও ‘জুলাই আন্দোলন’ নিয়ে কটাক্ষ করার অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযুক্তদের আবাসিক হলের সিট বাতিল করা হয়েছে। রেজিস্ট্রার অফিস থেকে লিখিতভাবে নোটিশ প্রদান করা হয়েছে এবং একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সঠিক বিচার নিশ্চিত করা হবে।”
অভিযোগ অনুযায়ী, অভিযুক্ত দুই শিক্ষার্থী হলেন—গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের ২১তম ব্যাচের মো. রাসেল এবং ২৩তম ব্যাচের তনয় রায়।
অভিযোগে বলা হয়, রাসেল তার ফেসবুক পোস্টে কুরআনের কিছু সূরা নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেন এবং আল্লাহ তায়ালাকে ‘বর্ণবাদী’ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি একই সঙ্গে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের পক্ষে প্রচারণা চালিয়ে ‘জুলাই আন্দোলন’-এর কর্মীদের নিয়ে কটূক্তি ও হুমকি প্রদান করেন।
অন্যদিকে, তনয় রায় ওই বিতর্কিত স্টোরিটি নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে শেয়ার করেন এবং অতীতেও ‘জুলাই আন্দোলন’ নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য ও হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তদন্ত কার্যক্রমের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকেই এখন দৃষ্টি রাখছে শিক্ষার্থীরা ও সংশ্লিষ্ট মহল।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর খুলনা ব্যুরো প্রধান মাশরুর মুর্শেদ। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.