খুলনায় ডেঙ্গু ও কোভিড-১৯ প্রতিরোধে সভা: বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী, সচেতনতার উপর জোর

খুলনা ব্যুরো: খুলনা বিভাগে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ১০ জুন পর্যন্ত খুলনার ১০ জেলায় মোট ১৬২ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছেন এবং ইতোমধ্যে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সঙ্গে করোনা ভাইরাসের নতুন সংক্রমণ ঠেকাতেও সতর্কতা গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (১৬ জুন) খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের সম্মেলনকক্ষ এবং খুলনা সিটি কর্পোরেশনের শহীদ আলতাফ মিলনায়তনে “ডেঙ্গু এবং কোভিড-১৯ প্রতিরোধে করণীয়” শীর্ষক পৃথক দুই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি ও করোনা প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
বিকেলে কেসিসির সভায় সভাপতির বক্তব্যে সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক ও খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মোঃ ফিরোজ সরকার বলেন, “ডেঙ্গু প্রতিরোধে সিটি কর্পোরেশনকে সর্বোচ্চ সক্ষমতা দিয়ে কাজ করতে হবে। প্রতিটি ওয়ার্ডে গঠিত ডেঙ্গু ও কোভিড বিষয়ক কমিটিকে সক্রিয় করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, উচ্চঝুঁকির ওয়ার্ডগুলোকে চিহ্নিত করে ফগার মেশিন, লার্ভিসাইট ও এডালটিসাইট স্প্রের মাধ্যমে মশা নিয়ন্ত্রণে অগ্রাধিকার দিতে হবে। প্রয়োজনে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের অভিজ্ঞতা গ্রহণের পরামর্শও দেন তিনি।
সভায় জানানো হয়, করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট আগের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি সংক্রামক। এজন্য মাস্ক পরিধান, জনসমাগম এড়িয়ে চলা, ঘরে ফিরে সাবান ও পানি দিয়ে ২০ সেকেন্ড সময় ধরে হাত ধোয়া এবং অসুস্থ ব্যক্তিদের থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়।
সভায় আরও অংশ নেন কেসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লস্কার তাজুল ইসলাম, সচিব শরীফ আসিফ রহমান, প্রধান প্রকৌশলী (চলতি দায়িত্বে) মশিউজ্জামান খান, রাজস্ব কর্মকর্তা রহিমা সুলতানা বুশরা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কোহিনুর জাহান, খুলনা প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব রফিউল ইসলাম টুটুল, বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা, এনজিও প্রতিনিধি ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।
বিভাগীয় প্রশাসনের সভা: সচেতনতায় জোর
এর আগে দুপুরে বিভাগীয় প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দপ্তরের যৌথ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিভাগীয় কমিশনার মোঃ ফিরোজ সরকার বলেন, “করোনা প্রতিরোধে গঠিত কমিটিগুলোকে পুনরায় সক্রিয় করতে হবে। হাসপাতালগুলোতে করোনা ওয়ার্ড প্রস্তুত রাখতে হবে এবং গণমাধ্যমে প্রচার কার্যক্রম বাড়াতে হবে।”
তিনি বলেন,”বাড়ির চারপাশ পরিষ্কার রাখতে হবে, সবাইকে বাইরে বের হলে মাস্ক পরতে হবে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সতর্কতামূলক লিফলেট বিতরণ কার্যক্রম শুরু করা হবে।”
সভায় জানানো হয়, ডেঙ্গু রোগের লক্ষণসমূহ হলো—উচ্চ জ্বর, মাথাব্যথা, চোখের পেছনে ব্যথা, অস্থিসন্ধিতে ব্যথা, বমি, ফুসকুড়ি, ক্লান্তি ইত্যাদি। প্রতিরোধে মশারি ব্যবহার, শরীর ঢাকা পোশাক পরা, জমে থাকা পানি ফেলা এবং বাড়ির আঙিনা পরিচ্ছন্ন রাখার আহ্বান জানানো হয়।
অপরদিকে, করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্টে জয়েন্ট ব্যথা, মাথাব্যথা, গলাব্যথা, পিঠে ব্যথা, নিউমোনিয়া ও ক্ষুধা হ্রাসের মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
সভায় অংশ নেন স্বাস্থ্য দপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মো. মুজিবুর রহমান,অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (শিক্ষা ও আইসিটি) দেবপ্রসাদ পাল,খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. গোলাম মাসুদ,বিশেষায়িত হাসপাতালের পরিচালক ডা. শেখ আবু শাহিন,স্বাস্থ্য দপ্তরের সহকারী পরিচালক ডা. অপর্ণা বিশ্বাস (ডেঙ্গু বিষয়ে ধারণাপত্র উপস্থাপন), সহকারী পরিচালক ডা. এস এম শাহরিয়ার (কোভিড-১৯ বিষয়ে উপস্থাপক), সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ও প্রতিনিধিগণ।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর খুলনা ব্যুরো প্রধান মাশরুর মুর্শেদ। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.