খুলনা ব্যুরো:খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) এখন শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে উত্তাল। মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুপুর দেড়টায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তাঁদের আগের ছয় দফা দাবি থেকে সরে এসে উপাচার্য (ভিসি) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগ -এই এক দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের বারান্দায় আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তারা এই ঘোষণা দেন।
লিখিত বক্তব্যে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ গুলোর মধ্যে রয়েছে, ভিসি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন, হল থেকে জোর করে বের করে দিতে পানির লাইন ও ইন্টারনেট বন্ধ করেছেন, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করতে ইন্ধন দিয়েছেন, পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করে আন্দোলনকারীদের বহিষ্কার করেছেন, এমনকি কোন প্রকার আলোচনা না করেই একতরফাভাবে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়েছেন।
শিক্ষার্থীদের ভাষ্যে, “এই ভিসির অধীনে ন্যায়বিচার অসম্ভব, সুতরাং আমরা চাই তার পদত্যাগ এবং নতুন ভিসির অধীনে নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটির মাধ্যমে সত্য উদঘাটন।”
আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৩ এপ্রিল ঈদের ছুটি শেষে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ফিরে এসে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন। পরদিন বাংলা নববর্ষের দিনও অবস্থান চালিয়ে যান তারা। ১৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় জরুরী সিন্ডিকেট সভায় নেয়া সিদ্ধান্ত গুলোর মধ্যে রয়েছে, ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার, ২ মে আবাসিক হল খোলা ও ৪ মে থেকে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হবে।
এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, তা শিক্ষার্থীবান্ধব নয় এবং প্রকৃত সমস্যার সমাধান নয়। পরদিন ১৫ এপ্রিল দুপুরে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ভিসির পদত্যাগ দাবিতে একতরফা আন্দোলনের রূপরেখা ঘোষণা করেন। এরপর তারা বিক্ষোভ মিছিল করে হলে ফিরে গিয়ে ছয়টি আবাসিক হলের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন এবং রাতেও সেখানে অবস্থান করার কথা জানান।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের এই পদক্ষেপকে অবৈধ প্রবেশ বলে আখ্যায়িত করেছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “শিক্ষার্থীরা সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে নিয়ম বহির্ভূতভাবে হলে প্রবেশ করেছে, যা প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের শামিল।”
এদিকে পুরো ক্যাম্পাসে এক ধরনের উদ্বেগ ও অস্থিরতা বিরাজ করছে। শিক্ষার্থীরা নিজেদের দাবি আদায়ে অনড় থাকলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো তাৎক্ষণিক আলাপ-আলোচনার ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।
১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে বাধা দিতে গেলে বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এতে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। এরপর থেকেই একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ এবং ক্যাম্পাস অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.