খুলনা ব্যুরো: খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) আবাসিক হল খোলার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা। সোমবার (১৪ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাতটার দিকে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে ভাস্কর্য ‘দুর্বার বাংলা’র পাদদেশ ঘুরে পুনরায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে শেষ হয়। এরপর শিক্ষার্থীরা সেখানেই অবস্থান নেন।
জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সন্ধ্যা থেকেই প্রশাসনিক ভবনের ভেতরে সিন্ডিকেট সভা শুরু হয়েছে। শিক্ষার্থীরা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, এই সভা থেকেই তাদের পক্ষে একটি শিক্ষার্থীবান্ধব সিদ্ধান্ত আসবে।
এর আগে গতকাল রবিবার বিকেল থেকেই শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন শুরু করেন। তাঁরা দাবি জানান, রাত আটটার মধ্যে সব আবাসিক হল খুলে দেওয়া হোক। শিক্ষার্থীরা হল খোলার দাবিতে লিখিত আবেদনও জমা দেন, যা গ্রহণ করেন ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) অনুষদের ডিন অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম।
প্রসঙ্গত, ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে, যাতে শতাধিক মানুষ আহত হন। পরদিন শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন। সেই দিনই কুয়েটের সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
ঘটনার পরপরই খানজাহান আলী থানায় অজ্ঞাতনামা ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করে একটি মামলা করা হয়। ২৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সব আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে প্রশাসন। এরই ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার এক ব্যক্তি, হোচেন আলী, কুয়েটের ২২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন।
আজকের বিক্ষোভ শেষে কুয়েট ক্যাম্পাসে এক প্রেস ব্রিফিং করেন শিক্ষার্থীরা। লিখিত বক্তব্যে তারা জানান, “দুপুরে ছাত্র কল্যাণ পরিচালকের দপ্তরের সহকারী পরিচালক স্যারের মাধ্যমে জানতে পারি, আজ সন্ধ্যায় সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আমরা আশা করছি, আমাদের দাবি মেনে আজ রাতেই হল খুলে দেওয়া হবে, যেন আমরা হলে ফিরে গিয়ে নিরাপদে রাত কাটাতে পারি। আমরা আর খোলা আকাশের নিচে মশার কামড় খেয়ে এখানে অবস্থান করতে চাই না।”
তারা আরও বলেন, “প্রশাসন যেন কোনোভাবে দলীয় স্বার্থ রক্ষার উদ্দেশ্যে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কোনো সিদ্ধান্ত না নেয়।”
শিক্ষার্থীরা স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, আজকের সিন্ডিকেট সভা থেকে প্রত্যাশিত সিদ্ধান্ত না এলে, তারা পরবর্তী সময়ে আরও কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর খুলনা ব্যুরো প্রধান মাশরুর মুর্শেদ। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.