খুলনা ব্যুরো:খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) এক নতুন সংকটে পড়তে যাচ্ছে। শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় অভিযুক্তদের বিচারিক কার্যক্রম (সোমবার) দুপুর ১২টার মধ্যে সম্পন্ন না হলে একাডেমিক কার্যক্রমের পাশাপাশি সকল প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে কুয়েট শিক্ষক সমিতি। অন্যদিকে, একই দিনে শিক্ষার্থীরা লিখিতভাবে আবেদন জানিয়ে দ্রুত বিচার ও ক্যাম্পাস স্বাভাবিক করার দাবি জানিয়েছেন।
রবিবার (১৮ মে) দুপুরে প্রশাসনিক ভবনের সভাকক্ষে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভা শেষে এ ঘোষণা দেন তারা। তার আগে কুয়েটের উপাচার্যের সঙ্গে শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ বৈঠকে বসেন।
পরে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, “বিশ্ববিদ্যালয় আইনের বাইরে গিয়ে প্রশাসন অভিযুক্তদের বিচার প্রক্রিয়া স্থগিত করে রেখেছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম সংকটে পড়েছে। মাত্র কয়েকজন শিক্ষার্থীর স্বার্থ রক্ষায় এবং ‘উপর মহল’ নামক একটি অদৃশ্য শক্তিকে তুষ্ট করতে প্রশাসন এই অবস্থান নিয়েছে।”
শিক্ষকরা জানান, বিচার প্রক্রিয়ায় বিলম্ব হলে সোমবার দুপুর ১২টার পর থেকে উপাচার্যের কার্যালয়ে অবস্থান ধর্মঘট করবেন তারা।
শিক্ষকদের ঘোষণা দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগেই কুয়েটের পাঁচটি বিভাগের সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের কাছে একটি লিখিত আবেদন পেশ করেন। তারা সাম্প্রতিক ঘটনার জন্য গভীর উদ্বেগ ও দুঃখ প্রকাশ করেন এবং তদন্তসাপেক্ষে দ্রুত বিচার দাবি করেন।
আবেদনে তারা বলেন, “চলমান আন্দোলনের সময় কিছু অতিউৎসাহী শিক্ষার্থীর দ্বারা শিক্ষকদের প্রতি লাঞ্ছনার যে ঘটনা ঘটেছে, তা দুঃখজনক। আমরা সকল শিক্ষকের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী এবং চাই বিচার হোক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মাধ্যমেই।”
তবে তারা বহিরাগত ও বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের বিরোধিতা করে বলেন, “এতে বিচার প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হবে এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থী সম্পর্কে আরও টানাপড়েন তৈরি হবে।”
তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি আস্থা রেখে দ্রুত সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানান এবং বলেন, “গত তিন মাস ধরে কুয়েটের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ। আমরা চাই অতিদ্রুত ক্লাস-পরীক্ষা শুরু হোক।”
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্র-শিক্ষক দ্বন্দ্ব, আন্দোলন, বিক্ষোভ এবং শিক্ষকদের প্রতি অসদাচরণের অভিযোগ নিয়ে শুরু হয় অস্থিরতা। কিছু শিক্ষার্থী পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলনে নামলেও, আন্দোলনের ধরন ও কিছু ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয়ে পড়ে যে, এক পর্যায়ে একাডেমিক কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায়।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.