কমছে তিস্তার পানি, শুরু হয়েছে নদী ভাঙ্গন

লালমনিরহাট প্রতিনিধি: টানা কয়েক দিনের বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে লালমনিরহাটের চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছিল। এখন এসব এলাকা থেকে পানি নেমে যাচ্ছে। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত দুই দিনে অন্তত ৫০ টি ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এ ছাড়া ভাঙনের ঝুঁকিতে আছে কয়েক শ ঘরবাড়ি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ভাঙনের আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে নদী পাড়ের বাসিন্দাদের।
রবিবার সন্ধ্যা থেকে তিস্তা নদীর পানি কমতে শুরু করে। রাতেই প্লাবিত অনেক অঞ্চল থেকে পানি নেমে যায়। তবে কিছু নিচু অঞ্চল ও চরাঞ্চলের বহু বাড়িঘর ও রাস্তাঘাট সোমবারও (৩০ সেপ্টেম্বর) ডুবেছিল।
এদিকে পানি হঠাৎ কমে যাওয়ায় জেলার কয়েকটি পয়েন্টে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের বাহাদুরপাড়া, গরিবুল্লাপাড়া, সদরের খুনিয়াগাছ, রাজপুর, তাজপুর এলাকায় ভাঙন অব্যাহত আছে। গত দুই দিনে এসব এলাকায় ৫০টির বেশি বাড়িঘর ভেঙে গেছে এ ছাড়া এসব পয়েন্টে কমপক্ষে ৫০০ পরিবার ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, পানি আরও কমলে ভাঙন আরও তীব্র আকার ধারণ করবে।
আদিতমারী উপজেলার বাহাদুর পাড়ার রহমত উল্লাহ বিটিসি নিউজকে বলেন, এই জীবনে ১৭ বারের থেকে বেশি বাড়িঘর সরিয়েছি। আমি এই গ্রামের লাখপতি ছিলাম। কিন্তু আজ আমার কিছু নেই, সরকার বাহাদুর এসেই তিস্তাপাড়ের মানুষকে শুধু আশ্বাস দিয়ে ভোট নেন। জানি এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না। তাদের আশ্বাস দিয়ে আর কী হবে আমাদের জীবনে? তিস্তা নদীতে সব জমি বিলীন হয়ে গেছে। গত কয়েক দিনের তিস্তার পানি বৃদ্ধিতে আমার ঘর সরাতে হয়েছে। নতুন সরকারের প্রতি অনুরোধ দ্রুত তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে তিস্তা পাড়ের মানুষকে রক্ষা করুন।
হাতীবান্ধা উপজেলার ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মশিউর রহমান বিটিসি নিউজকে জানান, তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় গত দুই দিন এই ইউনিয়নের অনেক ঘরবাড়ি ডুবেছিল। পানি কমতে শুরু করেছে। এখন ভাঙন আতঙ্ক বাড়ছে।
ডালিয়া পাউবোর উপ-প্রকৌশলী মোহাম্মদ রাশেদীন বিটিসি নিউজকে বলেন, উজানের ঢল আর ভারী বর্ষণে তিস্তায় পানিপ্রবাহ বেড়েছিল। তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করলেও বর্তমানে কমতে শুরু করেছে। তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দিয়ে পানি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে।
জেলা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বিটিসি নিউজকে বলেন, ‘আমরা ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। বরাদ্দের চাহিদা পাঠানো হয়েছে। জরুরি বরাদ্দ পেলেই ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব উদ্দীন বিটিসি নিউজকে বলেন, বন্যাকবলিত মানুষের মধ্যে ১৩ লাখ টাকা ও ৯০ টন জিআর চাল বিতরণ শুরু হয়েছে। বন্যা মোকাবিলায় জেলা ও উপজেলা প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর লালমনিরহাট প্রতিনিধি হাসানুজ্জামান হাসান। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.