কক্সবাজার প্রতিনিধি: স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) ঠিকাদারের অবহেলার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে কক্সবাজারের ঈদগাঁওর পূর্ব ফরাজীপাড়ার কয়েক শত পরিবার। দ্রুত গাইডওয়াল নির্মাণ কাজ শেষ করে ক্ষতিগ্রস্ত পয়েন্টগুলো সংস্কার না করায় ভেঙে গেছে সড়ক। বৃষ্টির পানিতে প্লাবিত হওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে যান চলাচল।
ঈদগাঁওর পূর্ব ফরাজীপাড়ার খালের ভঙ্গুরপাড়ে গাইডওয়াল নির্মাণের কাজ শুরু করে অবহেলায় ফেলে রাখে এলজিইডি ঠিকাদার। ইতিমধ্যে মৌসুমের প্রথম নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি খোলা তীর দিয়ে লোকালয়ে প্রবেশ করে। এতে পানির স্রোতে পড়া তীরের নিকটবর্তী প্রায় ২০টি বাড়ি পূর্ণাঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্লাবিত হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আরও শতাধিক বসতবাড়ি। আর ইউনিয়নের একমাত্র পাকা সড়কটি পানির স্রোতে ভয়াবহভাবে ভেঙে পড়েছে। ফলে উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন প্রায়। সড়কটি ব্যবহার করা জালালাবাদ ও পোকখালী দুই ইউনিয়নের কয়েক লাখ মানুষের শহরের সঙ্গে যোগাযোগ করা কঠিন হয়ে পড়েছে, এমনটি অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্তদের।
স্থানীয়রা বিটিসি নিউজকে জানান, ঈদগাঁও ফুলেশ্বরী নদীর জালালাবাদের মনজুর মৌলভীর দোকান ও পোকখালী ইউনিয়নের পূর্ব সিকদারপাড়া এলাকার সংযোগ ব্রিজটি বিগত বছর পাঁচেক আগে ঢলের পানিতে মাঝের দুটি গার্ডারসহ তলিয়ে যায়। জালালাবাদের তৎকালীন চেয়ারম্যান ইমরুল রাশেদ ও তার দুই ভাই প্রতিযোগিতা দিয়ে বালি তুলতে গিয়ে ব্রিজের গার্ডারের কিনার থেকে বালি নেওয়ায় বর্ষার প্রথম ঢলে ব্রিজটি মাঝের অংশ তলিয়ে যায়। এসময় মনজুর মৌলভীর দোকানের সাইডের বাঁধ ভেঙ্গে এলাকার বেশ কয়েকটি বাড়ি তলিয়ে গিয়ে কয়েকশ বাড়ি প্লাবিত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় সড়কও। তখন বাঁধে বস্তা ফেলে মাটি দিয়ে উঁচু করে ভেতর অংশে একটি ওয়াল দেওয়া হয়। এরপর ঢল নামলেও বাঁধটি এলাকাকে রক্ষা করেছে।
তবে, দ্রুত গাইডওয়ালটি নির্মাণ ও ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা মেরামত করার উদ্যোগ চলছে বলে দাবি করেছেন এলজিইডি কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ মামুন খান।
এলজিইডির এই প্রকৌশলী বিটিসি নিউজকে বলেন, এটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। সবেমাত্র কাজ শুরু করেছিলেন ঠিকাদার। বাঁধের দুই হাজার ২০০ মিটার অংশ মেরামতের জন্য এক কোটি ১৯ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। কিন্তু পুরো কাজ শুরুর আগেই প্রাকৃতিক দুর্যোগ- সত্যি কষ্টদায়ক।
শনিবার (৩১ মে) জেলা অফিসের সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী ইউএনওকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। কিভাবে দ্রুত টেকসইভাবে কাজ শেষ করা যায় তা নির্ধারণ করা হচ্ছে জানান তিনি।
ঈদগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিমল চাকমা বিটিসি নিউজকে বলেন, পাহাড়ি ঢলের কারণে পাড় ভেঙে যাওয়ায় মূলত এ দুর্যোগে পড়েছেন অধিবাসীরা। খবর পেয়ে চেয়ারম্যানসহ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করা হয়। কোনো ধরণের প্রাণহানি হয়নি। প্রাথমিক খবরে ১৪টি বাড়ি পূর্ণাঙ্গ এবং ৭৪টি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত বলে জানান।
ভাঙনের এক কিলোমিটার পশ্চিমে ফরাজিপাড়ায় জালালাবাদ ইউপির ভবন। সড়কটি দিয়ে ইউনিয়নের অধিবাসীসহ পার্শ্ববর্তী পোকখালী ইউনিয়নের বাসিন্দারা ঈদগাঁও উপজেলা সদর ও বাজারে যাতায়াত করে থাকেন। ভাঙনের কারণে যান যোগাযোগ সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে।
ইতি মধ্যে, ভাঙন ও ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পর্যবেক্ষণে গিয়ে ঈদগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিমল চাকমা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে প্রাথমিক সহযোগিতা দিয়েছেন। এ সময় জালালাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান আলমগীর তাজ জনি উপস্থিত ছিলেন।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.