গাজীপুর প্রতিনিধি:জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) পরিচয়ে ভুয়া নিয়োগ, আইডি কার্ড প্রশিক্ষণ প্রদান করে বিভিন্ন জেলা থানায় পোস্টিং, বদলি ও পদোন্নতি দিয়ে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে এক দম্পতি ও দুই শ্যালিকাসহ ছয় প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) গোয়েন্দা টিম।
আজ সোমবার (১৩ মে) জিএমপির সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন উপপুলিশ কমিশনার (ডিবি-দক্ষিণ) মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খান।
মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খান জানান, তাদের কেন্দ্র থেকে প্রতারণার শিকার দুই কিশোরীকে উদ্ধার এবং ইলেকট্রিক শক মেশিন, বায়োমেট্রিক ফিঙ্গার প্রিন্ট ডিভাইস, নিয়োগপত্র, ল্যাপটপ ও প্রশিক্ষণ মডিউল বইসহ বিভিন্ন সামগ্রী জব্দ করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা হলেন, নীলফামারীর রনচণ্ডী উত্তরপাড়া এলাকার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে প্রতারকচক্রের দলনেতা মো. লিয়ন ইসলাম (২৫), লিয়নের স্ত্রী একই এলাকার রিয়াজুল ইসলামের মেয়ে রাজিয়া সুলতানা (২২), দুই শ্যালিকা রিপা আক্তার (২১) ও রেখা মনি (১৭), একই জেলার রনচণ্ডী দালালপাড়া এলাকার এবাদুল হকের ছেলে মোজাহিদুল ইসলাম ওরফে পায়েল (২৩) এবং লালমনিরহাটের দই খাওয়া এলাকার মৃত আনসার আলীর ছেলে হুমায়ুন কবির প্রিন্স (৩৬)।
জিএমপির ওই কর্মকর্তা আরও জানান, এনএসআইয়ের গোপন তথ্যের ভিত্তিতে গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী পশ্চিম থানা এলাকার ভাদাম পশ্চিমপাড়ার শহীদ মিয়ার পাঁচতলা ভবনের ফ্ল্যাটে আজ ভোররাতে অভিযান চালায় জিএমপির গোয়েন্দা পুলিশ ও এনএসআইয়ের যৌথ টিম। এ সময় সেখান থেকে ওই ছয়জনকে আটক করা হয়। তাঁদের হেফাজত থেকে প্রতারণার শিকার দুই কিশোরী আসিক সিনথি (১৯) ও কানিজ ফাতেমাকে (১৮) উদ্ধার এবং বিভিন্ন সরঞ্জামাদি জব্দ করা হয়। উদ্ধার হওয়া কিশোরী দুজনকে কেন্দ্রে প্রশিক্ষণের নামে ওই বাড়িতে কৌশলে আটকে রেখেছিল প্রতারকরা। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এ পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, তারা এনএসআইয়ের পরিচয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে চাকরি প্রত্যাশী যুবক-যুবতীদের কাছ থেকে জনপ্রতি ১৫ হতে ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে আসছিল। তারা ফেইসবুক আইডি ব্যবহারের মাধ্যমে চাকরি প্রত্যাশীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে টঙ্গীতে এনে ভুয়া নিয়োগপত্র ও আইডি কার্ড দেয় এবং বিভিন্ন জেলা থানায় পোস্টিংয়ের চিঠি দেয়। পরে চাকরির প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা বলে কৌশলে টঙ্গীর ওই বাড়িতে এনে ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে আটকে রাখে। এ সময় প্রশিক্ষণের নামে নিজেদের বিধি মোতাবেক নানাভাবে নির্যাতন করে। তারা বদলি ও পদোন্নতি দেওয়ার কথা বলেও ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়। টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর তারা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র/ঠিকানা পরিবর্তন করে গা-ঢাকা দিয়ে আসছিল বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে এই প্রতারক চক্রের সদস্যরা।
সংবাদ সম্মেলনে জিএমপির এডিসি ফজলুল করিম ও সহকারী কমিশনার সুবীর কুমার সাহা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর গাজীপুর প্রতিনিধি মো. সাইফুল ইসলাম সাইফুল। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.