নিজস্ব প্রতিবেদক: এক বছর ধরে বন্ধ রয়েছে রাজশাহী-পার্বতীপুর রুটে চলাচল করা উত্তরা এক্সপ্রেস ট্রেনটি। এটি ২০২৩ সালের ২৮ জুলাই বন্ধ করে দেয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এই এক বছরেও ট্রেনটি চালু করা সম্ভব হয়নি। অল্প ভাড়ায় মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে নিরাপদ ভ্রমণের একমাত্র ট্রেনটি বন্ধ হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন হাজারও যাত্রী।
রেলওয়ে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পাওয়ার লিংক (ইঞ্জিন) সঙ্কটের কারণে বন্ধ রয়েছে উত্তরা এক্সপ্রেস ট্রেন। ট্রেনটি চালু করার উদ্যাগ নেওয়া হয়েছে। ট্রেনটি দ্রুত চালু হবে।
জানা গেছে, উত্তরা এক্সপ্রেস ট্রেন রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে পার্বতীপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যেত বেলা ১২টা ১৫ মিনিটে। আর পার্বতীপুর থেকে রাজশাহীর উদ্দেশ্যে যাত্রা করত ভোট ৪টা ১৫ মিনিটে। এই ট্রেনে ৫টি যাত্রীবাহী কোচ ও একটি লাগেজ ভ্যান ছিল। এছাড়া ছোট-বড় সব স্টেশনে থামে এই ট্রেনটি। ফলে যাত্রীরা এক স্টেশন থেকে অন্য স্টেশনে অল্প খরচে যাতায়াত করতে পারে।
ভোরে পার্বতীপুর থেকে এই ট্রেনটি ছাড়ায় এটি ছিল কর্মজীবী মানুষদের পছন্দের বাহন ছিল। এই ট্রেনে বগুড়ার সান্তাহার, নওগাঁর আহসানগঞ্জ, নাটোর, আব্দুলপুর এলাকায় কর্মরত যাত্রীরা বেশি চলাচল করতেন। ট্রেনটি খুব সকালে হওয়ার কারণে অনেকেই রাজশাহীতে চিকিৎসার জন্য আসত উত্তরা এক্সপ্রেস ট্রেনে। ট্রেনটি পার্বতীপুর থেকে ছাড়ার পরে জয়পুরহাট পৌঁছানো মাত্র যাত্রীতে ভর্তি হয়ে যেত। ট্রেনটিতে কোচের সিট ক্যাপাসিটির বেশি যাত্রী পরিবহন করা হতো ট্রেনটিতে।
উত্তরা এক্সপ্রেস ট্রেনের একজন টিকিট চেকার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ট্রেনটিতে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষেরা বেশি যাওয়া আসা করত। সব স্টেশনে থামার কারণে সবসময় যাত্রী ভর্তি থাকতো কোচগুলো। সিটের চেয়ে বেশি মানুষ দাঁড়িয়ে যাত্রা করত। যাত্রীদের ঠেলাঠেলিতে টিকিট চেক করতে বেগ পেতে হতো। ট্রেনটি প্রায় এক বছর সময় ধরে বন্ধ রয়েছে। ফলে খুব সকালে চলাচল করা যাত্রীদের পড়তে হয়েছে চরম দুর্ভোগে।
উত্তরা এক্সপ্রেস ট্রেনে মাছ পরিবহন করেন নন্দনগাছির শমসের আলী। তিনি বলেন, উত্তরা ট্রেনের আত্রায় থেকে মাছ পরিবহন করে থাকি। কিন্তু ট্রেনটি দীর্ঘদিন থেকে বন্ধ রয়েছে। তাই সড়ক পথে মাছ পরিবহন করতে হচ্ছে। এতে করে খরচ বেশি হয়। তার দাবি- তার মতো অনেক মাছ ব্যবসায়ীকে বেশি টাকা খরচ করে আত্রায় থেকে সড়ক পথে মাছ কিনে নিয়ে আসতে হচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন রেলওয়ের কর্মকর্তা বিটিসি নিউজকে বলেন, সব স্টেশনে এই লোকাল ট্রেন থামত। এই ট্রেনে অল্প ভাড়ায় মানুষ যাতায়াত করতে পারত। যাতায়াত না করতে পাড়ায় যাত্রীদরে মধ্যে এক ধরনের হতাশা রয়েছে। ট্রেনটি বন্ধ থাকায় বিকল্প উপায়ে যাত্রার কারণে মানুষের অতিরিক্ত টাকা খরচ হচ্ছে।
রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার আব্দুল করিম বিটিসি নিউজকে বলেন, উত্তরা এক্সপ্রেস ট্রেন চালক সঙ্কটের কারণে দীর্ঘদিন থেকে বন্ধ রয়েছে। উত্তরা ট্রেনটি ২০২৩ সালের ২৮ জুলাই বন্ধ করে দেয়া হয়। শোনা যাচ্ছে ট্রেনটি দ্রুত চালু হবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চল চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ ভুঁঞা বিটিসি নিউজকে বলেন, উত্তরা এক্সপ্রেস ট্রেনটি বন্ধ হওয়া প্রায় এক বছর হতে গেল। ট্রেনটি চালক সঙ্কটের কারণে বন্ধ রয়েছে। ট্রেনটি আবার চালুর জন্য আমরা চেষ্টা করছি। আশা করা হচ্ছে আগামী এক মাসের মধ্যে ট্রেনটি চালু হতে পারে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি মো. মাসুদ রানা রাব্বানী / রাজশাহী। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.