বিটিসি নিউজ ডেস্ক: পবিত্র রমজান মাস। সিয়াম সাধনার মাস। ইফতার হচ্ছে রমজানের অপরিহার্য্য একটি অংশ। আসুন ইফতারে করণীয় ও এর ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
# কখন ইফতার করবেন ?
যখন সূর্যাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে যায় তখন ইফতার করে নিতে হবে। আপনাকে সাইরেন কিংবা আযানের জন্য অপেক্ষা করতে হবে না।
হাদিসে রয়েছে, আমিরুল মুমেন্নি হযরত উমর ইবন খাত্তাব (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেছেন যখন রাত্র সেদিক থেকে ঘনিয়ে আসে, দিনও এদিক থেকে চলে যায় এবং সূর্য্য ডুবে যায়, তখন সায়িম তথা রোজাদার ইফতার করবে। (সহিহ বুখারী)
ইফতারির সময় হওয়ার আগ থেকে ইফতার নিয়ে বসে থাকা এবাদত। কিন্তু ইফতারির সময় হওয়া মাত্রই ইফতার করে নিতে হবে। অহেতুক বিলম্বে ইফতার করলে মাকরূহ হবে, বরং দ্রুত ইফতার করতে রাসূল (সা.) এর নির্দেশনা রয়েছে। হাদিসে আছে, হযরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেছেন, -মহান আল্লাহ বলেন, আমার বান্দাদের মধ্যে সেই বেশি প্রিয় যে ইফতারে তাড়াতাড়ি করে। (তিরমিজি, ২য় খণ্ড, হাদিস-৭০০)
# কী দিয়ে ইফতার করবেন?
হাদিসে আছে- হযরত সালমান ইবনে আমের (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেছেন, যখন তোমাদের মধ্যে কেউ রোজার ইফতার করে তবে সে যেনো খেজুর কিংবা খোরমা দিয়ে ইফতার করে। কারণ তা হচ্ছে বরকত। আর তা না হলে পানি দিয়ে করবে, তাতো পবিত্রকারী।’ (জামে তিরমিজি, ২য় খণ্ড, হাদিস-৬৯৫)
ইফতারের আগে কিংবা পরে দোয়া পড়া বাঞ্ছনীয়। দোয়াটি হলো- আল্লাহুম্মা ইন্নি লাকা ছুমতো ওয়া বেকা আ’মানতু ওয়া আলাইকা তাওয়াক্কালতু ওয়া আলা রিজকিকা আফতারতু (ফতোয়া আলমগীরী)
# ইফতারের ফজিলত?
রমজানের ইফতার রোজাদারদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে বড় নেয়ামত। হযরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, রাসূল (সা.) বলেছেন, রোজাদারের জন্য দুটি বড় খুশি রয়েছে। একটি প্রভুর সাক্ষাত আরেকটি ইফতারের সময়। (সহিহ বুখারি)
ইফতারের আরেকটি বড় ফজিলত হচ্ছে এসময় রোজাদারের দুআ আল্লাহর দরবারে কবুল হয়। তখন আপনি খালেছ নিয়্যতে যা চাইবেন তাই প্রভুর দরবারে ক্ববুল হবে। রোজার ইফতার বান্দাকে সেই সুযোগ করে দিয়েছে।
হাদিসে আছে, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেছেন, নিশ্চয়ই রোজাদারের জন্য ইফতারের সময় এমন একটি দুআ থাকে যা ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। (আত্তারগীব ওয়াত্তারহীব, ২য়খণ্ড, হাদিস- ২৯)
এছাড়া রোজাদারকে ইফতার করানোর মধ্যেও সওয়াব রয়েছে। হাদিসে আছে, হযরত সালমান ফারসী (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলে পাক (সা.) এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি হালাল খাদ্য কিংবা পানি দ্বারা কোনো মুসলমানকে রোজার ইফতার করালো, ফেরেশতাগণ মাহে রমজানের এসময়ে তার জন্য ইস্তিগফার করেন। আর হযরত জিব্রাইল (আ.) শবে ক্বদরে তার জন্য ক্ষমা আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থণা করেন। (তাবরানী আল মু’জামুল কবীর, ৬ষ্ঠ খণ্ড হাদিস-৬১৬২)
আরেক হাদিসে আছে, হযরত সালমান ফারেসি (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে তার গোনাহ মাফ হয়ে যাবে, সে জাহান্নাম থেকে মুক্তিলাভ করবে। ওই রোজাদারের সওয়াবের সমপরিমাণ সওয়াব সে লাভ করবে। তবে ওই রোজাদারের সওয়াবে কোনো কম করা হবে না। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.