আ.লীগের ৮ জনসহ ১৪ জনের অধিক প্রার্থী : চন্দনাইশ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে

চট্টগ্রাম ব্যুরো: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রেশ কাটতে না কাটতেই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের হাওয়া বইতে শুরু করেছে চন্দনাইশের রাজনৈতিক অঙ্গনে। আওয়ামীলীগের ৮ জন প্রার্থীসহ ১৪ জনের অধিক মনোনয়নের দৌঁড়ে রয়েছেন বলে জানা যায়।
আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম চৌধুরী পর পর তিনবার আওয়ামীলীগের সংসদ সদস্য নিবার্চিত হওয়ায় উপজেলা আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা যথেষ্ট ফুরফুরে মেজাজে রয়েছে। ফলে আওয়ামীলীগ, যুবলীগের অনেক নেতা উপজেলা নিবার্চনে প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
বিগত জাতীয় সংসদ নিবার্চনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল জব্বার চৌধুরী গত বছর ২৮ নভেম্বর উপজেলা চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন বিধায় ১ম ধাপে তথা রমজানের পর পর চন্দনাইশ উপজেলা নিবার্চন অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা যায়।
দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে এ পর্যন্ত যারা প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন তাদের মধ্যে রয়েছে দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান, কাসেম মাহাবুব উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মো. কাসেম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. জাহেদুল ইসলাম জাহাঙ্গীর, সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ সদস্য আবু আহমদ জুনু, কেন্দ্রীয় যুবলীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক, সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা মীর মো. মহিউদ্দিন, গাছবাড়ীয়া সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি শেখ টিপু চৌধুরী, কেন্দ্রীয় সাবেক যুবলীগ নেতা, দেওয়ান বাজার ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক, মহানগর আওয়ামী যুবলীগের সাবেক সদস্য গিয়াস উদ্দিন সুজন, দোহাজারী পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক, দোহাজারী জামিজুরি আ: রহমান উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি বশির উদ্দিন মুরাদ, প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম চৌধুরী, উপজেলা আথলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম খোকনসহ ৮ জনের অধিক উপজেলা নিবার্চনে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী বলে জানা যায়। শরিক দল জাতীয় পার্টি থেকে সোনা মিয়া চৌধুরী, ইসলামী ফ্রন্ট থেকে দক্ষিণ জেলা ইসলামী ফ্রন্টের সভাপতি মাওলানা ফেরদৌসুল আলম আল-কাদেরী উপজেলা নিবার্চনে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক না থাকায় প্রার্থীর সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে বিজ্ঞ মহল অভিমত ব্যক্ত করেছেন। কোন কারণে বিএনপি ও এলডিপি নিবার্চন বর্জন থেকে সরে গিয়ে নিবার্চনে অংশ নিলে তাহলে উপজেলা নিবার্চনে বিএনপি থেকে সাবেক উপজেলা বিএনপির সভাপতি, দক্ষিণ জেলা বিএনপি নেতা এড. নুরুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক জসিম উদ্দিন চৌধুরী মিন্টু, উপজেলা এলডিপি সাধারণ সম্পাদক আকতার আলম সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন বলে জানা যায়।
২০১৯ সালের ২৪ মার্চ ৪র্থ ধাপে চন্দনাইশ উপজেলার নিবার্চন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। নিবার্চনে কয়েকটি কেন্দ্রে ভোট স্থাগিত থাকার কারণে একই বছর ৭ জুলাই উপ-নিবার্চন অনুষ্ঠিত হয়। ২৪ জুলাই উপজেলা পরিষদের ১ম সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা পরিষদ আইন ১৯৯৮ এর ১৭ (১) (গ) ধারা মতে পরিষদের মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ থেকে পূর্ববতী ১৮০ দিনের মধ্যে নিবার্চন সম্পন্ন করতে হবে।
১৯৮৫ সালে ১ম, ১৯৯০ সালে ২য়, ২০০৯ সালে ৩য় , ২০১৪ সালে ৪র্থ, ২০১৯ সালে ৫ম বারের মত উপজেলা পরিষদের নিবার্চন অনুষ্ঠিত হয়। বিগত জাতীয় সংসদ নিবার্চনে নৌকার প্রার্থীপক্ষে অনেকে সক্রিয় থাকার কারণে উপজেলা নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার দৌড়ে রয়েছেন।
সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. কাসেম দীর্ঘ সময় ধরে উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন ও পাশাপাশি দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি হিসেবে রয়েছেন।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি জাহেদুল ইসলাম জাহাঙ্গীর ২০১৩ সালের জুলাই মাসে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি হওয়ার পর থেকে দলীয় কার্যক্রম সক্রিয়ভাবে করেছেন এবং জাতীয় সংসদ নিবার্চনে নৌকার প্রার্থীর চেয়ে দলীয় মনোনয়ন চেয়ে ছিলেন। তিনি এবার উপজেলা নিবার্চনে মনোনয়ন পাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
অপরদিকে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক জাতীয় নিবার্চনে নৌকার পক্ষে সক্রিয়ভাবে ভূমিকা রেখেছেন। পাশাপাশি তিনি পর পর ২ বার জেলা পরিষদের মেম্বার নিবার্চিত হয়েছেন। তাদের সাথে মনোনয়ন দৌঁড়ে রয়েছেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক, সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা মীর মো. মহিউদ্দিন। তৃণমূল নেতা-কর্মীদের নিকট এ সকল প্রার্থীদের গ্রহণযোগ্যতা ও ইমেজ রয়েছে।
উল্লেখ্য যে, ২০১৯ সালের ২৪ মার্চ অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চন্দনাইশ উপজেলাতে নৌকার প্রার্থী প্রয়াত একেএম নাজিম উদ্দিনের সাথে স্বতন্ত্র প্রার্থী সদ্য পদত্যাগকারী উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল জব্বার চৌধুরীর প্রতিদ্বন্ধিতা হয়েছিল। যদি কোনো কারণে বিএনপি ও এলডিপি উপজেলা নিবার্চনে অংশ নে তাহলে তাদের সাথে আওয়ামীলীগ প্রার্থীর ভোট যুদ্ধ হবে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান স. ম. জিয়াউর রহমান। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.