আস্থা ভোটে হারলেন জার্মান চ্যান্সেলর

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: জার্মানির মধ্য-বামপন্থি চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস আস্থা ভোটে পরাজিত হয়েছেন। সোমবারের (১৬ ডিসেম্বর) এই পরাজয়ের ফলে ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতি এখন আগাম নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছে। আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি নতুন নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।
বুন্দেসটাগে অনুষ্ঠিত আস্থা ভোটে শলৎসের পরাজয় প্রত্যাশিত ছিল। এই ভোটের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট ফ্রাংক-ভাল্টার স্টাইনমায়ার পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে এবং আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন নির্বাচনের ঘোষণা দিতে পারবেন।
আস্থা ভোটে ২০৭ জন শলৎসের পক্ষে এবং ৩৯৪ জন বিপক্ষে ভোট দেন, যেখানে ১১৬ জন সংসদ সদস্য ভোটদানে বিরত ছিলেন।
ভোটের আগে পার্লামেন্টে উত্তপ্ত বিতর্ক হয়। শলৎস ও তার প্রতিদ্বন্দ্বীরা বিতর্কে জড়ান। এই বিতর্ক ভবিষ্যৎ নির্বাচনি প্রচারণার আগাম আভাস দিয়েছে।
৬৬ বছর বয়সী শলৎস বর্তমানে জনমত জরিপে চরম পিছিয়ে আছেন। তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়নের (সিডিইউ) নেতা ফ্রিডরিশ ম্যার্জ এগিয়ে রয়েছেন। তিনি সাবেক চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মের্কেলের দলের প্রতিনিধিত্ব করছেন।
তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে জার্মানিকে নেতৃত্ব দেওয়া শলৎস চরম সংকটে পড়েন যখন গত ৬ নভেম্বর তার তিন-দলীয় জোট ভেঙে যায়। একই দিনে ডোনাল্ড ট্রাম্প পুনরায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
এই রাজনৈতিক অস্থিরতা এমন এক সময়ে তৈরি হয়েছে যখন জার্মানি উচ্চ জ্বালানি ব্যয় এবং চীনের সঙ্গে কঠিন প্রতিযোগিতার কারণে জর্জরিত অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করছে।
এর পাশাপাশি, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে সংঘাত এবং ন্যাটো ও বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়ে ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা জার্মানির ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও অস্থিতিশীল করেছে।
শলৎসের সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এসপিডি), গ্রিন পার্টি এবং ফ্রি ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এফডিপি) মধ্যে গঠিত জোটটি দীর্ঘদিন ধরে অর্থনৈতিক ও রাজস্ব নীতি নিয়ে দ্বন্দ্বে জর্জরিত ছিল। এই দ্বন্দ্ব চূড়ান্ত হয় যখন শলৎস গত ৬ নভেম্বর তার অর্থমন্ত্রী ক্রিশ্চিয়ান লিন্ডনারকে বরখাস্ত করেন।
জার্মানির রাজনীতি দীর্ঘদিন ধরে স্থিতিশীল ছিল। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রাজনৈতিক মানচিত্র বদলেছে। কট্টর ডানপন্থী অল্টারনেটিভ ফর জার্মানি (এএফডি)-র উত্থান জার্মান রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.