বিশেষ (ঢাকা) প্রতিনিধি: তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আমরা চাই বিএনপি টেরোরিস্ট কর্মকান্ড থেকে বেরিয়ে আসুক, সুস্থ রাজনীতির পথে হাঁটুক, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক।
তিনি আজ দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) প্রকাশিত ‘ফিচার সংকলন-এসডিজি ও উন্নয়নমূলক’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন। পিআইবি’র মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ এবং কর্মকর্তারা মোড়ক উন্মোচনে অংশ নেন।
নির্বাচন কমিশন চায় বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিক -এ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘আমরাও চাই বিএনপি ধ্বংসাত্মক অপরাজনীতি, মানুষ পোড়ানো, মানুষের সম্পত্তি, গাড়ি-ঘোড়া পোড়ানোর রাজনীতি, চোরাগোপ্তা হামলা যেগুলো টেরোরিস্ট অর্গানাইজেশন করে, এই টেরোরিস্ট কর্মকান্ড থেকে বেরিয়ে আসুক, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বক্তব্য আমি শুনেছি। আমি মনে করি তিনি যথার্থ বলেছেন। আশা করি, বিএনপির শুভ বুদ্ধির উদয় হবে।’
‘বিএনপি নির্বাচনের আগে সরকার পতনের ঘোষণা দিয়েছে’ এ বিষয়ে প্রশ্নে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এমন বহু ঘোষণা আগেও শুনেছি এবং যতোবার ঘোষণা দেয় ততোবার তারা পালিয়ে যায় বা হারিয়ে যায়। যেমন ২৮ অক্টোবর এবং এর আগে গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর ঘোষণা দিয়েছিলো। খালেদা জিয়া সমাবেশে যোগ দেবেন, সেটাও বলেছিলো। এই সমস্ত ঘোষণা আসলে তাদেরকে হাস্যকর করেছে। তারা এই সমস্ত ঘোষণা দিয়ে জনমনে আতংক তৈরি করার চেষ্টা করছে। একই সাথে দেশের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করছে। প্রকৃত অর্থে বিএনপি এখন তাদের কর্মাকন্ডের মাধ্যমে টেরোরিস্ট অর্গানাইজেশনে রূপান্তরিত হয়েছে, তাদের লিডাররাও টেরোরিস্ট লিডারে পরিণত হয়েছে। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে দিনক্ষণ বলে অমুক তারিখে ফেলে দেওয়ার কথা বলা এটাই তো টেরোরিস্ট ঘোষণা।’
এর আগে বই মোড়ক উন্মোচনকালে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের উন্নয়নের জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা খুবই প্রয়োজন। এটি ছাড়া কোনো দেশ উন্নত হতে পারেনি। আমরা সিঙ্গাপুরের উদাহরণ দেই, সেখানে স্বাধীনতার পর থেকে একই দল রাষ্ট্র ক্ষমতায়। মালয়েশিয়ায় একনাগাড়ে ২২ বছর যদি মাহাথির মোহাম্মদ দেশ পরিচালনার দায়িত্বে না থাকতেন তাহলে মালয়েশিয়া সে রকম উন্নত হতে পারতো না।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে গত ১৫ বছর ধরে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকলেও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ছিলো সেটি আমরা বলতে পারি না। যেভাবে ২০১৩-১৪-১৫ সালে এবং সময়ে সময়ে জ্বালাও-পোড়াও করা হয়েছে এবং হচ্ছে, এগুলো দেশের এবং রাজনীতির স্থিতিশীলতা সবকিছুই বিনষ্ট করছে। এ দেশে ধ্বংসাত্মক রাজনীতি এবং সবকিছুতে না বলার নেতিবাচক রাজনীতি দেশের উন্নয়নের জন্য প্রচন্ড অন্তরায়। ভারতে বহুধাবিভক্ত রাজনীতি এবং কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে অহি-নকুল সম্পর্ক কিন্তু দেশের প্রয়োজনে তারা এক টেবিলে বসে এবং সরকারকে সমর্থন জানায়।’
হরতাল-অবরোধ নিয়ে প্রশ্নে মন্ত্রী হাছান বলেন, ‘নিজেদের স্বার্থের জন্য মানুষ, গাড়ি-ঘোড়া পোড়ানো কেন? সাধারণ মানুষ তো কোনো দোষ করেনি। আর দিনের পর দিন অবরোধ ডেকে যেভাবে বাচ্চাদেরকে স্কুলে যাওয়ার ক্ষেত্রে, মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপনের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হচ্ছে, তারপরও মানুষ কিছুই মানছে না। অবরোধের মধ্যে ঢাকা শহরে বিভিন্ন জায়গায় ট্রাফিক জ্যাম হচ্ছে এবং দূরপাল্লার গাড়িও চলছে। এ সব কর্মসূচি কেউ মানছে না, তাদেরকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে বলছে, তোমাদের কিসের অবরোধ আমরা মানি না। এরপরও বিএনপির লজ্জা হয় না। আসলে যাদের লজ্জা হারিয়ে গেছে তাদের লজ্জা পাওয়ার কোনো কারণ নাই। বিএনপির লজ্জাও হারিয়ে গেছে।’
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ (ঢাকা) প্রতিনিধি মো: ফারুক আহম্মেদ। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.